নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৬ মার্চ, ২০১৯
যুক্তিসঙ্গতভাবে অভিযোগ খণ্ডন না করতে পারলে ১৫ জুনের মধ্যে তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর এবং ব্রিটিশ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদদে মদদ দেয়া, জঙ্গি সম্পৃক্ততা, জঙ্গি অর্থায়নসহ একাধিক অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছিল এবং এসমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তারেক জিয়াকে বাংলাদেশের ফেরত পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল লন্ডনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে। ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্ত তারেক জিয়া সম্পর্কিত অভিযোগের ব্যাপারে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা ‘স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড’ এবং ‘ব্রিটিশ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’, পররাষ্ট্র দপ্তর যৌথভাবে তদন্ত করে। যৌথ তদন্তে যে পাঁচটি অভিযোগ ছিল সেগুলোর প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর। প্রাথমিক যে প্রমাণ পাওয়া গেছে তা যে সঠিক নয় তা প্রমাণ করার জন্য তারেক জিয়াকে ৯০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই ৯০ দিনের মধ্যে তারেক জিয়া অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করতে না পারেন তাহলে রাজনৈতিক আশ্রয়ের সুযোগ বাতিল করা হবে। সেক্ষেত্রে তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে বলে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যে পাঁচটি অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে সেগুলো হলো-
১. ২১ আগস্ট, ২০০৪ এ গ্রেনেড হামলার সঙ্গে তারেক জিয়া যুক্ত ছিলেন। এ হামলার জন্য তারেক কিছু পাকিস্তানভিত্তিক উগ্র জঙ্গি সংগঠনের সহায়তা নিয়েছিলেন। তাঁদের কাছ থেকে অস্ত্র পেয়েছিলেন।
২. দশ ট্রাক অস্ত্র ভারতের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠনের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করে পৌঁছে দেয়ার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন তারেক জিয়া। তারেকের সম্মতিতেই এই ঘটনাটি ঘটেছিল।
৩. ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে তারেক জিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। দাউদ ইব্রাহিমের একাধিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে তারেক জিয়ার শেয়ার রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে।
৪. তারেক জিয়া যুক্তরাজ্যে আসার পর সৌদিভিত্তিক একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং এদের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশে সহিংসতা ও সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্য অর্থায়ন করেছেন বলে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।
৫. সর্বশেষ তারেক জিয়ার লন্ডনে ক্রিয়াশীল অনেকগুলো জঙ্গি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। তাঁদের সাথে তারেক জিয়া নিয়মিত বৈঠক করেন।
এই অভিযোগগুলোর মধ্যে প্রথমটির ব্যাপারে বাংলাদেশের আদালতে রায় হয়েছে। আদালতের রায়ের কপি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ সরকারের কাছে দেয়া হয়েছে। সেই রায়টি তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছে যে, ২০০৪ সালে পাকিস্তানি উগ্র বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তারেক জিয়ার যোগাযোগের তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অভিযোগের ব্যাপারে ভারতের কাছ থেকে একাধিক তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। অন্য অভিযোগগুলোর ব্যাপারে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড, ব্রিটিশ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও পররাষ্ট্র দপ্তর যৌথ তদন্তে প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে। এর প্রেক্ষিতে, এই সমস্ত তথ্য প্রমাণের পর তারেক জিয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য তারেক জিয়াকে ৯০ দিন সময় দেয়া হয়েছে। এই আত্মপক্ষ সমর্থনে তারেক জিয়াকে দালিলিক এবং উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ হাজির করতে হবে। এর আগে যখন অভিযোগ উপস্থাপিত হয়েছিল তখন অভিযোগগুলো সত্য কিনা তা তারেক জিয়াকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তখন অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন তারেক জিয়ার আইনজীবী। তিনি বলেছিলেন, অভিযোগগুলো অসত্য ও মিথ্যা। এরপর বৃটিশ সরকারের আইন অনুযায়ী অনুসন্ধান চালানো হয় এবং এগুলো প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। এর প্রেক্ষিতে তারেক জিয়াকে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে সুনির্দিষ্ট ও দালিলিকভাবে অভিযোগ খণ্ডনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল ১৫ মার্চ এ নির্দেশ জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ আগামী ১৫ জুনের মধ্যে যদি তারেক জিয়া সন্তোষজনক জবাব না দিতে পারেন তাহলে তার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বাতিল করে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এই অভিযোগ এখন তথ্য উপাত্ত দিয়ে খণ্ডন করা তার জন্য অসম্ভব ব্যাপার। কাজেই তারেক জিয়ার দেশে ফেরা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।