ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির ওপর কূটনৈতিক চাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০১৯


Thumbnail

সরকারের চাপ নয়, বরং কূটনৈতিক মহলই এখন বিএনপির নির্বাচিতদের সংসদে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে চাপ দিচ্ছে। সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার শেষ সময়ে এসে কূটনৈতিক মহলের তৎপরতা লক্ষণীয়। একাধিক দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে যে, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার, ভারতের রাষ্ট্রদূত রিভা গাঙ্গুলী এবং যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন, তিনজনই বিএনপির সঙ্গে কথাবার্তা বলছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তারা বিএনপিকে অনুরোধ করেছে, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় থাকার জন্য, সেই লক্ষ্যে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে যেন বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা যেন শপথ গ্রহণ করে এবং সংসদের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। গণতান্ত্রিক রীতিনীতি এবং গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্য সংসদই যেন কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় এজন্য তারা বিএনপিকে অনুরোধ করছেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, গত শুক্রবার মার্কিন লাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের একাধিক নেতার কথাবার্তা হয়েছে। সেখানে দলের মাহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামে আলমগীরও ছিলেন। ড. আব্দুল মঈন খানের সঙ্গে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের এনিয়ে একাধিক দফা কথা হয়েছে বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। নবনিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারও বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দকে বলা হয়েছে, সংসদকে যেন বিএনপির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা হয়। সে লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে এটাও বলা হয়েছে যে, সংসদে যত কম সংখ্যক আসনই হোক না কেন বিএনপির সেখানে গিয়ে কথা বলা উচিত। তাদের বক্তব্যগুলো পেশ করা উচিত।

সর্বশেষ এই কূটনৈতিকদের সূচনা হয়, গতমাসে যখন বিএনপির উদ্যোগেই কূটনৈতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং খালেদা জিয়ার অসুস্থতার ব্যাপারে ব্রিফ করা হয়েছিল। সেসময় বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তারা সংসদে যাবে কি যাবে না সে ব্যাপার নিয়ে এখনো চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে তৃনমূলের নেতৃবৃন্দ থেকে চাপ আছে তারা যেন সংসদে যোগ না দেয়। এই প্রেক্ষাপটে প্রায় একমাস পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয় যে, বিএনপির নির্বাচিত কোন সদস্যই সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করবে না। তারা সংসদে যাবেন না।

উল্লেখ্য যে, আগামী ৩০ এপ্রিল শপথ নেওয়ার যে সাংগঠনিক বাধ্যবাধকতা তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে যদি বিনপির বাকি পাঁচজন সদস্য শপথ গ্রহণ না করেন তাহলে তাদের আসনগুলো শুন্য হয়ে যাবে। কূটনৈতিক মহল এই পরিস্থিতি চাইছেন না। তারা মনে করেন যে, এই সময়ের মধ্যে যদি বিএনপির বাকিরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন তাহলে বাংলাদেশে যে গণতান্ত্রিক ধারা এবং বিধি ব্যবস্থা তা আরো অব্যাহত থাকবে।

গত ৪৮ ঘন্টায় বিএনপির সঙ্গে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ কূটনৈতিক ব্যাক্তিদের দফায় দফায় বৈঠক এবং আলাপ আলোচনার খবর পাওয়া গেছে যেসব বৈঠকে তারা বিএনপিকে অনুরোধ করেছে যে, বিএনপি যেন সংসদে যোগ দেয় এবং তাদের বক্তব্যগুলো সংসদে উপস্থাপন করে। সংসদে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র , যুক্তরাজ্যের প্রধান যুক্তিগুলো হলো এই; প্রথমত, জনগনের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছেন, কাজেই সংসদে অবশ্যই যাওয়া উচিত। দ্বিতীয়ত, তারা মনে করে যে সংসদে যদি তারা যোগ না দেয়, তাহলে রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে না। সেক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে কোন রকমের আলাপ আলোচনা করার ক্ষেত্রেও বিদেশী রাষ্ট্রদূতগুলোর সমস্যা হবে। তৃতীয়ত, তারা যে দাবি দাওয়ার কথা বলে সেগুলো অন্যকোন অগনতান্ত্রিক পন্থায় না বলে সংসদে গিয়ে যদি বলা হয় সেটা শোভনীয় এবং গণতান্ত্রিকভাবে এই বিষয়গুলোর দিকে নজড় দিতে পারবে।

