নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৮ এপ্রিল, ২০১৯
সরকারের কাছে তথ্য আছে, নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে বিএনপি। আন্দোলন শুরু করার প্রস্তুতিও নিচ্ছে। সরকারের একজন নীতি নির্ধারক বলেছেন ‘শুধু খালেদার মুক্তি নয়, দ্রব্যমূল্য, নিরাপদ সড়কসহ নানা সামাজিক ইস্যুকে উস্কে দেয়ার পরিকল্পনাসহ সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম আন্দোলনের পরিকল্পনা করছে বিএনপি।’ আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা বলেছেন ‘বিএনপির সঙ্গে কথা এগুচ্ছিলো। তারা বলেছিল, খালেদা জিয়া প্যারোল চাইবেন, প্যারোল দেওয়া হলে বিএনপির নির্বাচিত ছয় সংসদ সদস্য শপথ নেবেন। কিন্তু বিএনপি এখন আর সমঝোতায় যেতে চাইছে না। বরং তারা সরকারের বিরুদ্ধে জুনের মধ্যে সর্বাত্মক আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু করেছে।’
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এর পাল্টা হিসেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও বেশ কিছু ব্যবস্থা এবং পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়েছে। আওয়ামী লীগ মনে করছে, এই পদক্ষেপ নেওয়া হলে বিএনপি আর মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করছে, তার মধ্যে রয়েছে:
১. আমলাগুলো দ্রুত সচল করা: বিএনপির সব নেতার বিরুদ্ধেই মামলা আছে। বেশীর ভাগ মামলাই অগ্নি সংযোগ এবং সন্ত্রাসী তৎপরতার। অনেকের বিরুদ্ধে আছে দুর্নীতির মামলাও। গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের বৈঠকে, সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন,‘বিএনপি এবং জামাতের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, তার একটিও ভিত্তিহীন নয়।’ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছেন, মামলা গুলোর দ্রুত বিচার শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এই মামলাগুলো সচল হলেই, বিএনপি চুপসে যাবে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ।
২. সক্রিয় হচ্ছে ১৪ দল: ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর আওয়ামী লীগ একলা চলো নীতিতে এগুলোর সিদ্ধান্ত নেয়। মন্ত্রিসভায় নেওয়া হয়নি ১৪ দলের কাউকে। কিন্তু বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলের সাম্প্রতিক তৎপরতার প্রেক্ষিতে আবার ১৪ দলকে সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই খুব শিগগিরই ১৪ দলের সঙ্গে বসতে বসতে পারেন বলে জানা গেছে।
৩. সিনিয়র নেতাদের ডাক পড়ছে: এবার নতুন মন্ত্রিসভায় দলের সব সিনিয়র নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছিল। তারা রীতিমতো হাত পা গুটিয়ে গড়ে বসেছিলেন। এখন বিরোধিদলের তৎপরতায় আবার সিনিয়রদের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। সিনিয়রদের কাজে লাগাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের কর্মসূচিতে সিনিয়রদের দাওয়াত দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
৪. সারাদেশে সাংগঠনিক সফর: দলকে চাঙ্গা করতে সারাদেশে সাংগঠনিক সফরের কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মাধ্যমে দলকে গোছানো হবে এবং বিরোধী দলের ব্যাপারে দলকে প্রস্তুতও করা হবে।
তবে, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, ‘আমি মনে করি না বিএনপি বা বিরোধীদল কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে। আন্দোলনের ইস্যু কি? তাছাড়া দেশের জনগণ এখন সুখে আছে, শান্তিতে আছে। বিএনপি এবং জামাত দেশে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে জনগণই তা প্রতিহত করবে।’ তিনি বলেন, দেশের পরিস্থিতি সুন্দর এবং স্বাভাবিক।’
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।