ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি কি পারবে আওয়ামী লীগ হতে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২১ মার্চ, ২০১৯


Thumbnail

বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত, বিভ্রান্ত এবং অন্তর্কলহে জর্জরিত একটি রাজনৈতিক দল। অনেকেই মনে করছেন বিএনপির ভাঙন এখন সময়ের ব্যাপার। নেতৃত্বশূন্যতা, নেতাদের মধ্যে পারস্পারিক বিরোধ এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা বিএনপিকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে। এ অবস্থা থেকে কি বিএনপির উত্তরণ সম্ভব? বিএনপিতে খুব কম নেতাই পাওয়া যাবে যারা আশাবাদী। তাদের আশাবাদের প্রধান কারণ হলো আওয়ামী লীগ।

৭৫’র ১৫ আগস্ট জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দিশেহারা, বিভ্রান্ত এবং নেতৃত্বহীন একটি রাজনৈতিক দল ছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত একরকম দিগ্বিদিকজ্ঞানশুন্য একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ছোটাছুটি করেছে। ১৯৮১ সালে জাতির পিতা কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল এবং সেটাও দীর্ঘ সময় লেগেছিলো। মূলত ১৯৮৬ সালের এরশাদবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্রমশ সংগঠিত হতে থাকে। তখন থেকেই আওয়ামী লীগের পুনর্জন্ম হয়।

বিএনপি মনে করছে আওয়ামী লীগ যেভাবে নির্যাতন, নিষ্পেষণের পরও সংগঠিত হয়ে গড়ে উঠেছিলো, যদি বিএনপি সঠিক নেতৃত্ব পায় এবং সঠিকভাবে গড়ে উঠতে পারে ঠিক সেরকম একটি সুযোগ বিএনপির সামনেও আছে। বিএনপি এখন মনে করছে, বিএনপিকে এখন টিকে থাকতে হলে আওয়ামী লীগের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে হবে।

১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ যখন নতুন নেতৃত্ব হিসেবে শেখ হাসিনাকে নির্বাচন করে তখন পর্যন্ত শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন, আওয়ামী লীগের কোন নেতাও ছিলেন না। জাতির পিতার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শেখ হাসিনা তার সংসার জীবন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু বিএনপির জন্য এরকম একজনকে খুঁজে পাওয়ায় এখন দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপিতে যাকে নেতৃত্বে উত্তরাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল, সেই তারেক জিয়া এতোটাই বিতর্কিত এবং অগ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন যে বিএনপির পক্ষে এখন তাকে নতুন করে নেতৃত্বের সামনে আনাটা গ্রহণযোগ্য হবে না। শেখ হাসিনা যেমন আনকোরা কিন্তু ক্লিন ইমেজের অধিকারী হয়ে দলকে সংগঠিত করেছিলেন সেরকম একজন নেতা খুঁজে পাওয়াই এখন বিএনপির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

অনেকেই মনে করেন, ৭৫’র পরে আওয়ামী লীগ কখনই ঘুরে দাঁড়াতে পারতো না যদি শেখ হাসিনা দলের নেতৃত্ব গ্রহণ না করতেন। শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের পরই আওয়ামী লীগ সংগঠিত হতে থাকে, দলের বহুধাবিভক্তি কেটে যায়। আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। আওয়ামী লীগের এই পুনরুজ্জীবন প্রক্রিয়ার চাবি ছিলেন শেখ হাসিনাই। কিন্তু বিএনপিতে শেখ হাসিনা কে হবেন?

কিন্তু তারপরও বিএনপির নেতারা বলছেন, ইতিহাস সবসময় একইভাবে পুনরাবৃত্তি হয় না। বিএনপির একটি জনসমর্থন আছে এবং দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ বিএনপিকে পছন্দ করে। বিএনপি এখন যে নিপীড়ন নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ঠিক এমনটাই গিয়েছিল ৭৫’র পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ। যদিও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করেন, বিএনপি এখন যে অবস্থায় আছে তার সঙ্গে ৭৫ পরবর্তী সময়ের আওয়ামী লীগের নির্যাতন নিপীড়নের তুলনা করা অবান্তর। কারণ ৭৫-এ আওয়ামী লীগের শুধু শীর্ষস্থানীয় নেতাদের হত্যাই করা হয়নি আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছিলো। বিভৎস কায়দায় নারকীয় নির্যাতন ও হত্যা চালিয়ে আওয়ামী লীগকে নিস্তেজ করার চেষ্টা করা হয়েছিলো। সে তুলনায় বিএনপির উপর কোন নির্যাতন নিপীড়নই হয়নি। বিএনপির যাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে সেগুলো সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই করা হয়েছে। কাজেই ’৭৫ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আজকের বিএনপির নির্যাতনের তুলনা করা হলো অর্থহীন।

দ্বিতীয় যে সমস্যা বলা হচ্ছে সেটা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠা একটি দল। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ক্রমশ বিকশিত হয়েছে। ৬৯-র গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ জনগণের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছিল। এই পুরো সময়টিতে আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র সাড়ে তিন বছর ক্ষমতায় ছিল। আওয়ামী লীগ বিরোধী দল হিসেবে রাস্তায় আন্দোলনের ক্ষেত্রেই অধিক পারঙ্গম একটি রাজনৈতিক দল।

বিএনপির জন্ম হয়েছিল ক্যান্টনমেন্টে। বিভিন্ন দল থেকে আদর্শহীন নেতাদের ভাগিয়ে এনে একটি ক্লাবের আকারে রাজনৈতিক দল করা হয়েছিল। আদর্শহীন রাজনৈতিক দল হওয়ার কারণে সংকটকালে বিএনপির নেতৃত্ব ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। দৃঢ় অবস্থান নিয়ে বিএনপি আন্দোলন বা সংগ্রাম বা নির্বাচন কোনোটিই করতে পারছে না। জনগণের চিন্তা চেতনা থেকে উৎসারিত নয়, এজন্যই বিএনপির আজকের এই অবস্থা বলে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

তবে বিএনপির কেউ কেউ মনে করেন, বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে হলেও ৮২ সাল থেকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিএনপিরও একটা পুনর্জন্ম হয়েছিল। যার ফলে বিএনপি জনগণের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছিল। তাছাড়া আওয়ামী বিরোধী একটি বিরাট জনগোষ্ঠী বিএনপিকে সমর্থন করে। কাজেই বিএনপির কোনো আদর্শ না থাকলেও কিংবা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে ভেড়ানো নেতাদের একটি দল হলেও শেষ পর্যন্ত জনসমর্থন হলো বড় কথা এবং বিএনপি একটি জনসমর্থনপুষ্ট রাজনৈতিক দল। কাজেই বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারে এবং সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ৭৫ থেকে ৮১ পর্যন্ত যে প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করেছে সেই প্রক্রিয়াগুলোই অনুসরণ করতে চায়। কিন্তু ৭৯-র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করেছিল এবং মাত্র ৩৯টি আসন পেয়ে সংসদে যোগ দিয়েছিল। বিএনপি এবার আসন পেয়েছে ছয়টি। সেই আসন নিয়ে কি বিএনপি সংসদে যোগ দিতে পারবে? ইত্যাদি বহু মিল অমিল খুঁজে দেখা যাচ্ছে যে, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দুটি ভিন্ন খাতের, ভিন্ন ধাঁচের রাজনৈতিক দল। কাজেই একটি রাজনৈতিক দল অন্য আরেকটি রাজনৈতিক দলের মতো করে উঠতে পারবে না।

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে, ইতিহাসে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি বারবার ঘটে না। সে কারণে বিএনপি আওয়ামী লীগের মতো করে আবার উদ্ভাসিত হবে এটা কতটুকু বাস্তবসম্মত সেটা ভেবে দেখার বিষয় বটে।

বাংলা ইনসাইডার/এসআর/এমআর 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০:৩০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। 

অবশ্য এসব প্রার্থীর অনেকে এটি ‘দলীয় নির্বাচন নয়’ বলে দাবি করছেন, আবার কেউ কেউ ‘জনগণ তাদের চাচ্ছে’– এমন অজুহাত দেখাচ্ছেন। এমনকি দল থেকে বহিষ্কার হতে পারেন– সেই ভয় উপেক্ষা করেই নিজেদের এ অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। আবার অনেকের দলে কোনো পদপদবিও নেই। অনেকে বহিষ্কৃত। এর পরও যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড। শিগগির এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো দলের এমন সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বাস্তবায়ন করছে দলটি। এ জন্য দফায় দফায় তৃণমূল নেতাকর্মী ছাড়াও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করেন নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতারা এই নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরেন। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ইচ্ছুকদের প্রথমে কাউন্সেলিং, নির্বাচনে না যাওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি দলের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। এর পরও যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাদের বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই উচ্চারণ করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। 