তবে বিএনপির পক্ষ থেকে এখন এ ব্যাপারে কোন ইতিবাচক সারা দেওয়া হয়নি। একটি সূত্র দাবি করছে যে, ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির নেতা ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন যে, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি সুরাহা হলে সংসদে যোগ দেওয়ার ব্যাপারটা সহজতর হতো। কিন্তু সেটা সরকার করছে না। অবশ্য ড. মঈন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন যে, বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের সঙ্গে তার বিভিন্ন পর্যায়ের আলাপ আলোচনা হয়েছে। তবে তিনি দাবি করেন যে, সংসদে যাওয়ার ব্যাপারে কোন ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কথা তিনি কাউকে বলেননি। এছাড়াও গত দুইদিনে বিএনপির অন্যতম প্রভাবশালী নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর সঙ্গে ভারতীয় দূতাবাসের একাধিক কর্মকর্তার বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে। তারাও বিএনপিকে সংসদে যাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে অনুরোধ জানিয়েছেন। মিন্টু তাদেরকে বলেছেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং সংসদে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারকে কিছু ভূমিকা পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে তিনি কিছু শর্তের কথা বলেছেন, যার মধ্যে রয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তার ভাষায় বিএনপির নেতৃবৃন্দের হয়রানি মূলক মামলাগুলো প্রত্যাহার। তবে এই কূটনৈতিক চাপের মুখে বিএনপি শেষ পর্যন্ত সংসদে যাবে কি যাবে না সে সিদ্ধান্ত এখন স্পষ্ট নয়। তবে বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, আগামীকাল কিংবা পরশুর মধ্যে বিএনপির অন্তত তিনজন সংসদ সদস্য শপথ গ্রহণ করবেন। এ ব্যাপারে তারা পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি গ্রহণ করেও রেখেছেন। তবে যারা শপথ গ্রহণ করেছেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তারা কেউই বলেননি যে কূটনৈতিক চাপে বা সরকারী চাপে শপথ গ্রহণ করছেন। বরং তারা বলেছেন, জনগনের কাছে দায়বদ্ধতা থেকেই শপথ গ্রহণের জন্য আগ্রহী হয়েছেন।   

 

বাংলা ইনসাইডার



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এখনও বিএনপিতে বিভ্রান্তি

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আসন্ন উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গতকাল সোমবার রাতে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বর্জনের সিদ্ধান্ত হলেও নির্বাচন নিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি স্পষ্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত জানানো হলেও দলীয় অবস্থানের বিষয়ে এখন বিএনপি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বলে দলটির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র দাবি করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকলেও দলের অবস্থান কী হবে-এ বিষয়ে এখনও অস্পষ্টতায় দলটির নেতাকর্মীরা। অর্থাৎ স্বতন্ত্রভাবে দলের কেউ নির্বাচন করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, নাকি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নেবে তা নিয়ে কেন্দ্রের কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা পায়নি তৃণমূল। যে কারণে তারা অনেকটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন।

সূত্রমতে, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ইস্যুতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতারা দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একাংশের নেতাদের মতামত হচ্ছে, যেহেতু এখন কোনো আন্দোলন-সংগ্রাম নেই, সে কারণে নেতাকর্মীদের সক্রিয় এবং ঐক্যবদ্ধ রাখতে কৌশলে হলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত। তা ছাড়া নেতাকর্মীদের একটি অংশকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখা কঠিন হবে।

অন্য আরেকটি অংশের নেতাদের মতামত হচ্ছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা মানে, এই সরকারকে বৈধতা দেওয়া। একই সঙ্গে গত ৭ জানুয়ারি বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও চায় বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। সরকারের এ ফাঁদে কোনো অবস্থায় পা দেওয়া ঠিক হবে না। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। 

