নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় দুইমাস হয়ে গেছে। একটা নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন। নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে অনেক আশাবাদ তৈরি হয়েছে এবং সকলে প্রত্যাশা করেছে এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ তাঁর নতুন দিনে পথযাত্রা শুরু করলো। নতুন যে মন্ত্রিসভার সদস্য হয়েছেন তাঁরা অনেক আন্তরিক, তাঁরা কাজ শিখতে চান এবং তাঁরা সততা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনেও আগ্রহী। কিন্তু সমস্যা হয়েছে যেসকল মন্ত্রী হয়েছেন তাঁরা কেউই সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহসী নন, আগ্রহী নন। প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হলেন প্রধান নির্বাহী এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হয়। সিদ্ধান্তগুলো নিতে তাঁরা তাকিয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রীর দিকে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর চাপ বেড়েছে। এ প্রসঙ্গে দুটি উদাহরণ দেয়া যায়। চকবাজারের চুড়িহাট্টায় যখন অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলো তখন একাধিক মন্ত্রণালয় এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। কিন্তু সকলেই কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে পড়েছিলেন। সকলে তাকিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কি সিদ্ধান্ত দেয় তাঁর উপর। প্রধানমন্ত্রী সারারাত এই বিষয়টি মনিটরিং করেছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পরেশনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা দিতে হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে যে, ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা কি নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষম? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তাঁরা ওই ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ভয় পাচ্ছেন এবং সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছেন। ফলে প্রধানমন্ত্রীকে বাড়তি পরিশ্রম করতে হচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রীকে ওই ঘটনার সময় সারারাত জেগে ঐ ঘটনার মনিটরিং করতে হয়েছে।
দ্বিতীয় উদাহরণ দেখা যায় যে, সাম্প্রতিক সময়ে বিমান ছিনতাইয়ের যে কথিত ঘটনা ঘটেছিল সেইসময়ও বেসামরিক বিমান পরিচালনা ও পর্যটন মন্ত্রণালয় তাকিয়ে ছিল প্রধানমন্ত্রীর দিকে। ওই সময়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীকে দিতে হয়েছিল। এটা গেলো গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় বিষয়। অনেক ছোটখাটো বিষয়েও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীর শরণাপন্ন হচ্ছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও নির্দেশনা চাইছেন। রুটিন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তাঁরা দায়িত্বটা পালন করছেন ঠিকমতোই। কিন্তু যখন কোনো সিদ্ধান্তের সঙ্গে রাষ্টের নীতি নির্ধারনী বিষয়টি জড়িত তখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁরা দ্বিধান্বিত হয়ে পড়ছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাহসের অভাবের কারণেই বা নতুন দায়িত্ব গ্রহণের কারণেই তাঁরা এমনটি করছেন। প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, এরফলে একটা অন্যরকম পরিস্থিতির তৈরি হবে। মন্ত্রণালয়ের কাজে সচিবালয়ের কাজে শ্লথ গতির সৃষ্টি হতে পারে। যার ফলে সরকারের কার্যক্রম স্থগিত হতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এর ফলে প্রধানমন্ত্রীর উপর কাজের চাপ বাড়ছে। তিনি অনেকগুলা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি সারাদিন কর্মব্যস্ততার মধ্যে থাকেন তারমধ্যে যদি তাঁকে প্রত্যেকটা মন্ত্রনালয়ে কাজে মনঃসংযোগ করতে হয় তাহলে সামগ্রিক কাজের ক্ষেত্রে তাঁর উপর অনেক বেশি চাপ পড়বে। ফলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর যে দিকনির্দেশনামুলক দায়িত্ব বা রাষ্ট্র পরিকলনামূলক দায়িত্ব সেগুলো ব্যহত হতে পারে। তবে একাধিক মহল মনে করছেন যে, যেহেতু মন্ত্রীরা নতুন। আস্তে আস্তে তাঁরা দায়িত্ব নিতে শিখবেন, নীতি নির্ধারনী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। এ প্রসঙ্গে তাঁরা উদাহরন দিয়ে বলছেন যে, ২০০৯ এ যখন নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছিল তখন আনকোরা নতুন মন্ত্রী ছিল। তাঁরাও এরকম সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নিতেন বা প্রধামন্ত্রির পরামর্শে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ করতেন। কিন্তু ওই সময়ে অনেক মন্ত্রী ছিলেন যারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারনী সিদ্ধান্ত নিজেরাই গ্রহণ করতেন। তবে এই পরিস্থিতি কতদিন চলবে এবং এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় কি তা বুঝা যাবে আরও কিছুদিন পর যখন মন্ত্রণালয়ের কাজের সম্পর্কে মন্ত্রীরা নিজেদেরকে দক্ষ করে তুলবেন এবং মন্ত্রণালয়ের কাজের ব্যাপারে তাঁদের দক্ষতা তৈরি হবে। এটা যত তাড়াতাড়ি তৈরি হবে ততই সরকারী কাজে দ্রুতগতি আসবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক
পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের
মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয়
নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই
এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডিতে
আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পার্টির যারা মন্ত্রী-এমপি
এমন পর্যায়ে আছেন তাদের জন্য নির্দেশনা রয়েছে, তাদের সন্তান ও স্বজনরা যেন উপজেলা নির্বাচনে
না আসে। প্রথম পর্যায়ের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় চলে গেছে। কেউ কেউ বলেছেন আমরা
বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সুবিধা হতো। তারপরেও কেউ কেউ প্রত্যাহার
করেছেন, কেউ কেউ করেননি। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের যে সময়সীমা তারপরেও ইচ্ছা
করলে করতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন,
‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করেছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা
নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনেও কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় আছে। দল যার যার
কর্মকাণ্ড বিচার করবে। চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত যারা প্রত্যাহার করবে না সময়মতো দল ব্যবস্থা
নেবে’।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একতরফা কোনো
সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি এসে যায়। আওয়ামী লীগও একই সময়ে সমাবেশের
ডাক দেয়। তবে এটা পাল্টাপাল্টি নয়।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক
কার্যালয়ে হওয়া উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি
এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত
রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক
আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
মন্ত্রী-এমপি প্রার্থিতা প্রত্যাহার ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।