ইনসাইড পলিটিক্স

সরকার গিলে খাচ্ছে আওয়ামী লীগকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৬ মার্চ, ২০১৯


Thumbnail

টানা দশ বছর ক্ষমতায় থেকে তৃতীয় মেয়াদের জন্য দেশ পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী এই সংগঠনটি বাংলাদেশের সবেচেয়ে বড় সংগঠন হিসেবেই পরিচিত। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের কিছুটা বিধ্বস্ত সময় কেটেছিল। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা  ১৯৮১ সালের ১৭ই মে দেশে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের পুনর্গঠন করেন এবং ক্রমশ আওয়ামী লীগ আবার পূর্বের রূপে যায় এবং শক্তিশালী, জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। একানব্বইয়ের নির্বাচনে পরাজয়ের পরও আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বড় রাজনৈতিক দল ছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগই প্রকৃত অর্থে রাজনৈতিক দল যে দলের তৃণমূল পর্যন্ত কর্মীবাহিনী আছে এবং আদর্শভিত্তিক সংগঠন আছে। তুলনা করলে দেখা যায় যে, বিএনপি আসলে ক্ষমতায় বসে কতিপয় সুবিধাভোগীদের নিয়ে গঠিত একটি ক্লাবের মত। আর আওয়ামী লীগ হলো তিলে তিলে গড়ে ওঠা একটি সংগঠন। যে সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে শুধু ত্যাগ তিতিক্ষা করেছে, মানুষের জন্য, জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছে নিজেদের জীবন যৌবনকে। কিন্তু টানা দশ বছর ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগের সংগঠনের অবস্থা কি এই প্রশ্ন উঠছে। আওয়ামী লীগের সংগঠন আজ ঘুনে ধরা, আওয়ামী লীগের সংগঠন আজ আদর্শহীন, আওয়ামী লীগের সংগঠন আজ সরকারমুখী। এরকম অভিযোগ হরহামেশাই উঠছে। তৃতীয় মেয়াদে দেখা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক তৎপরতা নেই বললেই চলে। আওয়ামী লীগের সংগঠনকে গিলে খাচ্ছে সরকার।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন দল এবং সরকারকে আলাদা করতে। এজন্যই তিনি যখন মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন, সংগঠন করার জন্য মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিয়ে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সংগঠনই হচ্ছে রাজনীতির প্রাণ। সংগঠনই যদি না থাকে তাহলে একজন রাজনীতিবীদের কোনো পরিচয় থাকে না। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে সরকার এবং সংগঠন একাকার হয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগের প্রধান এবং সভাপতি শেখ হাসিনা, তিনি প্রধানমন্ত্রীও বটে। সভাপতির দায়িত্ব পালনের চেয়ে সরকারের দায়িত্ব পালন করাটাই তাঁর মূল দায়িত্ব। যার জন্য তাঁকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজে সময় দিতে হয়। কিন্তু দেখা যায় যে, এবারের মন্ত্রিসভার অধিকাংশ মন্ত্রীই নতুন , আনকোরা। এজন্য সবগুলো মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তই গ্রহণ করতে হয় প্রধানমন্ত্রীকে। এরপরও তিনি সংগঠনে যে পরিমাণ সময় দেন তা অন্য যে কারও চেয়ে বেশি।

সাংগঠনিক কাঠামোতে আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত সংগঠন থাকার কথা। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায় যে, আওয়ামী লীগের কোনো সংগঠন নেই বললেই চলে। ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা ইউনিয়ন পরিষদের টেন্ডারসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডেই ব্যস্ত থাকেন। দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা যারা তারা নানারকম দেন দরবার, তদ্বিরে সময় কাটান। সংগঠন দেখার তাঁদের সময় কই?

এরপর আসে উপজেলা পর্যায়। উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগ বিভক্ত এবং পরস্পর মুখোমুখি প্রায়। এমপিদের সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যানদের বিরোধ নতুন নয়। এবার উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এই বিরোধ আরও নতুন করে গরে উঠেছে। পাশাপাশি এবারের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীতা উন্মুক্ত করে দেয়ার ফলে আওয়ামী লীগ একের অন্যের মুখোমুখি ও শত্রুতে পরিণত হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোনো সাংগঠনিক তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। বরং এক পক্ষ, অন্য পক্ষকে কীভাবে কুপোকাত করবে সেই চেষ্টাতেই ব্যস্ত।

