নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৪ মে, ২০১৯
আওয়ামী লীগ সভাপতি তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেকের উপর আস্থা রেখেছিলেন। অনেককে বিশ্বাস করে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে দিয়েছিলেন। কিন্তু দায়িত্ব প্রাপ্তরা কেউ কেউ আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পারেননি। এজন্য তারা শেখ হাসিনার বলয় থেকে চ্যুত হয়েছেন। এখন তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছের মানুষ নেই, অথচ এক সময় আওয়ামী লীগ সভাপতির আস্থাভাজন এজন্য সরকার এবং রাজনীতিতে প্রচন্ড ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছিলেন। এরকম কয়েকজনকে নিয়ে এই প্রতিবেদন:
ডা: এস. এ. মালেক: ১৯৮১-তে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর শেখ হাসিনা যাদের উপর সব থেকে বেশি নির্ভর করতেন তাদের অন্যতম ডা: এস. এ মালেক। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বড় নেতা না হলেও শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে তিনি দলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। ৯৬ সালে দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতায় এলে ডা: এস. এ মালেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা মনোনিত হন। এ সময় তিনি ছিলেন দুর্দান্ত ক্ষমতাবান। কিন্তু ২০০১ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতির আস্থা হারাতে থাকেন। ওয়ান ইলেভেনে তার ভূমিকা রহস্যকৃত। এখন তিনি শেখ হাসিনার কাছের মানুষ নন। কেন নন, সেও এক রহস্য।
ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর: ড. আলমগীরকে শেখ হাসিনা যতো সুযোগ দিয়েছেন এতো সুযোগ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কেউ পাননি। ‘জনতার মঞ্চে’র বিনিময়ে তিনি প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সচিব হন, ১৯৯৬ সালে। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি তাকে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী করেন। ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ টানা ১০ বছর ক্ষমতায়। এর মধ্যে কি পাননি ড. আলমগীর? মন্ত্রীত্ব পেয়েছেন, ব্যাংক পেয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছেন। কিন্তু এতো প্রাপ্তির একটিও ‘সফল’ হিসেবে দেখাতে পারেননি। তাই এখন তিনি কক্ষ্যচ্যুত।
আবু আলম শহীদ খান: আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে যেক’জন সরকারী কর্মকর্তার উপর নির্ভর করতেন তাদের একজন ছিলেন আবু আলম শহীদ খান। প্রথমেই তিনি ডেপুটি প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর বিএনপি আমলে একটি দুর্নীতি মামলায় তার নাম চার্জশীটে থাকায় তিনি সাসপেন্ড থাকেন। কিন্তু এরপরও আওয়ামী লীগ সভাপতির অন্যতম আস্থাভাজন ছিলেন আবু আলম। সাপ্তাহিক বিচিত্রারও দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন। এরপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সরকারী চাকরিতে যোগ দেন উপসচিব হিসেবে। ম্যাজিকের মতো তিনি সচিব হন। স্থানীয় সরকারে সচিব হিসেবে তিনি কর্মঠ, চটপটে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু ২০১৩ সালে তার সঙ্গে দূরত্ব তৈরী হয় আওয়ামী লীগ সভাপতির। তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। যিনি একজন সততার প্রতীক রাজনীতিবীদ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। অনেকেই বলেন, ২০১৪- এর নির্বাচনের আগে সিটি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত ছিলো আবু আলম শহীদ খানের। ঐ নির্বাচনে ৫ টিতেই আওয়ামী লীগ হেরে যায়। সারাদেশে বিএনপির একটা জেয়ার তৈরী হয়েছিল। আবু আলম শহীদ খানের কক্ষ্যচ্যুত হবার এটি একটি বড় কারণ। তবে তার পক্ষে কোন সাক্ষ্য প্রমান নেই।
যেমন সাক্ষ্য প্রমান নেই, কেন ড: এস. এ সামাদকে প্রধানমন্ত্রী তার বলয়ে স্থান দেননি। অথচ ১৯৯৬-২০০১ সালে ড. সামাদ ছিলো প্রধানমন্ত্রীর সবচেয়ে আস্থাভাজন আমলা। এমন অনেক নক্ষত্রের পতন হয়েছে, এটাই হয়তো রাজনীতির চমক, যার কোন কারণ কেউ মানে না, যার ব্যাখ্যাও নেই।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।