ইনসাইড পলিটিক্স

শেখ হাসিনার সেরা দশ সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:০১ পিএম, ১৫ মে, ২০১৯


Thumbnail

আর মাত্র দুদিন পর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্নের ৩৮ বছর পূর্ণ হবে। ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক প্রতিকুল ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ পরিবেশে। এই ৩৮ বছরে তাঁকে রাজনৈতিক জীবনে অনেক ঘাত প্রতিঘাত চড়াই উৎরাই পার করতে হয়েছে। নানারকম বিপদসংকুল পরিবেশ অতিক্রম করেই আজকে তিনি বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হয়েছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আর যাই হোক শেখ হাসিনার নাম কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ‘বাংলা ইনসাইডার’ এর  ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম পর্ব আজ। আজকের পর্বে আমরা আলোচনা করবো রাজনীতিবিদ হিসেবে শেখ হাসিনার সেরা দশটি সিদ্ধান্ত। দেশবরেণ্য রাজনৈতিক বিশ্লেষক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সহযোগিতা নিয়েই আমরা এই সেরা দশ সিদ্ধান্ত নির্বাচন করেছি। এই দশ সিদ্ধান্ত শুধু শেখ হাসিনার জীবনের রাজনৈতিক গতিপথ পরিবর্তন করেনি বাংলাদেশের রাজনীতিতেও এক নতুন মেরুকরণ ও বিন্যাস তৈরি করেছে। আসুন দেখা যাক ‘বাংলা ইনসাইডার’ বিবেচনায় শেখ হাসিনার সেরা দশ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত-

১. আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণ করাঃ  ৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যার পর আওয়ামী লীগ হয়ে পরেছিল বিদ্ধস্ত ও হতবিহ্বল। কোন্দলে আবদ্ধ দলের মনোবল হয়ে গিয়েছিল চূর্ণ। এরকম একটি পরিস্থিতিতে নেতৃত্বশূন্য আওয়ামী লীগের হাল ধরার জন্য আহ্বান জানানো হয় শেখ হাসিনাকে। তখন তিনি বিদেশে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু যখন তাঁকে নেতৃত্ব দেওয়া হয় তখন তিনি নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। শুধু শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনে নয় বলা হয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক জীবনে এটি সবচেয়ে বড় এবং সাহসী সিদ্ধান্ত। যেখানে পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে সেখানে বাংলাদেশে ফিরে আসা শুধু মৃত্যুর ঝুকিই নয় বরং আত্মহত্যারও সামিল। এছাড়া তিনি নিশ্চয়ই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন কতটা প্রতিকূল পরিবেশে তাঁকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। আজ ৩৮ বছর পরও ফিরে তাকালে সেটা কল্পনা করাও দুঃসাধ্য ব্যাপার। তাই আমাদের বিবেচনায় এটি তাঁর সবচেয়ে সেরা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।

২. সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনঃ  শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কিছুদিন পরই মারা যান জিয়াউর রহমান। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়ে ক্ষমতায় বসেন উর্দি পরা আরেক একনায়ক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তারপরই শুরু হয় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আন্দোলনে এক পর্যায়ে যুক্ত হন বেগম খালেদা জিয়া। দীর্ঘ ৯ বছর আন্দোলনের পর স্বৈরাচারী এরশাদের পতন ঘটলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ৯১এর নির্বাচনে অভাবনীয়ভাবে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয় যা ছিল অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য। পরাজিত হলেও তিনি তাঁর নীতি ও আদর্শ অনুযায়ী কাজ করতে থাকেন এবং সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবী করেন। সংসদীয় গণতন্ত্র আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অঙ্গীকার এবং ৭২ এর সংবিধানে সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা প্রবর্তিত ছিল। পরবর্তীতে এই ব্যবস্থা থেকে আমরা সরে আসি এবং  জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি জানতেন সংসদীয় গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই এবং বিরোধী দলে থেকেই সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা পুনপ্রবর্তনের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। কাজেই এটা তাঁর রাজনৈতিক জীবনের একটি বড় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।

৩. প্রচলিত আইনে জাতির পিতা হত্যাকান্ডের বিচারঃ ৯৬ সালে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ অঙ্গীকার অনুযায়ী জাতির পিতার হত্যাকান্ডের বিচার শুরু করে। শেখ হাসিনা চাইলেই বিশেষ ট্রাইবুনাল করে বা দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল করে জাতির পিতার হত্যার বিচার করতে পারতেন কিন্তু তিনি সেসব না করে দেশের প্রচলিত আইনে বিচার করেন। যা দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার এক  অনবদ্য নজির এবং যা দেশে বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। বলা হয় যে, শেখ হাসিনা যে গনতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল তাঁর প্রমাণ এটি।

