নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৬ এপ্রিল, ২০১৯
কয়েকটি খুঁটিনাটি বিষয়ে সমঝোতার অভাবে আটকে আছে বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোল। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আজ বলছেন ‘সুনির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে আবেদন করলে বেগম জিয়ার প্যারোলের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবে।’ কিন্তু সরকারের সংগে সমঝোতায় অংশ নেয়া একজন বিএনপি নেতা বলেছেন ‘সমঝোতা চুড়ান্ত না করে, প্যরোলের আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিলে তা হবে অর্থহীন।’
সরকার এবং বিএনপির একাধিক ব্যক্তির সংগে কথা বলে জানা গেছে, কয়েকটি বিষয়ের জন্য খালেদার প্যারোলের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত আটকে আছে। এগুলোর মধ্যে হলো;
১. সরকার চাইছে বিএনপি অনতিবিলম্বে সংসদে আসুক। শপথ গ্রহণ করে আগামী ১৮ এপ্রিল সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে তারা অংশগ্রহন করলেই বেগম জিয়ার প্যারোল বিবেচনা করা হবে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, আগে বেগম জিয়ার প্যারোল বিবেচনা করা হবে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, আগে বেগম জিয়ার প্যারোল মঞ্জুর করা হোক, তারপর আমরা সংসদে যাবার বিষয়টি চুড়ান্ত করবো। বেগম জিয়ার মুক্তির আগে বিএনপির নির্বাচিতরা শপথ নিলে, দলের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন বিএনপির অনেক নেতা।
২. সরকার চাইছে, তারেক জিয়া দেশে ফিরুক অথবা বিএনপির পদ ছাড়–ক। সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্র গুলো বলছে, বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোল নিস্পত্তির ক্ষেত্রে এটাই তাদের প্রধান শর্ত। অন্যদিকে বিএনপি প্রথমে এই প্রসংগটি শর্ত তালিকা থেকে বাদ দেয়ার অনুরোধ করেছিল। বিএনপির নেতারা বলেছিল যে, তারেক জিয়া তাদের নিয়ন্ত্রনে নেই। এখন তারা খানিকটা সরে এসে বলেছে তারেক জিয়া পদে থাকবেন কিন্তু তিনি নিস্ক্রিয় থাকবেন। সরকার এই প্রস্তাব এখনো মেনে নিতে পারেনি।
৩. বেগম জিয়ার প্যারোলের অন্যতম শর্ত যেটি সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে সেটি হলো, বেগম জিয়ার প্যারোলে মুক্তি শুধু দেশের জন্য প্রযোজ্য হবে। প্যারোলে মুক্ত হয়ে তিনি দেশে তার পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারবেন। প্রথমে বিএনপি এই প্রস্তাবে রাজী ছিলো। কিন্তু এখন জিয়া পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে তাকে বিদেশেও নেয়া যেতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্যারোলে মুক্তি হয়ে তিনি যেন দেশের বাইরেও যেতে পারেন, তারও অনুমতি থাকা প্রয়োজন। বেগম জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তার হাটুর চিকিৎসা হয়েছে সৌদী আরব এবং লন্ডনে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তার বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে একবার প্যারোল নিয়ে বিদেশে গেলে তিনি আর আসবেন না, সেক্ষেত্রে তার দণ্ড কার্যকর করা এবং চলমান মামলা গুলো নিস্পত্তি করা কঠিন হয়ে পরবে।
অবশ্য এরপরও সরকার এবং বিএনপির নেতারা বলছেন, পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো। দুপক্ষই এখন ইতিবাচক। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, বেগম জিয়া এখন অন্যযেকোন সময়ের চেয়ে বেশী সমঝোতার পক্ষে। তিনি এখন প্যারোলে মুক্তি ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছেন না। শেষ পর্যন্ত খুব শিগগিরই উভয় পক্ষের সমঝোতা হবে বলে আশা করছেন বিএনপির নেতারা।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।