নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০২ মার্চ, ২০১৯
বিএনপির একাধিক নেতা আবারও অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তবে এই যোগাযোগ বিকল্পধারায় যোগ দেয়ার জন্য নাকি নির্বাচনের আগে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোকে নিয়ে যে যুক্তফ্রন্ট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল তার অংশ কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিএনপির মধ্যে অধ্যাপক বি. চৌধুরীর একটা প্রভাব বলয় রয়েছে। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা নেতা এবং প্রথম মহাসচিব। দীর্ঘদিন বিএনপির অন্যতম নীতি নির্ধারক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। কাজেই অধ্যাপক বি. চৌধুরীর অনেক অনুসারী ও শীষ্য বিএনপিতে রয়েছে। বিএনপির অনেক নেতা মনে করেন. মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজেই বি. চৌধুরীর একজন শীষ্য। খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর বি. চৌধুরীর সঙ্গে মির্জা ফখরুল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। অতীতের তিক্ততা ভুলে বি. চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি বৃহত্তর জোট গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। সে প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই প্রথমে যুক্তফ্রন্ট গঠন করা হয়। এই যুক্তফ্রন্ট থেকেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অদৃশ্য কারণে অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে বাদ দিয়েই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়।
অনেকেই মনে করেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও তার ছেলে মাহি বি চৌধুরীকে পছন্দ করেন না এবং শেষ পর্যন্ত তারেক জিয়ার সিদ্ধান্তেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর দল বিকল্পধারা থাকতে পারেনি। তার প্রতিশোধ হিসেবে বি. চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং নির্বাচনে দুটি আসন পেয়ে সংসদে আছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রশংসাকারীদের মধ্যে অন্যতম অধ্যাপক বি. চৌধুরী। তার ছেলে মাহি বি. চৌধুরীর সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন মহলের ঘনিষ্ঠতার কথা জানা যায়।
মনে করা হচ্ছিল, এর মধ্য দিয়েই বিএনপির সঙ্গে বি. চৌধুরীর সম্পর্কের ইতি ঘটে গেছে এবং ২০০১ সালের পর থেকে শুরু হওয়া এই তিক্ততার সম্পর্ক আর পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে না। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে বিএনপির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা অধ্যাপক বি. চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তারা আবারও বি. চৌধুরীর কাছে অতীতের তিক্ততার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, তারা বি. চৌধুরীকে বলেছেন শুধুমাত্র তারেক জিয়ার কারণেই তারা ঐক্যবদ্ধ হতে পারেননি। তারা মনে করেন যে বিএনপির এই ক্রান্তিকালে ত্রাতা হিসেবে বি. চৌধুরীর মতো একজন নেতৃত্ব প্রয়োজন। বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে, বি. চৌধুরী তাদেরকে বলেছেন তারেক জিয়া যতোদিন বিএনপির নেতৃত্বে থাকবে ততোদিন বিএনপির কোন ভবিষ্যৎ নেই। তারেক জিয়াই বিএনপির বর্তমান পরিণতির জন্য দায়ী।
একটি সূত্র বলছে, বিএনপির কয়েকজন নেতা বি. চৌধুরীকে অনুরোধ করেছেন তিনি যেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয়ে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটা ঐক্য গঠনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সে উদ্যোগের সঙ্গে অবশ্যই বিএনপি থাকবে। কিন্তু বি. চৌধুরী এরকম উদ্যোগ নিতে অসম্মত হয়েছেন। বরং তিনি বলেছেন, বিএনপির ভবিষ্যৎ খুবই নাজুক। বিএনপির পরিণতি মুসলিম লিগের মতোই হতে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বিএনপি নেতাকর্মীরা যেন বিকল্পধারায় যোগদান করে সেই আহ্বান জানান।