৪. একাত্তরের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারঃ
৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে যেটা তিনি পারেননি এবং যা ছিল এদেশের মানুষের অনেক আকাংখিত বিষয় তা হলো একাত্তরের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার। ২০০৮ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে তিনি ৭১ এ যারা গনহত্যা , লুট, হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের সংগে জড়িত ছিল তাঁদের বিচার করা। ক্ষমতায় এসে আন্তার্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল অনুযায়ী তাঁদের বিচার শুরু করে দেশে পুনরায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুন:প্রতিষ্ঠায় তিনি সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।

৫. কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠাঃ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল তৃণমূল পর্যন্ত দেশের সকল নাগরিকের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে তা করে যেতে পারেননি। শেখ হাসিনা প্রথমবার ক্ষমতা গ্রহণ করে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়ে অনেকদুর কাজ এগিয়ে নিলেও বিএনপি জামাত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আবার ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থা চালু করেন জনগণের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে। কমিউনিটি ক্লিনিক শুধু বাংলাদেশে নয় তৃণমূলের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় একটি রোল মডেল হিসেবে কাজ করছে এবং সারাবিশ্বে একটি অনন্য স্বাস্থ্য মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে। কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনার আরেকটি বিচক্ষণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।

৬. ডিজিটাল বাংলাদেশঃ ২০০৮ সালে নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাঁদের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দেয়। তখন ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়টি ছিল অস্পষ্ট, এর রুপ কি হবে তা সম্পর্কে কারো কোনো ধারণা ছিল না। অনেকে এটিকে কৌতুকে পরিণত করে। কিন্তু আজকে বাংলাদেশ সত্যি সত্যি ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। গ্রামে গঞ্জে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও মানুষ ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা ভোগ করছে। শুধু তাই নয় ইন্টারনেটে দ্রুত বর্ধনশীল দেশের একটি হলো বাংলাদেশ। কাজেই  শেখ হাসিনার সেরা ১০ টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের একটি হলো বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রক্রিয়া গ্রহণ।

৭. জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতাঃ ৯৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগ ঘোষনা ক্রেছিল যে জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের শূন্য সহিষ্ণুতা রয়েছে। কিন্তু প্রথম মেয়াদে সেটি আওয়ামী লীগ সঠিকভাবে পালন করতে পারেনি। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে সেটি করে এবং তা হলো জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি। এই নীতি গ্রহণ করে বাংলাদেশে যে ভারতের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নিতাবাদী সংগঠনের আশ্রয়স্থল ছিল, যে পকেটুগুলো ছিল সেগুলো সমূলে উৎপাটন করেন শেখ হাসিনা। ফলে বাংলাদেশ যে জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণু সে বার্তাটি সারা বিশ্বে পৌঁছে যায়। যাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সাররাবিশ্বে উজ্জ্বল হয়। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির অন্যতম একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

৯. ভারতের সংগে সুসম্পর্কঃ ভারত বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিবেশী। শুধু মায়ানমারের কিছু অংশ ছাড়া পুরোটাই ভারত বেষ্টিত। ভারতের সংগে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে গাঁথা। কিন্তু রাজনৈতিক টানাপোড়েনে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে একটি ভারত বিদ্বেষী মনোভাব জাগিয়ে তোলা হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে ভারতের সংগে রাজনোটিক আর্থিক বিভিন্ন খাতে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। ফলে ভারতের সংগে পার্বত্যচুক্তি, ট্রানজিট, ছিটমহল বিনিময়সহ বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ফলে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি নতুন মাত্রা পায়। যার ফলে দুইদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলিতা এবং সামাজিক সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে যা আমাদের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

৯. উন্নয়নের গনতন্ত্রঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণ করেই বুঝেছিলেন গণতন্ত্র টেকসই হতে পারে না যদি মানুষের পেটে ভাত না থাকে। এজন্য উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি রাষ্ট্র যদি নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারে তাহলে কখনো গণতন্ত্র টেকসই হতে পারে না। সেজন্যই তিনি দেশকে টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মডেল গ্রহণ করেন। গত দশ বছরে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে।  গণতন্ত্রকে টেকসই করতে গেলে উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। এজন্যই তিনি স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছিলেন। তাই বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বের বিস্ময়। উন্নয়নের রোল মডেল। বিশ্বের দ্রুত বর্ধিষ্ণু আটটি দেশের একটি হলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। উন্নয়নের গণতন্ত্রের মডেলের কারণেই বাংলাদেশে আজ স্থিতিশীল এবং উন্নয়ন যুগপতভাবে চলছে বলে মনে করা হয়।