দলীয় সূত্রে জানা যায়, প্রথম ধাপে বিএনপি নেতাদের মধ্যে কতজন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তবে তাদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কি না, সে সম্পর্কে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি দায়িত্বপ্রাপ্তদের। ফলে অন্যান্য নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচন বর্জনের কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত দলের অবস্থান কী হবে সেটা নিয়ে বিএনপিতে বিভ্রান্ত এখনও স্পষ্ট। এখন দেখার বিষয় যারা উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করেছেন তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নাকি দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।



উপজেলা নির্বাচন   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

গণতন্ত্র নিয়ে পিটার হাসকে পাল্টা প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের

প্রকাশ: ০৫:২৯ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

গণতন্ত্র প্রশ্নে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে পাল্টা প্রশ্ন করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি পিটার হাসের কাছে জানতে চেয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রে কত ধাপ পিছিয়েছে?

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। 

যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টিক কাউন্সিলের স্বাধীনতা সূচকে ২৫ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের এমন তথ্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটাই যে সত্য তা তো আমরা মেনে নিচ্ছি না। ২৫ ধাপ পিছিয়েছে? আমি রাষ্ট্রদূতকে (মার্কিন) জিজ্ঞেস করতে চাই, আপনার নিজের দেশ গণতন্ত্রে কত ধাপ পিছিয়েছে। সেটার জবাব আগে দিন।

এ সময় উপনির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের অংশগ্রহণ ও গাজায় ইসরাইলের হামলা নিয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

গণতন্ত্র   পিটার হাস   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণবহিষ্কারের শঙ্কা

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির তৃণমূলে গণবহিষ্কারের আশঙ্কা করছেন অনেকে। শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় এই শঙ্কা দেখা দিয়েছে দলটিতে। গতকাল সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা এই রাজনৈতিক দলটি। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

উল্লেখ্য যে, প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে গতকাল রোববার। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলায় ১ হাজার ৮৯১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৯৬, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭১ জন। এর মধ্যে ১২০ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিএনপির ৩৪ ও জামায়াতের ১৫ নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। 

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে যে, যে সমস্ত উপজেলা গুলোতে বিএনপির প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তারা প্রত্যেকেই বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রিয় নেতা। জনগণের মাঝে তাদের আলাদা একটি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চেয়ে জনপ্রিয়তায় এড়িয়ে রয়েছেন বলে ভোটাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এবং উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে স্থানীয় জনগণের পক্ষ থেকেও এক ধরনের চাপ রয়েছে। ফলে এ রকম পরিস্থিতি জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে যদি বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তাহলে বিএনপিতে গণবহিষ্কারের একটা আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য যে, বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যাপারে দলের মধ্যে এক ধরনের অস্পষ্টতা ছিল। বিশেষ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না কিংবা কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেবে না এরকম সিদ্ধান্ত হলে বিএনপির মধ্যে এই অস্পষ্টতা তৈরি হয়। এরকম পরিস্থিতি দলের কেউ নির্বাচন করলে সেটাকে উপেক্ষা করার নীতিগত কৌশল গ্রহণ করেছিল বিএনপি। দলটির একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা বিভিন্ন সময় এ ধরনের ইঙ্গিত দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের দিয়েছিলেন। ফলশ্রুতি সারাদেশে বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির তৃণমূলের জনপ্রিয় নেতারা আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারাও এতদিন বিষয়টিকে এড়িয়ে গেছেন এবং কৌশলগত অবস্থানে ছিলেন। কিন্তু এখন আবার হঠাৎ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও বর্জন করার ঘোষণা দিলেন। এখন বিএনপি যদি এই অবস্থানে অটল থাকেন তাহলে দলটিতে গণবহিষ্কারের ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যে সমস্ত উপজেলায় বিএনপির প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তারা প্রত্যেকই দলে জনপ্রিয় এবং নির্বাচন করার ব্যাপারে তাদের ওপর এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপও রয়েছে। ফলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সম্ভাবনাই তাদের মধ্যে বেশি। আর এ রকম বাস্তবতায় দল তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বিএনপি   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বিএনপি

