নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪৬ এএম, ২৫ এপ্রিল, ২০১৯
সংস্কারপন্থীদের নেতৃত্বে চলতি মাসেই জামায়াতে ইসলামী নতুন মোড়কে আত্নপ্রকাশ ঘটছে। এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে দলটির একাংশ নেতারা। তারা এ কার্যক্রমকে নতুন দল না বলে ‘রাজনৈতিক উদ্যোগ’ বলছে। সূত্র বলছে, আগামী ২৭ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে এ উদ্যোগের প্রকাশ হতে পারে। সম্প্রতি ঢাকায় জামায়াতের বিভিন্ন অঞ্চল এবং পেশার সাবেক ও বর্তমান দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সংস্কারপন্থিদের নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ গভীর চাপ ও উদ্বেগে ফেলেছে জামায়াতের মূল নেতৃত্বকে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভূমিকার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়াসহ দলের সংস্কার ঠেকাতে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক সফর কর্মসূচি শুরু করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা এসব সফরে সংস্কারপন্থি নেতাদের অবস্থানের বিরুদ্ধে কথা বলছেন।
এদিকে দল ভাঙা ঠেকাতে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক সফর কর্মসূচি শুরু করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা। এসব সফরে তারা সংস্কারপন্থি নেতাদের অবস্থানের বিরুদ্ধে কথা বলছেন বলে দলের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে। জানা গেছে, নতুন নামে দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে কমিটি গঠিত হলেও এখনো এর কোনো অগ্রগতি হয়নি। এর মধ্যেই শোনা যাচ্ছে সংস্কারপন্থি নেতারা জামায়াত ছেড়ে নতুন দল গঠন করতে পারেন।
জামায়াতে সংস্কার এবং একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইতে শীর্ষ নেতৃত্বকে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন দীর্ঘদিন নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালনকারী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। কয়েক বছর ধরে লন্ডনে স্বেচ্ছানির্বাসনে রয়েছেন তিনি। আবদুর রাজ্জাক জামায়াত বিলুপ্ত করে একাত্তরে স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকার জন্য ক্ষমা চেয়ে নতুন নামে দল গঠনের পরামর্শ দিয়েছিলেন দলের আমির মকবুল আহমাদকে। একই দিন জামায়াত থেকে বহিষ্কৃত হন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু, যিনি দলের মজলিশে শূরার সদস্য ছিলেন। তিনিও একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চেয়ে উদারপন্থি দল গঠনের পক্ষে ছিলেন। জানতে চাইলে ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘আগেই বলেছিলাম বাংলাদেশে জামায়াতের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার। নেতৃবৃন্দ আমার এই আত্মপর্যালোচনামূলক সমলোচনা পছন্দ করেননি।’ তিনি বলেন, ‘রাজনীতির ছাত্র আমি। যদি আমরা তরুণরা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নিই তাহলে একটা নতুন আশার সঞ্চার হবে। এর মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক আন্দোলনের উন্মেষ ঘটবে। অনেকে আমার এ ভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।’ মজিবুর রহমান মঞ্জু নতুন দল গঠনে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছেন। সম্প্রতি তিনি ‘নাগরিক সমাজ’ ব্যানারে রাজনৈতিক ও সামাজিক ইস্যুতে সভা-সেমিনার করে আলোচনায় রয়েছেন।
নতুন দলে আবদুর রাজ্জাক থাকবেন কি না তা পরিষ্কার করেননি মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেছেন, তারা আবদুর রাজ্জাককে এখনো ‘অ্যাপ্রোচ’ করেননি। ভবিষ্যতে করতে পারেন। এদিকে দলের সংস্কারপন্থিদের চাপের মুখে নতুন নামে দল গঠনের যে ঘোষণা দিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী, এরও কোনো অগ্রগতি নেই। নতুন দল গঠনের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি গত দেড় মাসে দুটি বৈঠক করেছে।
সূত্র জানায়, নীতিনির্ধারকেরা এখন নতুন দল গঠনের চেয়ে সংস্কারপন্থিদের সামাল দেওয়াতেই বেশি মনোযোগ দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা সারা দেশে সাংগঠনিক সফর শুরু করেছেন। তারা মাঠপর্যায়ের কর্মী-সমর্থকদের যে কোনো পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ ও সংস্কারপন্থিদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলছেন। তারা কর্মীদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন, দলের দুঃসময়ে বিভিন্ন দাবিতে যারা দল ছেড়েছেন, তারা দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।
এরই মধ্যে সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান সিলেট মহানগর, নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার খুলনা, রফিকুল ইসলাম খান সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহী এবং ডা. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের কুমিল্লা সফর করেন। এরপর আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের অতিসম্প্রতি কুমিল্লার একটি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।