নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৪ মার্চ, ২০১৯
আওয়ামী লীগ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে অনেকবেশি গণতান্ত্রিক এবং গঠনতন্ত্র মেনে চলে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির একটি বিষয় হলো গণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চা অনুসরণ করা। তাই এদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে যে টিকে আছে, তার একটা বড় কারণ হলো উদার গণতান্ত্রিক নীতি এবং দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা করা। এজন্যই বিভিন্ন সময় যখন দেখা যায় যে, আওয়ামী লীগের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক যখন দেশের বাইরে যান বা অসুস্থতার কারণে দেশের বাইরে যান বা দায়িত্ব পালনে অপারগ হন। তখন একজন ভারপ্রাপ্ত দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বিভিন্ন সময়ে দীর্ঘ বিরতীতে গেছেন, তখন তিনি কখনো সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করে গেছেন, কখনো জিল্লুর রহমান দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৭ সালে যখন কারাবরণ করেছিলেন ওয়ান ইলেভেনের সময়, তখন জিল্লুর রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
তেমনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদেও যখন কেউ দায়িত্ব পালনে অপারগ হন বা দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন। তখন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেওয়া হয়। এমনকি ওবায়দুল কাদের দায়িত্ব গ্রহণের পরও যখন তিনি বিভিন্ন সময়ে দেশের বাইরে গেছেন। তখন তিনি একজনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন। এটাই হলো গণতন্ত্রের রীতিনীতি।
গত রোববার ভোরবেলা আকস্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অসুস্থতার একদিন পরে আজ তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কে? যেহেতু আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক যখন চলে যান তখন তিনি কাউকে দায়িত্ব দেন অথবা দলের কার্যনির্বাহী কমিটি বা সভাপতি এটা নির্ধারন করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, বিষয়টি অত্যন্ত মানবিক এবং আবেগস্পর্শী বিবেচনা করে আওয়ামী লীগ এবার কাউকে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব প্রধান করেনি বরং আজকে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনায় অত্যন্ত আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন। সামগ্রিক চিকিৎসার খোঁজখবর আর তদারকি তাঁর নির্দেশেই হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। তিনিই গতকাল দেবী শেঠিকে ফোন করেছিলেন এবং ফোন করে তাকে এদেশে একপ্রকার উড়িয়েই এনেছেন বলা যায়। তিনি সিঙ্গাপুরে ফোন করে কয়েকজন চিকিৎসককে ঢাকায় নিয়ে আসেন। এবং আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তাঁর এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, আওয়ামী লীগ একটি অনুভূতির নাম। ওবায়দুল কাদেরের অসুস্থতার পর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার যে প্রতিক্রিয়া তাতে সত্যিই প্রতীয়মান হয় যে আওয়ামী লীগ আসলেই একটি অনুভূতির নাম। এবং একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিকভাবে এর খোঁজ নিয়েছেন। এটা শুধুমাত্র তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মী, সেজন্য নয়। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন যে ওবায়দুল কাদের কেবল তাঁর দলের রাজনৈতিক সহকর্মী বা দলের সাধারণ সম্পাদকই নন, তাঁর ছোট ভাই। এই যে বন্ধন, এই বন্ধনই আওয়ামী লীগের বড় শক্তি বলে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন। এই শক্তির জোরেই আওয়ামী লীগ ৭৫ এর ১৫ আগস্টের বিভীষিকা কাটিয়ে আজকে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী দলে পরিণত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলেছে যে, ওবায়দুল কাদের অসুস্থ হওয়ার পর আওয়ামী লীগ কীভাবে চলবে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের রুটিন কাজগুলো কে করবে কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্বগুলো কে পালন করবে সেগুলো নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। কারণ এখন ওবায়দুল কাদের জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, তার বেঁচে থাকাটাই হলো সবচেয়ে বড় বিষয়। এখন এসব ভাবনার সময় নয়। অন্য রাজনৈতিক দল হলে হয়তো এতক্ষণে কাউকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ করা হতো, এ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু হতো, কে নতুন সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন তা নিয়ে প্রতিযোগিতাও শুরু হয়ে যেত। কিন্তু আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দল নয়, একটি অনুভূতির নাম। যে কারণে ওবায়দুল কাদেরের এই অসুস্থতা আওয়ামী লীগকে আবেগাপ্লূত করেছে, তার সুস্থতার জন্য সবাই দোয়া প্রার্থনা করেছে যে যার অবস্থান থেকে, যেটা হচ্ছে দলের সভাপতির নেতৃত্বে। কিন্তু তার স্থলাভাষিক্ত কে হবেন সেই চিন্তা আসছে না কারও মনে।
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়া বিএনপি ব্রিটিশ দূতাবাস সারা কুক
মন্তব্য করুন
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল ঢাকাস্থ ব্রিটিশ দূতাবাসে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় তিন নেতা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদকে দাওয়াত দেয়া হয়েছিল ব্রিটিশ দূতাবাসে। সেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক এক ঘণ্টার বেশি সময় তাদের সাথে বৈঠক করেন। এসময় ব্রিটিশ দূতাবাসে অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।