এরপর আসে জেলা পর্যায়। জেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের অবস্থা তথৈব। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে জেলা প্রশাসনের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা যেন আওয়ামী লীগ নেতারাই হয়ে গেছেন। নেতাদের একমাত্র কাজ হলো বিভিন্ন সরকারী কাজ তদারকি করা, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করা, বিভন্ন তদ্বিরে সময় দেওয়া। জেলা পর্যায়ের নেতারা অধিকাংশ সময় ঢাকায় কাটান এবং স্থানীয় পর্যায়ের সংগঠন চালানোর মত বা কর্মসূচি দেওয়ার মত কোনো সময় তাঁদের হাতে নাই। শুধু দায়সারা গোছের একটি দিবস পালন। দিবসে পুষ্প স্তবক অর্পন করা। মন্ত্রী বা এমপিরা গেলে তাদেরকে সময় দেওয়া, এই নিয়েই তারা তৎপর।

এরপর আসে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় পর্যায় কমিটি। বিভাগীয় পর্যায়ের কমিটি নাজুক, দুর্বল এবং অস্তীত্ববিহীন প্রায়। কেন্দ্রীয় কমিটিতে একটা বড় অংশ মন্ত্রী, যারা দাপ্তরিক কাজেই ব্যস্ত থাকেন। আর যারা মন্ত্রী না,  তারা হতাশ ও কিছু না পাওয়ার বেদনায় আপ্লুত এবং তারা সব সময় খোঁজেন কোথাও কিছু পাওয়া যায় কিনা। প্রধানমন্ত্রী বা আওয়ামী লীগ প্রধান তাদের অনুগ্রহ বা অনুকম্পা পৃষ্ঠ হয়ে তাদেরকে কোন পদ পদবি দেয় কিনা, সেই চিন্তায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দর মূল ভরসা। সংগঠন দেখা, সংগঠনকে শক্তিশালী করা এবং সংগঠনকে সময় দেওয়ার মত সময় তাদের হাতে নেই। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় আড্ডা এবং কথাবার্তা বলার জন্য সাধারণত ব্যবহৃত হচ্ছে। ঢাকা মহানগরীতে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। মহানগরীর কার্যক্রম হলো সিটি কর্পোরেশনকে ঘিরে। মহানগরীর কার্যালয় বা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যারা আসে, তার স্রেফ কিছু সময় কাটানো ও দলের একে অন্যের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করার জন্য আসে। শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অধিকাংশই থাকে নানা রকম তদবির ব্যবসা বাণিজ্য এবং ব্যক্তিগত কাজে কাটান।

আওয়ামী লীগ দশ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। এই ক্ষমতায় থাকার মূল্য দিতে হচ্ছে সংগঠনকে। এই সময় আওয়ামী লীগের সংগঠন সবচেয়ে ক্ষয়িঞ্চু এবং দুর্বল বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে এর বিরুদ্ধ মতও আছে। অনেকেই মনে করে করছে যেহেতু রাজনৈতিক কর্মকান্ড বেশি নেই। বিরোধী দলের কার্যক্রম নেই। কাজেই এখন রাজনৈতিক কর্মকান্ড সীমিত হয়ে গেছে। সীমিত রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সাংগঠনিক শক্তির দুর্বলতা বোঝার কোন উপায় নেই। আওয়ামী লীগ যে কোন সময় সংগঠিত হতে পারে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের বিস্তৃর্ণ নেতাকর্মী রয়েছে। কাজেই আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে দুর্বল একথা ঠিক নয়। হয়তো কর্মসূচী নেই বলে আওয়ামী লীগকে দুর্বল মনে করা হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের যারা পোড় খাওয়া তারা মনে করেন যে, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পরে ক্ষমতার নানা রকম সুবিধা পেয়ে পেয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন আর আগের মতো ত্যাগ স্বীকার করতে কতটুকু প্রস্তুত সে প্রশ্ন রয়ে গেছে। দুর্দিনে এই সমস্ত নেতাকর্মীরা কতটুকু রাজপথে নামবেন বা কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করবেন সেটা সময়ই বলে দিবে। তবে একটা ব্যাপারে সবাই একমত যে আওয়ামী লীগের আদর্শিক অবক্ষায় ঘটেছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষীকি উদযাপন হবে আগামী বছর। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি হবে। এই সময়কে ঘিরে যতসব কর্মসূচী সব সরকারী উদ্যোগে নেওয়া হচ্ছে। দলীয় উদ্যোগে কর্মসূচী কম। দলীয় উদ্যোগে কর্মসূচী নেই বললেই চলে। যার ফলে সংগঠনের নেতাকর্মীদের হাতে কোন কাজ নেই। প্রত্যেকেই নিজেদের আখের গুছিয়ে নিজেদের অবস্থান ভালো করার জন্যই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এটা একটা সংগঠনের জন্য বিপদজনক বলে মনে করা হচ্ছে।

