নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৩ এপ্রিল, ২০১৯
আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরীর দুই কমিটিই ব্যর্থ হয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে আওয়ামী লীগ দুর্বল হয়ে পড়েছে। আগামী কাউন্সিলের আগেই ঢাকা মহানগরীকে ঢেলে সাজাতে হবে- এরকম মন্তব্য উঠে এসেছে ঢাকা মহানগর নিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক রিপোর্টে। আগামী শুক্রবার এই সাংগঠনিক রিপোর্ট দলের সভাপতির কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।
সাংগঠনিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কর্মীরাই ভোট দিতে যায়নি। সাধারণ ভোটারদেরও উদ্বুদ্ধ করতে পারেনি। শুধু এই নির্বাচন নয় যেকোনো সাংগঠনিক কাজেই দুই সিটি কমিটি সফল হতে পারেনি বলেই মনে করছে কেন্দ্রের সাংগঠনিক কমিটি। উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীর সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কাউন্সিলের চার বছর পর ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগর এবং ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। ১১ সেপ্টেম্বর দুই মহানগরীর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। দক্ষিণে আবুল হাসনাত সভাপতি এবং শাহে আলম মুরাদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। অন্যদিকে উত্তরে এ. কে. এম রহমত উল্লাহ্ সভাপতি এবং সাদেক খানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কিন্তু গত আড়াই বছরে দলীয় কোন্দল, গ্রুপিং ছাড়া দুই মহানগরী কমিটি উল্লেখযোগ্য কিছুই করতে পারেনি বলেই মনে করছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
ঢাকা দক্ষিণের সঙ্গে মেয়র সাঈদ খোকনের প্রকাশ্য বিরোধ ছিল। দলের সাধারণ সম্পাদকের মধ্যস্থতায় এই বিরোধ প্রকাশ্যে বন্ধ হলেও গোপনে এখনও রয়ে গেছে। দক্ষিণের মেয়র আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার কাছে অভিযোগ করেছেন যে, মহানগর আওয়ামী লীগের কাছ থেকে তিনি কোন সহযোগিতা পাননি। দক্ষিনের সভাপতি নিষ্ক্রিয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা যে যার মতো ব্যবসা বাণিজ্য এবং নানা ব্যাক্তিগত কাজে ব্যস্ত।
ঢাকা দক্ষিনের চেয়ে ঢাকা উত্তরের অবস্থা কিছুটা ভালো। কিন্তু এখানেও দলীয় কোন্দল চোখে পড়ার মতো। মহানগরীর সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের সম্পর্ক ভালো না। মোহাম্মদপুর আসনে নানককে হারিয়ে সাদেক খান মনোনয়ন পান। এখন এমপি হয়ে সাদেক খান, নানকের লোকজনকে হেনস্থা করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সাদেক খান কর্মী বান্ধব। কর্মীদের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ আছে। তার নিজস্ব টীম দলীয় কর্মসূচীতে শো- ডাউন করে। কিন্তু সাদেক খানের কর্মব্যাপ্তি শুধু মোহাম্মদপুর এবং মীরপুর এলাকাতেই সীমাবদ্ধ। গুলশান- বনানী-উত্তরায় তার প্রভাব নেই। আর সভাপতি রহমত উল্লাহ দলকে সময় দেন না বলেই অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, ঢাকার জন্য দরকার ক্যারিশম্যাটিক নেতা, যিনি দলকে সংগঠিত করতে পারবেন। এখন আওয়ামী লীগ ঢাকায় কর্মসূচী করতে গেলে নির্ভর করে যুবলীগ, ছাত্রলীগের উপর। একাধিক সূত্র বলছে, এই পরিস্থিতিতে দুটো কমিটিই ভেঙ্গে দেয়া হতে পারে। তবে অন্য সূত্র বলছে, সেটা হয়তো করা হবে না খুব দ্রুত। ঈদের পরপরই কাউন্সিল করেই ঢাকায় আনা হবে নতুন নেতৃত্ব।
বাংলা ইনসাইডার/এসআর/এমআরইচ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।