নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৩ এপ্রিল, ২০১৯
রাজনীতিতে শেখ হাসিনা অনেককেই সুযোগ দেন। হঠাৎ করেই একজনকে এমন কিছু দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি যা হয়তো তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তাদের ‘সৌভাগ্য’ তারা ধরে রাখতে পারেন না। হারিয়ে যান। ২০০১ সালে সাবের হোসেন চৌধুরীকে রাজনৈতিক সচিব করে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু সেই বিশ্বাসের প্রতিদান তিনি কতটা দিতে পেরেছিলেন সে প্রশ্ন তো উঠতেই পারে। ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার রাজনৈতিক উপদেষ্টা করেন ডা: এস.এ মালেককে। কিন্তু তিনিও যেন হঠাৎ ধুমকেতুর মতোই ক্ষনস্থায়ী ছিলেন।
এবার মন্ত্রিসভাতেও শেখ হাসিনা চমকে দেয়ার মতো কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমন কয়েকজনকে হঠাৎ এমন গুরু দায়িত্ব দিয়েছেন যে, তারা এই দায়িত্ব পেয়ে নিজেরাও ‘অবাক’ হয়েছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা যে আস্থা প্রধানমন্ত্রী তাদের উপর রেখেছেন, তারা কি সেই আস্থার প্রতিদান দিতে পারবেন? এবারই প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এডভোকেট শ.ম. রেজাউল করিম। এবারই তিনি পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন। এ যেন এলাম, দেখলাম, জয় করলাম এর মতো ঘটনা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর দায়িত্ব পান সাধারণত দলের সাধারণ সম্পাদক। এই প্রথা প্রথম ভাঙ্গেন শেখ হাসিনাই। দলের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সরিয়ে গত মেয়াদে তিনি গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনকে। এবার সম্ভবত মন্ত্রিসভার সবচেয়ে বড় চমক দেখান তাজুল ইসলামকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে। যিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা তো ননই, রাজনীতিতেও খুব বেশী সক্রিয় নন। অথচ এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে সারা দেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সংগে সারাক্ষন যোগাযোগ রাখতে হয়। এই গুরু দায়িত্ব তিনি কি পালন করতে পারবেন? এবার বন পরিবেশ মন্ত্রী হিসেবে যখন মো: শাহাব উদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়, তখন অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন, তিনি কে? স্থানীয় রাজনীতিতে দীর্ঘদিন সক্রিয় থাকলেও খাদ্য মন্ত্রী হিসেবে সাধন চন্দ্র মজুমদারের নিয়োগ ছিলো যেন মেঘ না চাইতেই জলের মতো। মন্ত্রিসভার এরকম আরো কয়েকজন আছেন, যাদের প্রাপ্তিতে তারাই বিস্ময়ে হতবাক। দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন কাউকে দেন, তখন একেবারে উজাড় করে দেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যারা পান তারা প্রাপ্তির বোঝা বইতে পারেন না। হঠাৎ করেই বেসামাল হয়ে পরেন। গত মেয়াদে একজন নারী প্রতিমন্ত্রী যা করেছেন তা তো রীতিমতো হাসির খোরাক জুড়িয়েছিল। এরপর তার মন্ত্রণালয় বদলে দিলে তিনি কেঁদেছিলেন। এবার তিনি কোথাও নেই। ২০০৮ মেয়াদে একজনকে দুই মন্ত্রণালয় দেয়া হয়েছিল। দুই মন্ত্রণালয়ের ভার বইতে না পেরে তিনি এখন সম্পূর্ণ ভারমুক্ত। প্রশ্ন উঠলো, চমক জাগানিয়া দায়িত্ব প্রাপ্তরা কেন দায়িত্ব পেয়ে বেসামাল হয়ে যান? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটার প্রথম কারণ হলো প্রস্তুতির অভাব। একজন মন্ত্রী বা এমপির কোন দায়িত্ব গ্রহণের আগে প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। শুধু মন্ত্রীত্ব নয়, যেকোন কাজেই একটা প্রস্তুতি দরকার হয়। একজন সচিব একদিনে হয় না। ধাপে ধাপে ঐ পদের জন্য তাকে যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। তাই প্রস্তুতিহীন একজন একটি দায়িত্ব পেলে, তিনি যতো আন্তরিকই হোন না কেন, ব্যর্থ হতে বাধ্য। দ্বিতীয় কারণ হলো, একজন একটি নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনে আদৌ যোগ্য কিনা, তা যাচাই করেই তাকে দায়িত্ব দেয়া দরকার। যোগ্যতা যাচাই ছাড়াই একজন দায়িত্ব পেলে, তার সাফল্য নির্ভর করবে, তিনি কতটা যোগ্য তার উপর। এবার যারা চমকে দেয়া দায়িত্ব পেলেন, তারা সফল হবেন কিনা, তার জন্য আমাদের আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।