প্রকাশ: ০২:৫৯ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সব ধাপের উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভাচুর্য়াল সভাটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ৮ মে থেকে শুরু হওয়া আসন্ন চার ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সব ধাপের উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যারা প্রতিটি ক্ষেত্রে জনগণের নিকট জবাবদিহি করে সেই নির্বাচন গণতন্ত্রের অপরিহার্য শর্ত। এই শর্তের অনুপস্থিতিতে স্বৈরতন্ত্র হিংসাত্মকরূপে আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে বাংলাদেশে এক বিকট স্বৈরাচারের অভ্যুদয় হয়েছে। আওয়ামী দখলদার শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হয়ে দেড় দশক ধরে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বাংলাদেশ থেকে উচ্ছেদ করেছে। এদের আমলে কখনোই জাতীয় ও স্থানীয় সরকার কোনো নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। জনগণের ভোটের তোয়াক্কা না করে ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থীদেরই আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন বিজয়ী ঘোষণা করে। দখলদার শাসকগোষ্ঠী প্রতিটি নির্বাচনের পূর্বে জনগণকে প্রতারিত করার জন্য নতুন নতুন রণকৌশল গ্রহণ করে।

বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে বলা হয়, প্রাণবন্ত গণতন্ত্রে নিরপেক্ষ নির্বাচনের সংস্কৃতি আওয়ামী লীগ কখনোই রপ্ত করেনি। তাদের অধীনে সকল জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী দলের প্রার্থীদের নানাভাবে হামলা, মামলা ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়া এবং নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা ও শারীরিক আক্রমণসহ পথে পথে বাধা দেওয়া হয়। অনেককেই মনোনয়নপত্র জমা দিতেও দেওয়া হয়নি।

দলের পক্ষে বলা হয়, অগণতান্ত্রিক শক্তি কখনো অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মিত্র হতে পারে না। আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ভোটারবিহীন ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের সকল আয়োজন সম্পন্ন করার পরও তারা আশঙ্কামুক্ত হতে পারেনি। তাই নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদেরও নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ না দেওয়া, ইন্টারনেটের গতি স্লথ করা, নাগরিকদের নজরদারি নস্যাৎ ইত্যাদি নজিরবিহীন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনবিনাশী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর আগেও জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিরোধী দলের পোলিং এজেন্টদের নানাভাবে বাধা প্রদান করা হয়। কিছু এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হলেও পরক্ষণেই তাদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়।

গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, এরা একতরফা নির্বাচন করতে গিয়ে বিএনপিসহ গণতন্ত্রমনা দলগুলোর হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে ভরে রাখে। ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনে বিএনপির শীর্ষ নেতাসহ প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে কারান্তরীণ করা হয়, এদের অনেকেই এখনো কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গুম, খুন অব্যাহত থাকে।

দলীয় সরকাররের অধীনে নির্বাচনে বিএনপি যাবে না জানিয়ে বলা হয়, বিএনপি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও তার সাজানো নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং প্রশাসন ও পুলিশের প্রকাশ্য একপেশে ভূমিকার জন্য ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করেছে। এখনো সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি এবং বিদ্যমান অরাজক পরিস্থিতি আরও অবনতিশীল হওয়ায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই সরকার ভোট, সংবিধান, ভিন্নমত প্রকাশ, বহুদলের অংশগ্রহণে নির্বাচনসহ মানুষের সহজাত অধিকারগুলোকে নির্দয় দমনের কশাঘাতে বিপর্যস্ত করেছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির একমাত্র ভিত্তি হচ্ছে মানুষকে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখা। তাই সহিংস সন্ত্রাসের ব্যাপক বিস্তারের ফলশ্রুতিতে এই অবৈধ সরকারের অপরাজনীতি ও নির্বাচনী প্রহসনের অংশীদার না হওয়ার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিএনপি আগামী ৮ মে থেকে শুরু হওয়া সকল ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।


উপজেলা নির্বাচন   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ: ১২:৫০ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ৮ মে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপ অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, প্রশাসনের হস্তক্ষেপও থাকবে না। অবাধ-সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ দপ্তরসম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।


উপজেঃলা নির্বাচন   ওবায়দুল কাদের   প্রধানমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন