নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৩ মার্চ, ২০১৯
ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের কয়েকজন প্রার্থীর অস্বাভাবিক ভোট নিজ দলের মধ্যেই সন্দেহ ও অবিশ্বাস তৈরী করেছে। ছাত্রলীগের মধ্যে তা নিয়ে অশ্বস্তি চলছে এবং পরস্পরকে পরস্পর অবিশ্বাস করা শুরু করেছে। ছাত্রলীগের একাধিক নেতা মনে করছেন যে, যারা ১১ হাজারের উর্ধ্বে ভোট পেয়েছেন তাদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সম্পৃক্ততা ছিল। এবার ডাকসু নির্বাচনে ছয়জন প্রার্থী এই ১১ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছে। এরমধ্যে ভিপি পদে নুরুল হক নূর পেয়েছেন ১১ হাজার ৬২ ভোট। অন্য পাঁচজনই ছাত্রলীগের। এরমধ্যে ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে সাদ্দাম হোসেন পেয়েছেন ১৫ হাজার ৩০১ ভোট। তিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন। সাদ্দাম হোসেন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। ডাকসু নির্বাচনে তিনি সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের পদ চেয়েছিলেন। এই সময়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছিল বলে ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তখন সেসময় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যৌথ প্যানেল সাদ্দামকে সভাপতি এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সাধারণ সম্পাদক পদ দেয়ার একটা প্রস্তাব ছিল। যদিও সে প্রস্তাবটি বেশিদূর আগায়নি। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদক এমনকি এজিএস পদও দাবি করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা তা পায়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট একাধিক ছাত্রলীগ নেতা বলছেন, সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আগে থেকেই ছিল। তাছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে ছাত্রদের মধ্যে জনপ্রিয়। এজন্য তিনি সর্বাধিক সংখ্যক ভোট পেয়েছেন।
এছাড়াও অন্য যে চারজন এগারো হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন। তাদের মধ্যে সদস্য পদে যোশীয় সাংমা চিবল পেয়েছেন ১২ হাজার ৮৬৮ ভোট। সাদ বিন কাদের চৌধুরী স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে পেয়েছেন ১২ হাজার ১৮৭ ভোট। ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে শামস ই নোমান পেয়েছেন ১২ হাজার ১৬৩ ভোট। সদস্য পদে রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য পেয়েছেন ১১ হাজার ২৩২ ভোট। এই পাঁচজনই যখন কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয় তখন থেকে তার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। ছাত্রলীগের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে যখন কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয় তখন ছাত্রলীগের একটি বড় অংশ কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। কোটা আন্দোলনের পক্ষে তারা রাস্তায় নেমেছিল। যখন আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান স্পষ্ট হয়ে যায়, তখন তারা সরে আসে। কিন্তু ছাত্রলীগের একটি অংশ তখনও কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে। তবে ছাত্রলীগের সাদ্দাম হোসেনসহ কয়েকজনের সঙ্গে কোটা আন্দোলনকারীদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। ছাত্রলীগের একটি সূত্র মনে করছে যে, ছাত্রলীগের একটি অংশ কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে গোপন আতাতের মাধ্যমে শোভনকে হারিয়েছে। সাদ্দামের ভোট তার অন্যতম বড় প্রমান। এরফলে সর্বাধিক ভোট পেলেও সাদ্দাম হোসেনকে অনেকে ছাত্রলীগের মধ্যে ভিলেন মনে করছেন। মনে করছেন যে, সাদ্দাম হোসেন তার নিজের বিজয় সুরক্ষিত করার জন্য এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার জন্য শোভনেকে নির্বাচনে পরাজিত করেছেন। ছাত্রলীগের মধ্যে এখন এনিয়ে কানাঘুষা চলছে। জানা গেছে যে ছাত্রলীগের ভিতরে এনিয়ে একটা তদন্ত কমিটি করারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তারা খুব শীঘ্রই এ নিয়ে কথা বলবেন। ভোটের তারতম্যটা কেনো হলো এটা তারা বোঝার চেষ্টা করবেন। ছাত্রলীগের সর্বশেষ কাউন্সিলের পরে ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক কে হবেন এ নিয়ে ছাত্রলীগের নানারকম লবিং তৎপরতা ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর একক সিদ্ধান্তে এবং নিজস্ব তদন্তের ভিত্তিতে ছাত্রলীগের এই কমিটি গঠন করেছিলেন। কমিটি গঠনের পর ছাত্রলীগে আপাত সুসম্পর্ক থাকলেও ছাত্রলীগের ভিতরে এটা নিয়ে স্পষ্ট দ্বিধা বিভক্তি ছিল বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র মনে করছে। এই দ্বিধা-দ্বন্দের বিষয়ে একটি মূল বিষয় ছিল যে, রেজওয়ানুল হক শোভনকে সভাপতি করা একটি পক্ষ মেনে নিতে পারেনি। এই ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের সেই অংশটিই তাঁরসঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে ছাত্রলীগের একাধিক নেতৃবৃন্দ মনে করছে।
তবে ছাত্রলীগের অন্য একটি সূত্র বলছে যে, সাদ্দাম হোসেন যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এবং তিনি এজিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার হওয়ার কারণে তিনি ভোট বেশি পেয়েছেন। তবে ছাত্রলীগের অনেক নেতাই এখন প্রকাশ্যেই বলছেন যে, সাদ্দাম দলের স্বার্থের বাইরে নিজে জয়ী হওয়ার জন্য কোটা সংস্কারকারীদের সঙ্গে আঁতাত করেছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।