নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০১৯
নব নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। বিএনপি এবং ভারতীয় দূতাবাসের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানাচ্ছে, রিভা বাংলাদেশের দায়িত্ব গ্রহণের পর বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে কথা বলেন। যাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রত্যেককেই ৫ দফা প্রস্তাব দিয়েছে রিভা গাঙ্গুলি। এই প্রস্তাব ভারতের পক্ষ থেকেই বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিএনপিকে যে প্রস্তাবগুলো বাংলাদেশে ভারতের নবনিযুক্ত হাইকমিশনার দিয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে:
১. বিএনপিকে অবিলম্বে শপথ নিয়ে সংসদ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা। তাদের কন্ঠস্বর যত কমই হোক না কেন, সংসদকেই সরকারের সমলোচনার মূল কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা।
২. বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তন করে পরিবারতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে বিএনপিকে সত্যিকার একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে উন্মুক্ত করা।
৩. জামাতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কচ্ছেদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া। স্বাধীনতা বিরোধী, মৌলবাদী সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সঙ্গে যেন বিএনপি কোন সম্পর্ক না রাখে তার নিশ্চয়তা প্রধান করা।
৪. বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে বিএনপির কার্যক্রম থেকে অবসরে পাঠানো এবং বিএনপির সকল ধরণের কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া।
৫. আপাতত আন্দোলন-সংগ্রাম না করে বিএনপি যেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক কর্মকান্ড এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে সেটার ব্যাপারে জনগনের স্বার্থ এবং জনগনের ইস্যুতে আন্দোলন এবং কর্মসূচী যেন গ্রহণ করে, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু ছাড়া অধিকাংশ নেতৃবৃন্দই এই প্রস্তাবগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। কিন্তু মিন্টু তাদেরকে বলেছেন, তারেক জিয়া বিএনপিতে অসম্ভব জনপ্রিয়। তাকে বাদ দিয়ে বিএনপিতে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হলে সে ব্যাপারে বিএনপির সিংহভাগ জনগোষ্ঠী আপত্তি করবে। তারা এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো আরও জানায়, আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছে যে, উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া কোন নেতৃত্ব বিএনপির তৃনমূল মেনে নিবে না। এরকম চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল ওয়ান ইলেভেনের সময়। যা ওয়ান ইলেভেনে ব্যার্থ হয়েছে।
সূত্রমতে, বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়। কিন্তু ভারত যদি বাংলাদেশে একদল কেন্দ্রীক সম্পর্ক স্থাপন করে তাহলে তখন বিএনপিকে ভারত বিরোধী অবস্থান নিতেই হবে। কিন্তু এ ব্যাপারে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত কি বলেছেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, ভারত সবগুলো রাজনৈতিক দলকে সংসদে আনার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শেষ পর্যন্ত ভারত এবং মার্কিন চাপে হয়তো বিএনপিকে সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হতেই পারে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।