নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০২ এপ্রিল, ২০১৯
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হাইব্রীডদের পরাজয় ঘটেছে। নৌকা প্রতীক নিয়েও আওয়ামী লীগে উড়ে এসে জুড়ে বসারা সুবিধা করতে পারেনি। আওয়ামী লীগের জন্য এটা একটা বিরাট সুখবর। চারধাপে এপর্যন্ত ৪৫৫টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরমধ্যে ১১১টি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য দেখা যাচ্ছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের মধ্যে ৩৭ জন হাইব্রীড। যারা ২০০৮ এর পর আওয়ামী লীগে যোগদিয়েছে। এদের মধ্যে ১৭ জন বিএনপি এবং জামাত থেকে আওয়ামী লীগে এসেছে বলে জানা গেছে। বাকী যে ৩৪৪টি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ভোট হয়েছে তার ১৩৪ টিতেই নৌকা প্রতীক পরাজিত হয়েছে। এরমধ্যে ১২৭ জনই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। এদের প্রায় প্রত্যেকে দীর্ঘদিনের ত্যাগী, পরীক্ষিত। এদের মধ্যে অন্তত ৬২ জন ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামাত জোট আমলে নির্যাতিত। দলের মন্ত্রী-এমপিদের কৃপা ধন্য না হতে পেরেই এরা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে ময়মনসিংহ, খুলনা, টাঙ্গাইলে আওয়ামী প্রার্থীদের গণ ভরাডুবি ঘটেছে। যে ২১০ জন নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ১৫০ জন ২০০৮ এর আগে আওয়ামী লীগে আসা, তারা দলের ত্যাগী এবং পরীক্ষিত কর্মী। হিসেবে দেখা গেছে, ৭টি ছাড়া সব উপজেলয় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরাই বিজয়ী হয়েছে। ৪৪৮টি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২০০৮ এর পর আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া (প্রচলিত ভাবে যাদের সুবিধাবাদী বা হাইব্রীড বলা হয়) প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন মাত্র ১১৯টিতে। ৩২৯টিতে বিজয়ী হয়েছে আসল আওয়ামী লীগ, যারা অন্যদল থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেয় নি। এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ উপজেলায় বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ আওয়ামী লীগের সভাপতি দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদককে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বিদ্রোহীদের মধ্যে থেকে যারা বিজয়ী হয়েছেন, তাদের কাজ করার সুযোগ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানা গেছে। সূত্র মতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। কাজেই তাদের কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যেকোন ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা গোপালগঞ্জের ৫টি উপজেলার নির্বাচনের মাধ্যমেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ঐ পাঁচ উপজেলায় কাউকেই নৌকা প্রতীক দেয়া হয়নি। স্বতন্তভাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। তবে, আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করছেন, উপজেলা নির্বাচনে দলে বিভেদ তৈরী হয়নি বরং সুবিধাবাদী, ভুইফোঁড় এবং মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব বলয়ের লোকজন কোনঠাসা হয়ে পরেছে। বিভিন্ন স্থানে দলের কর্মীরা তৃণমুলের পরীক্ষিত এবং দুর্দিনের সঙ্গী আওয়ামী লীগ নেতাদের পক্ষে প্রচারণা করেছে। ময়মনসিংহে কর্মীরা চাঁদা তুলে দলের নিবেদিত প্রাণ এক নেতাকে বিজয়ী করেছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, আওয়ামী লীগের শক্তি আরেকবার প্রমাণিত হলো। সাধারণ কর্মীরাই যে আওয়ামী লীগের প্রাণ তা উপজেলা নির্বাচন প্রমাণ করে দিলো। একারণেই, আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা মনে করছে, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অর্জন অনেক।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।