নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৯ এপ্রিল, ২০১৯
দিনের বেলায় আন্দোলনের হুমকি আর রাতের বেলা সরকারের সঙ্গে দেনদরবার করছেন বিএনপির নেতারা। তবে দেনদরবারের বিষয় দলীয় নয়, একান্ত ব্যক্তিগত স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়। নিজেদের মামলা, ব্যবসা ইত্যাদি নিয়ে সরকারের কাছে ধর্না দিচ্ছেন বিএনপির প্রভাবশালী নেতারা। গতরাতে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক শেষ মধ্যরাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেখা করেন সরকারে একজন প্রভাবশালীর সঙ্গে। তার মামলাগুলো বাতিলের তদবির করতেই তিনি সরকারের ঐ প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি আশ্বাস দেন যে, আন্দোলন-টান্দোলন কিছু হবে না। শিগগিরই তারা পার্লামেন্টে যাবেন। দুর্নীতির মামলায় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন। তার দুটি দুর্নীতির মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে। সরকারের সঙ্গে দেনদরবার করেই তিনি এখনও মামলা দুটিকে ঠেকিয়ে রেখেছেন। সরকারের একজন প্রতিনিধিকে তিনি বলেছেন, ‘তারেকের ব্যাপারে চাপ দেন। আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হলেই সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে।’ সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে খন্দকার মোশারফ হোসেনের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। মির্জা আব্বাসের ‘ঢাকা ব্যাংক’ প্রায় হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিলো। সরকারের কাছে একরকম মিনতি করেই ব্যাংকের মালিকানা রেখেছেন। তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস এখন মহিলা দলের সভাপতি হয়েছেন। সরকারকে আশ্বস্ত করেছেন যে, ‘কোন বড় আন্দোলন তিনি হতে দেবেন না।’ বিএনপিতে তার প্রভাবের কথাও তিনি সরকারকে মনে করিয়ে দেন। বিএনপির ক্যাশিয়ার বলে পরিচিত আবদুল আওয়াল মিন্টু তো সরকারের একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টার আত্মীয়। সেই সুবাদে অগ্নি সন্ত্রাসের জন্য বিপুল অর্থ যোগানের অভিযোগের পরও, তাকে একদিনের জন্যও জেলে যেতে হয়নি। সরকারকে বিএনপির বিশেষ করে তারেক জিয়ার গোপন তথ্য সরবরাহ করেন বলে অভিযোগ আছে মিন্টুর বিরুদ্ধে। এজন্য বিএনপিতে তাকে ডাকা হয় ‘ডাবল এজেন্ট’। আবার বিএনপির কেউ গ্রেপ্তার হলে বা ঝামেলা পড়লেই মিন্টুর কাছে যায়। মিন্টুর সঙ্গে সরকারের প্রভাবশালীদের যোগাযোগ আছে, এটা বিএনপির সবাই জানে। এরকম অনেক প্রভাবশালী নেতাই আছেন, যারা সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে রাজনীতি করছেন। বাইরে তারা সরকারকে গালাগালি করলেও গোপনে তাদের গলাগলি সম্পর্ক। হেভিওয়েট নেতারা মামলা থেকে বাঁচতে কিংবা ব্যবসার জন্য তদবির করলেও নীচের অনেক বিএনপির নেতারা সরকারের বিভিন্ন জনের কাছে আর্থিক সহায়তা দেন বলেও খবর পাওয়া যায়। কদিন আগে বিএনপির এক নেতার হাসপাতালের বিল মিটিয়েছেন আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা। আর এসব কারণেই, বিএনপিকে কোন থ্রেট মনে করছে না আওয়ামী লীগ। আর এজন্যই, বিএনপি সরকারের কোন মাথাব্যথার কারণ নয়। বরং আওয়ামী লীগ মনে করছে, বিএনপিকে রূপান্তর করার সময় এসেছে। বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের থেকে আলাদা করতে হবে। তারা যেন জাতির পিতাকে স্বীকৃতি দেয় তার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সর্বোপরি বিএনপিকে জিয়া পরিবার মুক্ত করতে হবে।
আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা বলেছেন, ‘বিএনপি এখন সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে। দেখুন, অপেক্ষা করুন, বিএনপিতেও জাতীয় পার্টির মতো কুরুক্ষেত্র শুরু হবে।’ অবশ্য সরকারের সঙ্গে গোপন আঁতাতের কথা অস্বীকার করছে না আওয়ামী লীগ। তবে তারা বলছে, এটা স্রেফ কৌশল।’
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।