নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪৩ পিএম, ১৫ মার্চ, ২০১৯
আজ বিকেলে নাজিমুদ্দীন রোডের বিশেষ কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। জানা যায় যে, সরকার তাদের দুজনকে সমঝোতার বিষয়ে বেগম খালেদা জিয়ার মনোভাব নেওয়ার জন্য সাক্ষাতের অনুমতি দিয়েছিল। এই সাক্ষাতে ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে শর্ত বেগম খালেদা জিয়ার কাছে তুলে ধরেন। শর্তগুলো হলো:
১. বেগম খালেদা জিয়াকে যদি প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয় তাহলে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা সংসদে যোগ দিবেন।
২. বেগম খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পেলে শুধু চিকিৎসা ছাড়া অন্য কোন রাজনৈতিক তৎপরতায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
৩. বেগম খালেদা জিয়া তার পছন্দের চিকিৎসা শেষে পুনরায় কারাগারে তিনি ফেরত যাবেন।
৪. বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে যে যাবতীয় খরচ ইত্যাদি বিএনপি বা বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার বহন করবে।
অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে সংসদে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে শর্ত দেওয়া হয়েছিল তা হলো:
১. বেগম খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসা করা।
২. বিএনপির আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি। রাজনৈতিক হয়রানি মূলক মামলাগুলো প্রত্যাহার ইত্যাদি।
এই বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যই আজ বিকেলে বিএনপির এই দুই শীর্ষ নেতা কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া এই সমঝোতা প্রস্তাব নাকোচ করে দিয়ে তিনি বলেন যে, আমি প্রয়োজনে জেলেই থাকবো এবং যা কিছু করার জেলে বসেই করবো। আমি সমঝোতা করে মুক্ত হতে চাইনা। একাধিক সূত্র বলছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তীব্র ভৎসনা করে তিনি বলেন,‘ সরকারের সঙ্গে দালালি করে কত পেয়েছেন?’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তখন মাথা নিচু করে ছিলেন। নজরুল ইসলাম খান তখন খালেদা জিয়াকে বলেন,‘ এখন আন্দোলন করার মতো পরিস্থিতি নেই এবং দলের মধ্যে হতাশা কাজ করছে।’ এ সময় খালেদা জিয়া অবিলম্বে দলের স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করার নির্দেশ দেন। ঢালাওভাবে তৃনমূলের নেতাকর্মীদের বহিস্কারের তীব্র সমলোচনা করে এটা বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেন। তিনি প্রথমে সংগঠন গুছিয়ে দ্রুত আন্দোলনের জন্য দলকে প্রস্তুত করার জন্য মির্জা ফখরুলকে নির্দেশ দেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্থায়ী কমিটির সদস্য কাদের করা হবে বা কি করা হবে সে ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়ার মতামত চাইলে বেগম খালেদা জিয়া সেখানে অপেক্ষাকৃত তরুণদেরকে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। বিএনপির একটি সূত্র বলছে, বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশনাই চুড়ান্ত নয়। কারণ বিএনপিতে এখন বেগম খালেদা জিয়ার কথাই শেষ কথা নয়। বেগম খালেদা জিয়ার এই আলোচনার প্রেক্ষিত্রে লন্ডনে তারেক জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুল কথা বলবেন এবং তারপরই তিনি এ ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন। তবে এ দফায় যে সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় যে বেগম খালেদা জিয়ার মত নেই সেটা আজকের সাক্ষতে স্পষ্ট হয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।