মূলত সরকারে থাকার জন্য সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী মন্ত্রিসভায় বা এমপি হিসেবে আছেন তারা বাইরে এসে মনে করছেন তারা সরকারের অংশ। তাঁরা সরকারের বিভিন্ন কাজকর্ম, বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এরফলে সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে অনেকে মনে করছে। আওয়ামী লীগের যারা প্রবীণ রাজনীতিবিদ তারা মনে করছেন, দু:সময়ে আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালি হয়। বিশেষ করে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন, একানব্বইয় থেকে ছিয়ানব্বই বিরোধী দলের সময় আওয়ামী লীগ অত্যন্ত শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত ছিল এবং আওয়ামী লীগ সম্বেন্ধে একজন প্রবীন নেতা বলেছেন, বন্যেরা যেমন বনে সুন্দর, শিশু মাতৃকোরে। সেরকম আওয়ামী লীগও সবচেয়ে বেশি তার সাংগঠনিক দক্ষতা দেখাতে পারে, যখন সে বিরোধী দলে থাকে। তাহলে কী দীর্ঘদিন সরকারে থাকার ফলে আওয়ামী লীগ আর দশটা রাজনৈতিক দলের মত একটি সুবিধাবাদী রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে? সময়ই এই প্রশ্নের উত্তর দিবে।  

বাংলা ইনসাইডার/এসআর/এমআরএইচ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন: ভোটে অংশ নেওয়ায় বিএনপির দুই নেতাকে শোকজ

প্রকাশ: ১০:৫২ এএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে শোকজ করা হয়েছে।

বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।

গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।

দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।

কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।

তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলেও রিসিভ হয়নি।


উপজেলা নির্বাচন   বিএনপি   শোকজ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০:৩০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। 

অবশ্য এসব প্রার্থীর অনেকে এটি ‘দলীয় নির্বাচন নয়’ বলে দাবি করছেন, আবার কেউ কেউ ‘জনগণ তাদের চাচ্ছে’– এমন অজুহাত দেখাচ্ছেন। এমনকি দল থেকে বহিষ্কার হতে পারেন– সেই ভয় উপেক্ষা করেই নিজেদের এ অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। আবার অনেকের দলে কোনো পদপদবিও নেই। অনেকে বহিষ্কৃত। এর পরও যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড। শিগগির এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো দলের এমন সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বাস্তবায়ন করছে দলটি। এ জন্য দফায় দফায় তৃণমূল নেতাকর্মী ছাড়াও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করেন নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতারা এই নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরেন। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ইচ্ছুকদের প্রথমে কাউন্সেলিং, নির্বাচনে না যাওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি দলের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। এর পরও যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাদের বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই উচ্চারণ করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। 

এদিকে গত সোমবার রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের বহিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলছেন, স্থানীয় জনগণের চাপে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড়া যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না তাই তারা স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করছেন। আর তাই বহিষ্কারের বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না। তবে দল তাদের ব্যাপারে নমনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন এমনটাও প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলার বিএনপির প্রার্থী বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনে না যাওয়ার। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন করব, দল যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নেবে।

বিএনপি   গণ বহিষ্কার   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় থানায় জিডি

প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ ওরফে খোকন এ জিডি করেন।

জিডিতে বলা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সাংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ২০ বছর যাবৎ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই।’ 

একপর্যায়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।’

জিডিতে শ্রমিক লীগের ওই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।’

ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না, এটা ঠিক না’

প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের। 

গতকাল সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে তার কক্ষে যান শাজাহান খান। এ সময় তার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি তো কথা শুনলেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তও মানলেন না।’

এ সময় সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তিরস্কার করেন শাজাহান খানকে।

জানা গেছে, শাজাহান খান এক পর্যায়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতির ধারাবাহিকতায় ছেলে আসিবুর রাজনীতিতে এসেছে। এ জন্যই সে প্রার্থী হয়েছে। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনের নির্বাচন না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রতিউত্তরে শাজাহান খান বলেন, অনেকেরই নিকটাত্মীয় রাজনীতিতে আছেন।

ওবায়দুল কাদের এ সময় শাজাহান খানকে বলেন, ‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না। এটা ঠিক না।’ এর জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত দেরিতে জানিয়েছেন। আগে জানালে ভালো হতো।’ তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি আমার নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন সিদ্ধান্ত কখন দেবেন, সেটা কি আমাদের জিজ্ঞাসা করে দেবেন?’

শাজাহান খানের উচ্চস্বরে কথা বলা নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিরক্ত হন ওবায়দুল কাদেরও। তিনি শাজাহান খানের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে দলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পরও আপনি সবার সামনে এসব অপ্রিয় কথা কেন বলছেন?

এ সময় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কার্যনির্বাহী সংসদের দুই সদস্য আনিসুর রহমান ও সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মশিউর রহমান হুমায়ুন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী লোটন, বলরাম পোদ্দার এবং শাহজাদা মহিউদ্দিন।

ওবায়দুল কাদের   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই চামেলীকে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
 
এর আগে ওই নারী কাউন্সিলরের একটি নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কয়েকদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ঘুরপাক খায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আওয়ামী লীগ   ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন