নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৬ মার্চ, ২০১৯
বিএনপি মহাসচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করতে চান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু বিএনপিতে এখন মহাসচিব হওয়ার মতো কোন নেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যাকেই অনুরোধ করা হচ্ছে, তিনিই মহাসচিব হওয়ার জন্য অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। দলটির স্থায়ী কমিটির অন্তত তিনজন সদস্য এ পর্যন্ত মহাসচিব পদের দায়িত্ব গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ এসেছে।
১. মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে এই নির্বাচন করেছেন, যেখানে শুধুমাত্র সরকারকে বৈধতা দেয়া ছাড়া আর কিছুই করা হয়নি।
২. মির্জা ফখরুল অযাচিতভাবে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ঐক্য করেছেন। এর ফলে তিনি ইসলাম পছন্দ ও দক্ষিণপন্থীদের আস্থা হারিয়েছেন।
৩. তিনি নির্বাচনের পর দলকে সংগঠিত করা এবং নির্বাচন বাতিলের ক্ষেত্রে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যথেষ্ঠ যোগ্যতা দেখাতে পারেননি।
৪. মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দৃশ্যমান কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেননি।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে দলের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দানা বেঁধেছিল।
জানা গেছে, আন্দোলন বা আইনী প্রক্রিয়ার বাইরে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। এসব গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে তিনি সরকারী সহায়তায় গতকাল বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। খালেদার মুক্তির জন্য সরকারের বিভিন্ন প্রস্তাব মির্জা ফখরুল তার কাছে তুলে ধরেন। তবে খালেদা জিয়া এসব প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
বৈঠকে খালেদা জিয়া মির্জা ফখরুলকে বলেন, ‘দায়িত্ব পালন করতে না পারলে তুমি সরে যাও। অন্য কাউকে দায়িত্ব দেবো।’ মির্জা ফখরুলও আবেগপ্রবণ হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বলে ওঠেন, ‘আপনি বললে আমি এখনই দায়িত্ব ছেড়ে দিতে প্রস্তুত।’ খালেদা জিয়া তখন নজরুল ইসলাম খানকে মহাসচিবের দায়িত্ব নেয়ার অনুরোধ জানান। তবে নজরুল ইসলাম খান খালেদা জিয়াকে জানান, এই মুহূ্র্তে বিএনপি মহাসচিবের দায়িত্ব নেয়ার জন্য তিনি নিজেকে যোগ্য মনে করছেন না এবং তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে চান না।
বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও মহাসচিব পদ থেকে মির্জা ফখরুলকে সরিয়ে দেয়ার পক্ষে। তিনি নতুন মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে অনুরোধ করেন। কিন্তু আমির খসরু বর্তমান পরিস্থিতিতে মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণে অসম্মতি প্রকাশ করেন।
এছাড়াও দলের মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক প্রভাবশালী সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকেও অনুরোধ করা হয়েছিল বলে বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে। কিন্তু খন্দকার মোশাররফ মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অনেকগুলো সুনির্দিষ্ট শর্ত দিয়েছেন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম শর্ত, রাজনীতি থেকে তারেক জিয়ার আপাতত অবসর গ্রহণ। যার ফলে খন্দকার মোশাররফকে মহাসচিব করার বিষয়টি আর এগোয়নি।
এরকম পরিস্থিতিতে বিএনপি একটি কর্মহীন রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে এবং রাজনৈতিক দলটির অপমৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যোগাযোগ করা হলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবশ্য পদত্যাগের গুঞ্জন অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি এটাও বলেছেন, দলের স্বার্থে তিনি যে কোন ত্যাগ স্বীকারে তিনি প্রস্তুত ছিলেন এবং আছেন। দলের পুনর্গঠন এবং শক্তি বৃদ্ধির জন্য যদি তাকে মহাসচিব পদ ছেড়ে দিতে হয়, সেটা ছেড়ে দিতেও তিনি প্রস্তুত। বিএনপিতে হয়তো মহাসচিব পদে নাটকীয়ভাবে কোন ব্যক্তির নামও আসতে পারে বলে বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করছে এবং নতুন মহাসচিব চূড়ান্ত হলেই বিএনপিতে মির্জা ফখরুল অধ্যায় শেষ হবে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।