নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০১ মে, ২০১৯
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার পাল্লায় যারাই পড়েছেন, তাদেরই রাজনীতিতে এসেছে সর্বনাশ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ২০০১ নির্বাচনের পর তারেক জিয়ার কর্তৃত্বে আসে বিএনপি রাজনীতি। বিএনপি’তে তারেক জিয়ার কথাই শেষ কথা হয়ে যায়। তারপর থেকেই বিএনপি’র পতন পর্বের সূচনা হয়েছে। বিএনপির অধিকাংশ নেতা মনে করছেন যে, তারেক জিয়ার ভ্রান্ত নীতি, তার লোভ এবং রাজনীতিকে ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যবহারের প্রবণতার কারণেই বিএনপির আজ এ অবস্থা হয়েছে।
২০০১ সালের পর তারেক জিয়া রাজনীতিতে নিজস্ব বলয় তৈরী করেছিলেন। তার অযাচিত প্রশ্রয়ে হঠাৎ করেই অনেক নেতা তৈরি হয়েছিল বিএনপিতে। তারেক জিয়ার কারণেই রাজনীতি থেকে তারা ছিটকে পড়েছেন। তারেক জিয়ার ভুল রাজনীতির সর্বশেষ শিকার হলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এখন হাস্য কৌতুকের বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। অসত্য কথা বলার দিক থেকে অন্যসব রাজনীতিবিদকে ছাড়িয়ে গেছেন মির্জা ফখরুল। লন্ডনে যাওয়ার আগে তিনি বলছেন, লন্ডনে যাওয়ার পরিকল্পনা নেই আমার। এটা বলেই তিনি লন্ডনে রওয়ানা হচ্ছেন। নির্বাচনের আগে তিনি বলেছেন যে, বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। পরে তিনি নির্বাচনে যাচ্ছেন। সংসদে যাওয়ার প্রশ্নে তিনি বলেছেন, বিএনপি সংসদে যাবে না। অথচ বিএনপি সংসদে গেছে। এজন্য মির্জা ফখরুল কোনটা সত্যি বলেন, কোনটা মিথ্যা বলেন তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিএনপির একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, মির্জা ফখরুল যা-ই বলেন, সেগুলো তার নিজের কথা নয়। তিনি তারেকের নির্দেশিত কথা বলেন। তারেকের নির্দেশিত কথা বলার কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের যে সুনাম এবং ইমেজ ছিল তা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রথম নন, বিএনপির এমন অনেক নেতার রাজনৈতিক জীবন ধ্বংস করেছেন তারেক জিয়া। এদের মধ্যে রয়েছেন-
লুৎফুজ্জামান বাবর
লুৎফুজ্জামান বাবর যখন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হন, তখন বিএনপির অনেকে তাকে চিনতোই না। মূলত বিমান বন্দরে ঘড়ি চোলা চালান চক্রের নেতা ছিলেন লুৎফুজ্জামান বাবর। তাকে টেনে নিয়ে এসে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করেন তারেক। প্রথম কিছুদিন একজন পূর্ণমন্ত্রী থাকলেও পরে বাবরের হাতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুরো দায়িত্ব তুলে দেন তারেক। মূলত জঙ্গি নেটওয়ার্কিং, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ তারে জিয়ার অবৈধ ব্যবসা আছে সেগুলো তদারকি করার জন্যই বাবরকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারেক জিয়া বাবরকে এমনভাবে ব্যবহার করেছেন যে, রাজনীতিতে দেওয়ার মতো বাবরের এখন আর কিছুই নেই। এখন তিনি একজন পতিত রাজনীতিবিদ হিসেবেই পরিচিত। তিনি এখন কারাগারে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন।
হারিছ চৌধুরী
২০০১ সালে তারেক উত্থানের সঙ্গে সঙ্গেই হারিছ চৌধুরীরও উত্থান ঘটেছিল। মনে করা হয়, হারিছ চৌধুরী ছিলেন তারেক জিয়ার ক্যাশিয়ার। তারেকের পক্ষে তার ব্যবসা-বাণিজ্য, টেন্ডার তদারকি ইত্যাদি হারিছ চৌধুরীই দেখাশোনা করতেন। তিনি ছিলেন হাওয়া ভবনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সেতুবন্ধন। হারিছ চৌধুরীকে টাকা না দিলে কোনো নিয়োগ এবং পদোন্নতিই সম্ভব ছিল না বিএনপি শাসনামলে। অতি ব্যবহারে সেই হারিছ চৌধুরীকেও নষ্ট করেছেন তারেক জিয়া। হারিছ চৌধুরী কোথায় তা এখন কেউ জানে না। তিনি এখন লন্ডন, ভারত, আমেরিকা ঘুরে ঘুরে যাযাবরের মতো দিন কাটাচ্ছেন। তার রাজনৈতিক জীবন ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
এহসানুল হক মিলন
এহসানুল হক মিলনকে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বানিয়ে আলোচিত হয়েছিলেন তারেক জিয়া। বিভিন্ন পরীক্ষায় নকলের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে এহসানুল হক মিলনও আলোচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়ার পতনের সঙ্গে সঙ্গে এহসানুল হক মিলনেরও পতন হয়। তারেক জিয়ার প্রতি মিলনের আনুগত্য নষ্ট হলে তাকে ছুড়ে ফেলে দিতেও কার্পণ্য করেননি তারেক জিয়া। ৩১ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তাকে মনোনয়নও দেওয়া হয়নি। এর মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবনের ইতি ঘটেছে।
এরকম বহু উদাহরণ দেওয়া যায়। তারেক জিয়ার দৃষ্টি যার দিকে পড়েছে, তিনিই ধ্বংস হয়েছেন। তারেক জিয়ার সঙ্গে যিনিই ঘনিষ্ঠ হয়েছেন, যিনিই তার পরামর্শ শুনেছেন, রাজনীতিতে তিনি একজন ভ্রষ্ট হিসেবেই পরিগণিত হয়েছেন। এই কারণেই আজ বিএনপি’র রাজনীতির টালমাটাল অবস্থা।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ থাকবে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সামনে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন চলাকালে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কোনো সম্মেলন, মেয়াদোত্তীর্ণ সম্মেলন, কমিটি গঠন এই প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে’।
মন্ত্রী-এমপির নিকটাত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, নিকটজনদেরকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। যারা ভবিষ্যতে করতে চায় তাদেরও নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। যারা আছে তাদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকেই এখনো নির্বাচনে আছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হোক, তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে।
ওবায়দুল কাদের উপজেলা নির্বাচন সেতুমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।