নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৬ মার্চ, ২০১৯
আইএসে যোগ দেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামিমার নাগরিকত্ব বাতিলের প্রেক্ষাপটে তারেক জিয়ার ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিলের সম্ভাবনা বেড়েছে। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্রে প্রাপ্ত খবরে পাওয়া গেছে, যদি এরকম তথ্য প্রমান পাওয়া যায় যে তারেক জিয়া জঙ্গিবাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। সেক্ষেত্রে তারেক জিয়া ব্রিটেনে যে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন, তা বাতিল করা হবে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে শামিমা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘শামিমা কোন দেশের বংশোদ্ভূত সেটা বড় কথা নয়। জঙ্গিবাদের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদেরকে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’ এই প্রেক্ষাপটে তিনি বলেছেন যে, ‘যারা ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে জঙ্গিবাদের মদদ বা পৃষ্টপোষকতা দিচ্ছেন, তাদের ব্যাপারেও ব্রিটেনের একই নীতি গ্রহণ করা হবে। ব্রিটেন তার ভূমিকে জঙ্গিবাদের লালন ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে দিবে না। জঙ্গিবাদের সঙ্গে তারা কোন রকম আপোস করবেন না।’
এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরে তারেক জিয়ার জঙ্গি সম্পৃক্ততার একাধিক প্রমান উপস্থাপন করবে বলে জানা গেছে। এই তথ্য প্রমানগুলো যদি সঠিক বস্তুনিষ্ঠ হয় এবং ব্রিটিশ সরকার যদি তদন্ত করে সেটি সঠিক বিবেচনা করে, সেক্ষেত্রে তারেক জিয়ার রাজনৈতিক আশ্রয় সুযোগ বাতিল হয়ে যাবে বলে কূটনৈতিক প্রাপ্ত সূত্রে জানা গেছে। বাংলাদেশের কাছে তারেক জিয়ার জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার একাধিক প্রমান রয়েছে বলে জানা গেছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রমান হিসেবে যেটা আদালতে প্রমানিত হয়েছে। সেটা হলো, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা। এই গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক জিয়া প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পাকিস্তান ভিত্তিক একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সহযোগিতা নিয়েছিলেন এবং এই গ্রেনেড হামলায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য জঙ্গিরা অস্ত্র সংগ্রহ করেছিল এবং জঙ্গিরা অপারেশন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল বলে আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এই রায়ের সত্যায়িত কপি ইতিমধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কাছে আছে এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এর সত্যায়িত অনুলিপি তৈরী করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, তারেক জিয়া যে জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং সংশ্লিষ্ট রয়েছেন, সেটা প্রমানের জন্য এই তথ্যটুকুই যথেষ্ঠ।
দ্বিতীয়ত, তারেক জিয়ার সঙ্গে জঙ্গিদের মদদদাতা এবং বিশ্বের অন্যতম মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল দাউদ ইব্রাহিমের সম্পর্ক রয়েছে এবং তার সঙ্গে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব রয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে পাওয়া গেছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ ইতিমধ্যে ২০০৮, ২০১০ এবং ২০১১ সালে তিনটি পৃথক প্রতিবেদনে দাবি করেছে যে, দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে তারেক জিয়ার আর্থিক লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে এবং বিভিন্ন সময়ে দাউদ ইব্রাহিম এবং তারেক জিয়ার একাধিক বৈঠক হয়েছে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশ সরকারের কাছে এরকম তথ্য প্রমাণ রয়েছে যে, ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করার সময় তারেক জিয়া বিভিন্ন জঙ্গিবাদি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, টেলিফোনে আলাপ করেছেন। বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টির জন্য তিনি তাঁদেরকে অর্থ দিয়েছেন। এই সমস্ত কাজের তথ্য প্রমাণও বাংলাদেশ সরকারের হাতে এসেছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার ব্রিটেনকে তদন্ত করতে বলবে।
চতুর্থত, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে তারেক জিয়া তাঁর রাজনৈতিক অফিস ‘হাওয়া ভবন’ একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে গোপন বৈঠন করেছেন বলে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।
পঞ্চমত, তারেক জিয়া একাধিক বক্তৃতায় বলেছেন যে, ইসলামী ছাত্রশিবির এবং ছাত্রদল হলো একই মায়ের দুই সন্তান। এর মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্তরা রয়েছে। ইসলামী ছাত্রশিবির মার্কিন যুক্তরাষ্টের তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভূক্ত।
এই পাঁচটি ঘটনার একটি যদি ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর প্রমাণ পায় তাহলেই তারেক জিয়ার ব্রিটেনে থাকার কোনো অধিকার থাকবে না। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামিমা কিশোরী বয়সে আইএস এর প্রতি আসক্ত হন এবং তিনি ব্রিটেন থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় আইএস কেন্দ্রে যান। সেখানে তিনি একজনকে বিয়ে করেন এবং তাঁর দুটি সন্তান চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করে। এখন তিনি তৃতীয় সন্তান সম্ভাবা হয়ে ব্রিটেনে ফেরার আবেদন করেছেন। কিন্তু ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর তাঁর আবেদন নাকচ করে দিয়ে তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করে। এটার মাধ্যমে ব্রিতেন সুস্পষ্ট বার্তা দিলো যে, যারাই ব্রিটেনে থাকবে তাঁদেরকে জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক না রেখেই থাকতে হবে। এটা যদি প্রমাণিত হয় যে তারেক জিয়ার সঙ্গে সন্ত্রাসী সংগঠনের সম্পর্ক রয়েছে এবং তিনি তাঁদের মদদদাতা এবং পৃষ্ঠপোষক তাহলে তাঁর ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়লাভের আর কোনো সম্ভাবনা থাকবে না বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই এই বিষয়টি নিশ্চিত হবে বলে তাঁরা অভিমত ব্যাক্ত করেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, শামিমার নাগরিকত্ব বাতিলের পর তারেকের রাজনৈতিক আশ্রয়লাভের বিষয়টি সামনে চলে এসেছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।