একটি সূত্র বলছে যে, অধ্যাপক বি চৌধুরী মনে করছেন যে, বিকল্পধারাই আগামী দিনে বাংলাদেশে বিরোধী দলের প্রধান প্লাটফর্ম হবে। কারণ বিএনপি বিলুপ্ত হয়ে গেলে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদ এবং ইসলামিক মূল্যবোধসম্পন্ন কোনো মূলধারার রাজনৈতিক দল থাকবে না। সে জায়গাটা একমাত্র বিকল্পধারাই দখল করে নিতে পারবে। তবে এখনও বিএনপির মধ্যে একটি অংশ মনে করছে, অধ্যাপক বি চৌধুরী বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল রয়েছেন, বিএনপির প্রতি তাঁর মমত্ববোধ রয়েছে। তাঁর সঙ্গে যা করা হয়েছে সেটা অন্যায়। মান-অভিমান ভুলে বিএনপির এই ক্রান্তিকালে বিএনপির একজন নেতৃত্ব দরকার। তিনি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য।
বিএনপির যারা যোগাযোগ করছেন তারা অনেকেই ড. কামাল হোসেনের উপর বিরক্ত। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যে ভূমিকা পালন করার কথা ছিল তারা তা পালন করতে পারছেন না। ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে থাকলে বিএনপির যে আদর্শিক অবস্থান তা ক্ষুণ্ণ হতে বাধ্য। কারণ ড. কামাল হোসেন একবারও জিয়াউর রহমানের নাম মুখে নেন না। স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে তাকে স্বীকার করেন না। তাছাড়া বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদেও বিশ্বাস করেন না। এরকম ব্যক্তির নেতৃত্বে ঐক্য করার চেয়ে জাতীয়তাবাদী নেতা ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা নেতা বি. চৌধুরীর নেতৃত্বে ঐক্য করাই ভালো। এটা নিয়ে বিএনপির মধ্যেও নানারকম টানাপোড়েন চলছে।
এ নিয়ে বিএনপির একজন নেতা বলেছেন যে, যারা অধ্যাপক বি চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করছেন তাঁরা আসলে কোনো ঐক্য বা জোট নয় তারা বিএনপি ছাড়ার পায়তারা করছেন। ইতিমধ্যে বিএনপি থেকে কয়েকজন পদত্যাগ করেছেন, এই পদত্যাগকারীরাও অধ্যাপক বি. চৌধুরীর কাছে যাচ্ছেন। বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান মনে করেন যে, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি বিরোধী দল গঠন করার জন্যই বিএনপিকে ভাঙার প্রক্রিয়া চলছে। এ লক্ষ্যে যেহেতু বি. চৌধুরীর সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের একটা অতীত সম্পর্ক আছে তাই তাকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
যদিও বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে মাহি বি চৌধুরী এ ধরণের ভাবনাকে অমূলক ও ভিত্তীহীন বলে অভিমত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিএনপির যে অবস্থা তাতে বিএনপিতে কোনো সুস্থ রাজনীতিবিদ থাকতে পারবে না। তাঁরা অন্যান্য জায়গা খুঁজছে। সেখানে তাঁরা সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সখ্যতা গড়তে চায়। অবশ্যই এই সমমনা দলগুলোর মধ্যে তাঁদের প্রথম পছন্দ বিকল্পধারা। সেজন্যই তাঁরা বিকল্পধারায় যোগ দিচ্ছে। তিনি নিশ্চিত হয়ে বলেন যে, কোনো ঐক্য বা ফ্রন্ট নয়, বিএনপির সঙ্গে কোন ঐক্যের প্রশ্নই ওঠে না। তবে বিএনপি থেকে যদি কেউ বিকল্পধারায় আসে তাদের জন্য বিকল্পধারার দরজা সবসময় খোলা থাকবে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ আগাম কাউন্সিল দলীয় কোন্দল
মন্তব্য করুন
এমভি আবদুল্লাহ কবির গ্রুপ সোমালিয়া উপকূল
মন্তব্য করুন
ভারত বিরোধী বিএনপি রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
বিএনপি নেতারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যেসব কথা বলে তা শুনলে জিয়াউর
রহমানও কবরে শুয়ে লজ্জা পেয়ে যেতেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর প্রেসক্লাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো শুনেননি তিনি স্বাধীনতার ঘোষক।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্কুল ঘণ্টা যেমন দপ্তরি বাজায়, তেমনি জিয়াউর
রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে। আজকে বিএনপি নেতা আব্দুল মঈন
খান অনেক কথা বলেন। মঈন খানের বাবা আব্দুল মোমেন খান ৭৪ সালে খাদ্য সচিব ছিলেন। তিনি
ষড়যন্ত্র করে মার্কিন খাদ্যবাহী জাহাজ ফেরত পাঠিয়েছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আব্দুল মোমেন খানকে মন্ত্রী
বানিয়েছিল। মঈন খান নিজেও সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিল, দরকার পড়লে দেশ বিক্রি করে দেব।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান
মাহমুদ বলেন, দেশ সমৃদ্ধির দিকে যখনই এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।
বিএনপি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানোর জন্য যেভাবে দাবি করে জিয়াও সেভাবে
কখনো দাবি করেনি। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ছত্রছায়া পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করেছে।
জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের অধীনেই মুক্তিযুদ্ধের সময় বেতন ভুক্ত কর্মচারী ছিলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের কথা হাস্যরসের সৃষ্টি করে। বিএনপির নেতা মঈন খানের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, যার বাবার জন্য এদেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে তার মুখে এসব কথা মানায় না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে ইতিহাস বিকৃতি করে বিএনপি নেতারা বিশদকার বিষোদগার করছে কিন্তু এখন সঠিক ইতিহাস জনগনের সামনে আসার পর তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বিএনপির ইতিহাস বিকৃতির পাশাপাশি দেশের জনগণকেও বিভ্রান্তি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
বিএনপি ড. হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
বিএনপি ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করে, অপপ্রচার করে, মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (২৯ মার্চ) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির উদ্যোগে ইফতার ও ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ইফতার পার্টি না করে, সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করতে। আর বিএনপি বড় বড় হোটেলে ইফতার পার্টির আয়োজন করে। আর সেই ইফতার পার্টিতে তারা আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করে, অপপ্রচার করে, মিথ্যাচার করে।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বলে দিল্লির শাসন মেনে নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ পাকিস্তানে সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। আসলে বিএনপির হৃদয়ে এবং চেতনায় পাকিস্তান। আওয়ামী লীগের চেতনা এবং হৃদয়ে বাংলাদেশ, কোনো বিদেশিদের দাসত্ব নয়।
তিনি বলেন, বিএনপির চারদিকে অন্ধকার, শেখ হাসিনার জনকল্যাণমুখী বিচক্ষণ রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করেছিল। ব্যর্থ হয়ে এখনো অসংলগ্ন কথা বলছে। আশি ভাগ বিএনপি নেতাকর্মীকে দমন-পীড়ন করা হচ্ছে বলে তারা মিথ্যাচার করছে।
এসময় মির্জা ফখরুলকে মিথ্যাচার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তাদের মিথ্যাচারের রাজনীতি কেউ গ্রহণ করছে না বলেই তারা সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব সংকটের প্রভাবের পরও শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ এখনো ভালো আছে।
ওবায়দুল কাদের রাজনীতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল কমেনি। কোন্দল ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সামনে উপজেলা নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সারা দেশে এখন আওয়ামী লীগ নানা ভাগ উপভাগে বিভক্ত। শুধুমাত্র সংঘাত হানাহানির উপলক্ষ খুঁজছে পরস্পরবিরোধী আওয়ামী লীগের শিবিরগুলো। এরকম বাস্তবতার দলের সঙ্কট নিরসনে এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল দূর করার জন্য আওয়ামী লীগ আগাম কাউন্সিল অধিবেশনে যেতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র ইঙ্গিত দিচ্ছে।