নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০২ মার্চ, ২০১৯
সরকার গঠনের পর ক্রমশ: আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। দলীয় কর্মকাণ্ডে তাদের তেমন একটা ডাকা হচ্ছে না। হেভিওয়েট হিসেবে পরিচিত দলের সিনিয়র নেতাদের কাজ হলো, দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভা এবং সংসদে উপস্থিত থাকা। একাধিক সিনিয়র নেতা তাদের কাজে লাগানো হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে তারা হতাশা এবং ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। আওয়ামী লীগের একাধিক দ্বায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সিনিয়র নেতারা দলীয় কর্মকাণ্ডে যেতে আগ্রহী কিন্তু দলীয় কর্মকাণ্ডের জন্য যে তহবিল এবং দায়িত্ব প্রয়োজন সেটা তাদের দেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে তারা দলীয় কর্মকাণ্ডে যেতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন।
গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর ৭ই জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদের কেউই এই নতুন মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি। সে সময় বলা হয়েছিল, দলের সিনিয়র নেতারা দলের জন্য কাজ করবেন এবং সাংগঠনিক তৎপরতায় সময় দেবেন। তারা যেহেতু অভিজ্ঞ কাজেই তাদের পরামর্শ দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক তৎপরতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি ছাড়াও তার ঘনিষ্ঠ নেতৃবৃন্দ মাহাবুবুল আলম হানিফ, আবদুস সোবহান গোলাপ কিংবা জাহাঙ্গির কবির নানক বা আবদুর রহমানরাই দলীয় কর্মকান্ডে দলের মুখপাত্র হিসেবে কথা বলছেন। এর বাইরে অর্থমন্ত্রী তাঁর নিজস্ব পদাধিকারবলে সরকারের বিভিন্ন বিষয় এবং বিরোধীদলের সমালোচনায় বক্তব্য রাখছেন। কিন্তু এই দলীয় কর্মকাণ্ডে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম কিংবা বেগম মতিয়া চৌধুরীকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে না বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
যদিও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, কাউকে নিষ্ক্রিয় বা সক্রিয় করা হয়নি। যারা দলের সাংগঠনিক কর্মকান্ডে অবদান রাখতে চান তাদের জন্য দলের দরজা সবসময়ই খোলা আছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে, আমির হোসেন আমু বা তোফায়েল আহমেদের মতো সিনিয়র নেতাদের কোনো বিষয়ে বক্তব্য রাখার জন্য বা দলীয় কর্মসূচীতে অংশ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা বা আমন্ত্রণ জানানোর মতো কিছুই করা হচ্ছে না। একারণে তারা অনেকটা অভিমান নিয়েই দূরে সরে আছে।
হেভিওয়েট সব নেতাই স্থানীয় সরকার মনোনয়ন কমিটি এবং দলের মনোয়ন কমিটির সদস্য। মনোনয়ন কমিটির বৈঠক নিয়মিত হচ্ছে। সেখানে দলের সভাপতির সঙ্গেও তাদের দেখা হচ্ছে এবং কথা-বার্তা হচ্ছে। কিন্তু সেই সমস্ত কথা বার্তাতেও তাদের কোনো বিশেষ সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়নি বলে অনেক সিনিয়র নেতারা দুঃখপ্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন যে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে আওয়ামী লীগের কর্মসূচী এবং পরিকল্পনা কী হবে,এসব নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনও পরামর্শ করা হচ্ছে না। এমনকি বিএনপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যাপারে আমাদের মনোভাব কী হবে আমরা কীভাবে সমালোচনা করব সেসব বিষয়েও কোনো পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে না। পরামর্শ যখন নেওয়া হচ্ছে না তখন আমরা কথা বলবো কীসের ভিত্তিতে?
