নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০১৯
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজ নির্বাচনী ইশতেহারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে কিনা তা তদারকি করবে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলী। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যুব ও ক্রীড়া, অর্থসহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর কার্যক্রম আওয়ামী লীগ ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে সম্পন্ন হচ্ছে কিনা কিংবা নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়গুলো কতটুকু দায়িত্ব পালন করছে তা আওয়ামী লীগ দলগতভাবে তদারকির উদ্যোগ নিয়েছে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ জনগনের কাছে এই নির্বাচনী ইশতেহার বলেই ভোট চেয়েছে এবং বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছে। কাজেই সরকারের দায়িত্ব হলো এই নির্বাচনী ইশতেহার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা। যদিও নির্বাচনের পরপরই আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয়ে নির্বাচনী ইশতেহার পাঠানো হয়েছে। সরকারের অগ্রাধিকারগুলোকে চিহ্নিত করে সেই আলোকে মন্ত্রণালয়গুলো পরিচালনার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র আমলাদের ওপর নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের কাজ ছেড়ে দিতে রাজি নয় আওয়ামী লীগ। এই বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ দলগতভাবেই নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। যেভাবে মন্ত্রণালয়গুলো সাজানো সেই আলোকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন বিষয়ের সম্পাদক রয়েছে। যেমন শিক্ষা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক, ধর্ম, যুব ও ক্রীড়া, স্বাস্থ্যের মতো সকল বিষয়ক সম্পাদক রয়েছে। এই সমস্ত সম্পাদকের দায়িত্ব যারা পালন করছে তাদের অধীনে আওয়ামী লীগের উপ কমিটিও রয়েছে। যদিও এই উপকমিটি তেমন কার্যকর নয়। এবার আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সম্পাদকদের একটা বড় কাজ হবে তারা নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমগুলোকে তদারকি করবে এবং মন্ত্রণালয় কতটুকু কি কার্যক্রম করছে সেটা মনিটরিং করবে। তবে তারা মন্ত্রণালয়ের কোন বৈঠক বা মন্ত্রণালয়ের কোন মন্ত্রীকে এ ব্যাপারে সুপারিশ বা পরামর্শ দিবে না। এটা তারা দলের নীতি নির্ধারনী সংস্থা প্রেসিডিয়ামের কাছে অর্পন করবে অথবা দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে দিবে কিংবা দলের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ব্যাপারে তাদের অভিজ্ঞতা মতামত বা তাদের সুপারিশগুলো পেশ করবে। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকেও সেই প্রেক্ষিতে এটা আলোচিত হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে।
আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, নির্বাচন ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী লীগ অঙ্গিকারবদ্ধ। তিনটি প্রক্রিয়ায় এই নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথমত, সরকারের মধ্যেই এই নির্বাচনী ইমতেহার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। ঐ নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে মন্ত্রণালয়ের কার্যগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাজানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগের সংসদে যে সংসদীয় কমিটি করা হয়েছে সেই সংসদীয় কমিটিকে একটা বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, নির্বাচনী আলোকে সরকার কার্যক্রম পরিচালনা করছে কিনা তা তদারকি করার জন্য। সংসদের বৈঠকে সংসদীয় কমিটির বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বৈঠকে এটা নিয়মিত করার জন্য এটা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এখন আওয়ামী লীগ দলগতভাবেও নির্বাচনী ইশতেহার মনিটরিং করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরফলে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয় এবং সরকার যথাযথভাবে পদক্ষেপ নিবে বলেই আওয়াম লীগ আশা করছে। আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, আমরা নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং আমরা মনে করি যে, এই নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে একটা মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে জায়গা করে নিবে এবং ২০৪১ এর মধ্যে ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। সেই লক্ষেই আমরা কাজ করছি এবং সেইজন্য নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন হলো এই সরকারের প্রধান এজেন্ডা। এদের কাজ যেন সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য সামগ্রিক মনিটরিং হচে। তবে আওয়ামী লীগের যে সম্পাদকমণ্ডলী নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন করছে কিনা সেটা মনিটরিং করলে সেটা সরকারের কাছে হস্তক্ষেপ করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, মোটেও সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করা হবে না। বরং তারা সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমগুলো মূল্যায়ন করবে। নিজস্ব উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে। সেটার সঙ্গে নির্বাচনী ইশতেহার সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা সাংঘর্ষিক কিনা সেটা তারা দেখবে এবং এ ব্যাপারে দলের নীতি নির্ধারককে পরামর্শ এবং সুপারিশ দিবে। এরফলে দলের যেমন কাজ বাড়বে তেমনিভাবে আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নেও সফল হবে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা মনে করছেন।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।