নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৬ মার্চ, ২০১৯
দ্বিতীয়বারের মতো কারাগারে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। কারাগারের নিয়মানুযায়ী তাকে আজ উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়েছে। তিনি আজ খেয়েছেন পোলাও, মুরগির রোস্ট ও মাংস। তবে ইদানিং তার খাওয়ার রুচি অনেকটাই কমে গেছে। তিনি সামান্যই খাচ্ছেন। কারাগারে আজ তার সারাদিন কেটেছে টেলিভিশন দেখে। আর গৃহপরিচারিকা ফাতেমাসহ কারারক্ষীদের সঙ্গে কথোপকথন করে। টেলিভিশনে আজ সারাদিনই ছিলো স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের বিভিন্ন কর্মসূচি।
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাভার স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর তিনি ছুটে যান ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। সেখান থেকে তিনি যান বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। সেখানে তিনি শিশু কিশোরদের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সালাম গ্রহণ করেন। বিকেলে প্রধানমন্ত্রী ডাকটিকিট উন্মোচন করেন। তারপর তিনি রাষ্ট্রপতির দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ছুটে যান বঙ্গভবনে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই এনার্জি ও স্ট্যামিনা দেখে অবাক হয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। টেলিভিশন দেখতে দেখতে খালেদা জিয়ার আনমনেই বেরিয়ে এসেছে এতো পরিশ্রম করে কীভাবে? কারাগারের একাধিক সূত্র ও কারারক্ষীদের সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বেগম জিয়া যখন টেলিভিশন দেখছিলেন এবং বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করছিলেন, তখন কারাগারের একজন চিকিৎসক তার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। চিকিৎসক সূত্রে জানা গেছে, বেগম জিয়া সুস্থ আছেন। তার প্রেশার ও অন্যান্য স্বাস্থ্যগত নির্ণায়ক সুন্দরই আছে। তবে তিনি দীর্ঘদিন বন্দী থাকার কারণে বিষণ্নতায় ভুগছেন এবং হতাশায় নানারকম কথাবার্তা বলছেন।
একাধিক সূত্র বলছে, আজ সারাদিনই তিনি তার গ্রেপ্তার ও কারাবরণের জন্য বিএনপির নেতৃ্বৃন্দকে দুষেছেন। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা যেভাবে দলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছেন, যেভাবে অনুগত কর্মী তৈরি করতে পেরেছেন সেটা তিনি পারেননি। সে ব্যর্থতার মাশুল দিতে হচ্ছে তাকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলে, বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে এটাও বলেছেন যে, ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর তার অনেকগুলো ভুল ছিল। সেই ভুলগুলো জানা সত্ত্বেও তিনি শুধরাতে পারেননি। এখন বিএনপি যে পথে চলছে তাতে তিনি হতাশ।
কারাগারের একাধিক সূত্র বলছে, আজ সারাদিন বেগম জিয়ার কারাগারে কেটেছে স্মৃতিচারণ, তার ভুলগুলোর কথা স্মরণ করে এবং তার কী করার উচিৎ ছিলো সেটা মনে করেই। তিনি তার মুক্তির আশা একরকম ছেড়েই দিয়েছেন। তিনি মনে করছেন, চটজলদি তার কোন মুক্তি হবে না। কারাগারেই তার বাকি দিনগুলো কাটবে।
তবে সরকারের সঙ্গে কোন আলোচনা বা তার মু্ক্তির জন্য তিনি কোন উদ্যোগ নেবেন কিনা সে ব্যাপারে অবশ্য তিনি কাউকে কিছু বলেননি। বেগম খালেদা জিয়া এমনিতেই কথা বলেন কম। তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করা হলে তার মর্জি হলে তিনি উত্তর দেন। মাঝে মাঝে বিড়বিড় করে নিজেই নিজের কথা বলেন। কারাগারে যারা তার সঙ্গে বিভিন্ন সময় কাটায় তারা কোন প্রশ্ন করলে তার উত্তর পান না। যখন তিনি নিজে স্বপ্রণোদিত হয়ে কিছু বলেন তখনই তার চিন্তাভাবনা এবং হতাশা-দুঃখগুলো জানা যায়। কারাগারে তার আজ দিনটি কেটেছে পুরোপুরি হতাশা এবং স্মৃতিচারণ করে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।