অন্য একজন নেতা বলেছেন যে, ১৪ দলকে সক্রিয় করবার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু দলের সাধারণ সম্পাদক সে ব্যাপারে আমাদের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ বা পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করছেন না।
আওয়ামী লীগে এখন একটা পটপরিবর্তন চলছে। সিনিয়র নেতারা তাদের জায়গা ছেড়ে দিচ্ছেন এবং পরবর্তী প্রজন্ম জায়গা করে নিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের একাধিক শুভাকাঙ্ক্ষী মনে করেন যে, এই পট পরিবর্তনের অধ্যায়টি অত্যন্ত মসৃণ এবং সুখকর হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে সিনিয়রদেরকে যেন সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা দেওয়া হয় এবং তাদের পরামর্শ নেওয়া হয়। যেকোনো কর্মসূচীতে যেন তাদের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই বিষয়গুলোই সিনিয়ররা চান। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সিনিয়ররা এ ধরণের কোন আমন্ত্রণ পাচ্ছেন না এবং দলের কর্মকাণ্ড নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগও করা হচ্ছে না।
অনেকেই মনে করেন যে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের জন্যই সিনিয়র নেতারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। তবে এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাই মুখ খুলতে চাননি। কারণ ওবায়দুল কাদের নিজেই দলীয় কর্মকাণ্ডে অত্যন্ত সক্রিয় এবং বিভিন্ন বিষয়ে তিনি কথা বলছেন।
আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা বলছেন যে, প্রত্যেকটা বিষয়ে ওবায়দুল কাদের কথা না বলে তিনি যদি সিনিয়রদের এ ব্যাপারে কিছু দায়িত্ব দিতেন তাহলে বিষয়টা অনেক শোভন হতো।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বক্তব্য রেখেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং একই সময়ে চট্টগ্রামে বক্তব্য রেখেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। অথচ আওয়ামী লীগের একাধিক সিনিয়র নেতা এনিয়ে কথা বলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তাদের যে আমন্ত্রণ জানানো সেটাও হয়নি। উপজেলা নির্বাচন নিয়েও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা কিছু কাজ করতে চান। কিছু কথা বলতে চান। কিন্তু তাদেরকে সেভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বরং ১৪ দলের সাবেক এক মন্ত্রীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যতম সিনিয়র নেতা আমির হোসেন আমু বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন। এই বিরোধের ক্ষেত্রেও আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্ব, দলের সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্যরা আমির হোসেন আমুর পাশে দাড়াননি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিষয়টি হচ্ছে, একজন নেতা যখন বয়:প্রবীণ হবেন, তখন অবশ্যই তিনি জায়গা ছেড়ে দিবেন। কিন্তু জায়গা ছেড়ে দেওয়ার আগে তিনি যেন উপযুক্ত সম্মানটা পান এবং তাকে যেন সকলে শ্রদ্ধা করে বিদায়টা দেন, এই বিষয়টা কাম্য। বাস্তবতা হলো, আওয়ামী লীগে এখন নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হওয়ার পর যেভাবে সিনিয়রদেরকে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হচ্ছে তার ফলে সিনিয়ররা শুধু নন, দলের মধ্যেও একটা ভুল বার্তা যাচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার হ্যালো পিওর গোল্ড
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পবিত্র মাহে রমজানের আগে আবারও বাড়লো চিনির দাম। কেজিতে ২০ টাকা বাড়িয়ে প্রতিকেজি সরকারি মিলের চিনির সর্বোচ্চ খুচরা দাম ১৬০ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে চিনি ও খাদ্য শিল্প মন্ত্রণালয় জানায়, চিনির এ দাম অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় চিনির বাজার মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিএসএফআইসি কর্তৃক উৎপাদিত চিনির বিক্রয়মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারে রোজা উপলক্ষ্যে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
এখন থেকে করপোরেশনের ৫০ কেজি বস্তাজাত চিনির মিলগেট বিক্রয়মূল্য ১৫০ টাকা (এক কেজি) ও ডিলার পর্যায়ে বিক্রয়মূল্য ১৫৭ টাকা (এক কেজি) নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া করপোরেশনের ১ কেজি প্যাকেটজাত চিনির মিলগেট বা করপোরেট সুপারশপ বিক্রয়মূল্য ১৫৫ টাকা ও বিভিন্ন সুপারশপ, চিনি শিল্প ভবনের বেজমেন্টে ও বাজারে সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয়মূল্য ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজারে সরকারি চিনির নামে মোড়কজাত করে চড়া দামে বিক্রি করছে কিছু প্রতিষ্ঠান। সবশেষ কেজিপ্রতি ১৪০ টাকা চিনির মূল্য নির্ধারণ করে সংস্থাটি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের জন্য ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ কিনছে ভারত। এই খবরে দেশের বাজারে ব্যাপক দরপতন শুরু হয়েছে। সরবরাহ বাড়তে থাকায় খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে অন্তত ৩০ টাকা কমেছে। অথচ রোজা শুরুর আগেও পেঁয়াজের দাম বাড়ছিল। বাজার নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার তখন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার বিশেষ উদ্যোগও নিয়েছিল।