এদিকে গত সোমবার রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের বহিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলছেন, স্থানীয় জনগণের চাপে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড়া যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না তাই তারা স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করছেন। আর তাই বহিষ্কারের বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না। তবে দল তাদের ব্যাপারে নমনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন এমনটাও প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলার বিএনপির প্রার্থী বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনে না যাওয়ার। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন করব, দল যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নেবে।

বিএনপি   গণ বহিষ্কার   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় থানায় জিডি

প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ ওরফে খোকন এ জিডি করেন।

জিডিতে বলা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সাংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ২০ বছর যাবৎ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই।’ 

একপর্যায়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।’

জিডিতে শ্রমিক লীগের ওই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।’

ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না, এটা ঠিক না’

প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের। 

গতকাল সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে তার কক্ষে যান শাজাহান খান। এ সময় তার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি তো কথা শুনলেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তও মানলেন না।’

এ সময় সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তিরস্কার করেন শাজাহান খানকে।

জানা গেছে, শাজাহান খান এক পর্যায়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতির ধারাবাহিকতায় ছেলে আসিবুর রাজনীতিতে এসেছে। এ জন্যই সে প্রার্থী হয়েছে। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনের নির্বাচন না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রতিউত্তরে শাজাহান খান বলেন, অনেকেরই নিকটাত্মীয় রাজনীতিতে আছেন।

ওবায়দুল কাদের এ সময় শাজাহান খানকে বলেন, ‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না। এটা ঠিক না।’ এর জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত দেরিতে জানিয়েছেন। আগে জানালে ভালো হতো।’ তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি আমার নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন সিদ্ধান্ত কখন দেবেন, সেটা কি আমাদের জিজ্ঞাসা করে দেবেন?’

শাজাহান খানের উচ্চস্বরে কথা বলা নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিরক্ত হন ওবায়দুল কাদেরও। তিনি শাজাহান খানের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে দলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পরও আপনি সবার সামনে এসব অপ্রিয় কথা কেন বলছেন?

এ সময় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কার্যনির্বাহী সংসদের দুই সদস্য আনিসুর রহমান ও সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মশিউর রহমান হুমায়ুন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী লোটন, বলরাম পোদ্দার এবং শাহজাদা মহিউদ্দিন।

ওবায়দুল কাদের   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই চামেলীকে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
 
এর আগে ওই নারী কাউন্সিলরের একটি নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কয়েকদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ঘুরপাক খায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আওয়ামী লীগ   ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে আওয়ামী লীগ?

প্রকাশ: ০৬:২৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের অতীতে নেয়া কিছু সিদ্ধান্ত বা ঘটনা এর জন্য দায়ী হতে পারে। উদাহরণ দিয়ে কেউ কেউ বলছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আবার তাকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। জাহাঙ্গীর আলমকে প্রথমবার বহিষ্কার করার পর যখন দলে ফিরিয়ে আনা হয় পরে দ্বিতীয়বার তিনি আবার একই ভুল করলেও তাকে সাধারণ ক্ষমা দিয়ে দলে ফেরত আনা হয়। বিষয়টি সে সময় আওয়ামী লীগের অনেক তৃণমূল নেতাকর্মীই ভালো ভাবে নেয়নি। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মেয়র জাহাঙ্গীরের মতো একাধিক ঘটনা অতীতে আওয়ামী লীগে ঘটেছে। ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ধারণা তৈরি হয়েছে যে, প্রথমে দল তাদেরকে বহিষ্কার করলেও পরে তারা সাধারণ ক্ষমা পেয়ে আবার দলে ফেরত আসার সুযোগ পাবেন। আর সে কারণেই দলের নির্দেশনা থাকলেও সেটা অমান্য করে তারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাছাড়া স্থানীয় রাজনীতিও নিয়ন্ত্রণ করে এমপিরা। সেখানে এমপিরাই যখন তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের মনোনয়ন দিচ্ছেন তাহলে তো কোন কথাই নাই। অতীতে আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিলে দলের চেইন অব কমান্ড এভাবে ভেঙে পড়ত না। আওয়ামী লীগকে এখন ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, দলীয় নির্দেশনার পরও যেসব এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজনরা নিজেদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি, তাদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সময় কিন্তু এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, দলীয় নির্দেশনা মেনে তারা নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন। তবে কেউ যদি শেষ পর্যন্ত দলীয় নির্দেশনা না মানেন তাহলে অবশ্যই দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দলের নিয়মনীতি ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের (এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়দের) বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটাই আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়টি থেকে অনুপ্রাণিত হন তাহলে তিনি ভুল করছেন। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। 

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন