নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০১ মার্চ, ২০১৯
আগামী ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে জামাত আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে পারে। গতরাতে জামাতের মজলিসে শূরার এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইদিনে আনুষ্ঠানিকভাবে জামাত বিলুপ্ত ঘোষণা করা হতে পারে। তবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলেও জামাত একটি সামাজিক সংগঠন হিসেবে থাকবে। রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে এটি বিলুপ্ত হবে। জামাতের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কালকের বৈঠকে জামাত মোট পাঁচটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সারাদেশে জামাতের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে মজলিসে সূরা এই পাঁচটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে জামাতের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। এই পাঁচটি সিদ্ধান্তের মধ্যে
প্রথমত, ৭১ সালে জামাত ইসলামীর ভুমিকার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। এই ক্ষমা প্রার্থনার দিনটি তাঁরা বেছে নিয়েছে ২৬শে মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের দিনটি। ওইদিনই জামাত আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি, ভিডিও বার্তা বা অন্যকোনোভাবে একাত্তরে জামায়াতে ইসলামীর ভুমিকার জন্য ক্ষমা চাইবে। তবে এই ক্ষমাটা নিঃশর্ত ক্ষমা না। ক্ষমা চাওয়ার আগে জামাত একাত্তরে তাঁদের ভুমিকার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করবে এবং কেনো তাঁদের এ পরিস্থিতিতে যেতে হয়েছে সে ব্যাখ্যা দিবে।
দ্বিতীয়ত, ২৬শে মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের বিলুপ্ত ঘোষনা করলেও এটি একটি সামাজিক সংগঠন হিসেবে থাকবে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই বিলুপ্তির দিনে জামাত কোনো নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিবে না। জামাতের একাধিক সূত্র বলছে যে, নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। যারা জামাত করেন ও জামাতের সমমনা ব্যক্তি, গোষ্ঠীকে নিয়ে জামাত হয়তো নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবে। সেটার সঙ্গে জামাত বিলুপ্তির কোনো সম্পর্ক নেই।
তৃতীয়ত, জামাত বিলুপ্তি হলেও জামাতের যে স্বগোক্তি, জামাতের যে নিজস্ব ভবন, সম্পত্তি এবং আর্থিক বিষয়গুলো আছে সেগুলো চ্যারিটির কাজে ব্যবহার করা হবে। এগুলো হাসপাতাল, এতিমদের উন্নয়নসহ নানা চ্যারিটেবল কাজে ব্যবহার করা হবে বলে জামাতের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
চতুর্থত, সারদেশে যে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জেলে আছে তাঁদের জন্য জামাত বিলুপ্ত হলেও একটি বিশেষ তহবিল করবে। জামাত তাঁদেরকে আইনী সহায়তাসহ অন্যান্য সুবিধাদি প্রদান করবে।
পঞ্চমত, বিলুপ্ত হওয়ার পর জামাতের প্রত্যেকটা কর্মী বিশ্ব ইসলামী উম্মার জন্য কাজ করবে এবং যে যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে।
তবে মজার ব্যাপার হলো এধরণের সিদ্ধান্ত নিলেও একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের ভুমিকার জন্য যে সমস্ত জামাতের যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে সে সমস্ত যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে জামাত কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এখনও জামাতের ওয়েবসাইটে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে এই যুদ্ধাপরাধীদেকে শহীদ হিসেবে গণ্য করে এবং তাঁদেরকে বীরের মর্যাদা দেয়। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে জামাতের তৃণমূল থেকে যে মতামত এসেছে সে মতামতে বলা হয়েছে যে যারা একাত্তরে যুদ্ধাপরাধ করেছে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে যারা দণ্ডিত হয়েছে তাঁদেরকে অস্বীকার করতে হবে এবং তাঁদেরকে বীর বা শহীদের মর্যাদা দেয়া যাবে না। কিন্তু জামাতের মজলিসে শূরায় এ বিষয়টি আলোচনা হলেও এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। জামাতের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন যে, যারা যুদ্ধাপরাধের মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন তাঁরা ইতিমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁদেরকে অসম্মান করা বা তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করা দলের জন্য ভালো হবে না। রাজনীতির জন্যও ভালো হবে না। তবে একটি সূত্র বলছে যে, জামাত বিলুপ্ত হওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য নাম হবে ‘জাস্টিস পার্টি’। এই দলে শুধু জামাতের বর্তমান নেতাকর্মীরাই নয় অন্যান্য দল থেকেও সমমনা রাজনৈতিকদের নেওয়া হতে পারে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বাংলা ইনসাইডার/এসআর
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।