নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১১ মার্চ, ২০১৯
দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। দেশের মানুষ আশা করেছিল একটি সুষ্ঠু এবং উৎসবমুখর নির্বাচন হবে দেশের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠে। কিন্তু ডাকসু নির্বাচন শেষ বিচারে একটি প্রশ্নবিদ্ধ এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা হিসেবেই চিহ্নিত হলো। আওয়ামী লীগপন্থী কিছু অতি উৎসাহী শিক্ষকের অপরিণামদর্শী কাণ্ডকারখানায় কলঙ্কিত হলো ডাকসু নির্বাচন। এরকম ডাকসু নির্বাচন কে চেয়েছিল?
ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের আচরণ নিয়ে কথা উঠেছিল। একমাত্র ছাত্রলীগ ছাড়া সব ছাত্র সংগঠনই প্রশাসনের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। শুধু হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোটের সময় দুপুর দুটো পর্যন্ত রাখা ইত্যাদি নানা একতরফা সিদ্ধান্ত শুরুতেই প্রশাসনের নিরপেক্ষতাকে ক্ষুণ্ন করেছিল। তারপরও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আবেগ আর উৎসাহ ছিল প্রচণ্ড। তাই শেষ পর্যন্ত নানা আপত্তি সত্ত্বেও সব ছাত্র সংগঠন ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। সাধারণ মানুষ আশা করেছিল যা হওয়ার হয়ে গেছে, অন্তত শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে ভোটরে দিন শিক্ষকরা যা করলেন তা বলার কোনো ভাষা আমাদের নেই।
প্রথমেই কুয়েত মৈত্রী ছাত্রী হলের কথাই ধরা যাক। হলের প্রভোস্ট ব্যালট বাক্স আগেই ভরিয়ে রেখেছিলেন। আর সেই ব্যালটের সবগুলোতেই ছাত্রলীগের হলের প্রার্থীদের পক্ষে টিক দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ এবং আন্দোলনের মুখে এসব আগেই সিল দেওয়া ব্যালটগুলো প্রকাশ্য হয়। সন্দেহ নেই, হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট শবনম জাহানের নেতৃত্বে এই নজিরবিহীন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এই একটি ঘটনা ডাকসু নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে নষ্ট করেছে। কে বলেছিল এই অতি আওয়ামী লীগ প্রভোস্টকে এসব করতে? নিশ্চয়ই সরকার বলেনি। কিন্তু এই কাজটি করে তিনি কার উপকার করলেন? সরকার নাকি বিরোধী পক্ষের? এই একটি ঘটনা ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়েও নতুন কথাবার্তা বলার সুযোগ করে দিল।
দ্বিতীয় ঘটনা ঘটলো রোকেয়া হলে। সেখানে ৯টি ব্যালট বাক্সের মধ্যে ৬টি দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা। এই অভিযোগ অন্যভাবে মিমাংসা করা যেতো। কিন্তু এই অভিযোগের বিরুদ্ধে হলের প্রভোস্ট জিনাত হুদা যেভাবে বক্তব্য রাখলেন, তাকে হঠাৎ ছাত্রলীগের নেত্রী মনে হচ্ছিল। একজন শিক্ষক কি এভাবে বক্তব্য রাখতে পারেন?
সারাদিনই দেখা গেছে, হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের লম্বা লাইন। অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রলীগের শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়ে এসে আবার লাইনে দাঁড়িয়েছে। হয়তো এসব শুধুই অভিযোগ, কিন্তু নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের উচিৎ ছিলো অভিযোগগুলোর নিরপেক্ষ এবং বিশ্বাসযোগ্য নিষ্পত্তি। কিন্তু তা না করে তারা যেন ছাত্রলীগের কর্মী হয়ে গিয়েছিলেন। শিক্ষকরা যখন ছাত্রলীগ কর্মী কিংবা আওয়ামী লীগের কর্মী হয়ে যান তখন আর কা কী বলার আছে?
প্রশ্ন হলো, এরকম একটি বিতর্কিত নির্বাচন করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে কে নির্দেশ দিয়েছিল? নাকি কারো নির্দেশ নয়, স্রেফ সরকারকে খুশি করতেই সরকারের কাঁধে আরেকটা অসম্মানের বোঝা চাপিয়ে দিলেন অতি উৎসাহীরা?
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিএনপি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শামা ওবায়েদ সারাহ কুক
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।