নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৮ এপ্রিল, ২০১৯
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে প্রায় ৮ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। অনেক প্রভাবশালী নেতা এবং মন্ত্রীর বিরুদ্ধেও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, ‘এই অভিযোগগুলো যাচাই বাছাই করা হবে। যে অভিযোগগুলোর ভিত্তি আছে এবং অভিযোগের ন্যূনতম সত্যতা আছে সেগুলোই তদন্ত হবে।’ আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, দলের ৮ জন সাংগঠনিক সম্পাদক অভিযোগগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন, তারপর সংক্ষিপ্ত একটি তালিকা প্রণয়ন করে দলের সভাপতির সিদ্ধান্তের জন্য উপস্থাপন করবেন।
মূলত, উপজেলা নির্বাচনে যারা নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে বা কাজ করেছে, তাদের সম্পর্কে তথ্য জানার জন্যই কেন্দ্র থেকে অভিযোগ দাখিল করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু দেশের উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেসব অভিযোগ পাঠিয়েছেন তাতে বিষয়টি শুধু নৌকা বিরোধিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। বরং এই অভিযোগে মনোনয়ন সঠিকভাবে না দেওয়া, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিরা মনোনয়নে কীভাবে প্রভাব বিস্তার করেছেন- এসবের ফিরিস্তিও দেওয়া হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে যারা কাজ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগই পর্যালোচনা করা হবে।’ আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, এরকম অভিযোগের সংখ্যাও দেড় হাজারের উপর। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে ৪৫৫ টি উপজেলার নির্বাচন। এর মধ্যে ১১১টি উপজেলায় চেয়ারম্যানরা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। ৩৪৪টি উপজেলায় ভোট হয়েছে। আর প্রায় সব গুলোতেই আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। ৩৪৪ টি উপজেলা থেকেই অভিযোগ এসেছে। প্রতিটি উপজেলা থেকে নূন্যতম ৭ টি সর্বোচ্চ ২০০ অভিযোগও এসেছে। অভিযোগ গুরুত্বপূর্ণ প্রমান করতে একই রকম অভিযোগ একাধিক ব্যক্তি পৃথক ভাবে করেছেন। আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেছেন, যে ১৩৪টি উপজেলায় আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন, তার সবগুলোতেই এমপিদের বিরুদ্ধে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ১৩৪ উপজেলায় ৫৪ জন এমপি রয়েছেন। শুধু এমপি নয়, এই উপজেলায় ৫ জন মন্ত্রী এবং ৩ জন প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু যেখানে নৌকা পরাজিত হয়েছে সেখানেই নয়, যেখানে নৌকা বিজয়ী হয়েছে, সেখানেও অনেক মন্ত্রী এবং এমপি দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করছেন বলে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে অভিযোগ এসেছে। এরকম অভিযোগে অভিযুক্ত আরো ৮ এমপি এবং একজন মন্ত্রী ও একজন উপমন্ত্রী। তবে, আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলেছেন, যেখানে নৌকা প্রতীক পরাজিত হয়েছে, সেখানেই শুধু অভিযোগ তদন্ত হবে। দলের সভাপতি, অভিযোগ পেলেই ঢালাও ভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ না দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, আমরা আগে অভিযোগ গুলোর ব্যাপারে প্রাথমিক তদন্ত করবো, তারপর কারণ দর্শানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবো।’
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।