১০. অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ চিরতরে রুদ্ধ করাঃ দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০৯ সালে দায়িত্বগ্রহণ করেই আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেন। ৭২ সংবিধানের আলোকে সংবিধানকে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন। সেখানে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সাংবিধানিকভাবে বৈধতা দেওয়ার সব প্রচেষ্টাই রোহিত করা হয়েছে। এটা একটা তৃতীয় বিশ্বের দেশের জন্য এক অনন্য সাংবিধানিক রক্ষাকবচ। ফলে বাংলাদেশে হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতির চির অবসান ঘটেছে। এটা শেখ হাসিনার সেরা দশ সিদ্ধান্তের একটি।

বাংলা ইনসাইডার/এসআর 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন: বিএনপি-জামায়াত নেতারাও হচ্ছেন প্রার্থী

প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনের বেশ কয়েকটিতে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি ও জামায়াত নেতা। তারা অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন বর্জন করে আসছে বিএনপি ও জামায়াত। কিন্তু এবার নির্বাচন বর্জনে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই ওইসব উপজেলায় দল দুটির নেতারা প্রার্থী হয়েছেন। তবে কত উপজেলায় মোট কতজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তার প্রকৃত তথ্য পাওয়া যায়নি।

গতকাল সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার সময় শেষ হয়েছে। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপের ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে। 

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৫০টি উপজেলায় মোট ১৮৯০ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৯৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭১ জন রয়েছেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনই বাগেরহাট সদর ও মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ১২টি পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলেছেন। বাকি শুধু আনুষ্ঠানিকতা। 

বাগেরহাট সদর উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে জয়ী হতে যাচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ সভাপতি সরদার নাসির উদ্দিন। এ উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রিজিয়া পারভীনও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এর আগের নির্বাচনেও তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন। তবে এ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী হয়েছেন।

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনিছুজ্জামান আনিস একক প্রার্থী হিসাবে আবারও নির্বাচিত হওয়ার পথে রয়েছেন। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। 

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাহেনা বেগম হাছনা। এ নিয়ে টানা চতুর্থবার জয় পেতে যাচ্ছেন তিনি।

এছাড়া কক্সবাজার সদর ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থী রয়েছেন।

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেতে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।

এছাড়াও কুষ্টিয়া সদর, চাঁদপুরের মতলব উত্তর, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও ঠাকুরগাঁওর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী রয়েছেন।

প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ১৮৯০ জনের মনোনয়নপত্র দাখিলের তথ্য নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।

তিনি বলেন, ‘অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল হওয়ায় কোথাও উল্লেখ করার মতো আচরণবিধি লংঘনের খবর পাওয়া যায়নি। প্রার্থীরা সহজেই অনলাইনে আবেদন করতে পেরেছেন’।  

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, এবারই প্রথম পুরোপুরি অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এ কারণে মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরগুলোতে শোরগোল ছিল না, আচরণ বিধিমালা লংঘনেরও খবর পাওয়া যায়নি। গত নির্বাচনে অনলাইন ও অফলাইন দুভাবেই জমা দেওয়ার সুযোগ ছিল। তখন অনলাইনে তেমন সাড়া মেলেনি।

তারা আরও জানান, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ জমা হওয়া মনোনয়নপত্র আগামীকাল বুধবার যাচাই করবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। বাছাইয়ে বৈধ বা বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে ১৮-২০ এপ্রিল। ওইসব আপিলের ওপর শুনানি হবে ২১ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২২ এপ্রিল। নির্বাচনি এই প্রক্রিয়ায় প্রার্থীর সংখ্যা আরও কমবে। তখন একক প্রার্থীর সংখ্যা বাড়তে পারে।

তারা জানান, ১৬টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে দুজন করে প্রার্থী হয়েছেন। এসব উপজেলায় একজন প্রত্যাহার করলেই অপরজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন।

গত ২১ মার্চ ১৫২টি উপজেলা নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফশিল ঘোষণার পর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে সরিয়ে নেওয়া হয়। আর নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন আইনি জটিলতায় স্থগিত করা হয়েছে। বাকি ১৫০টিতে ভোট হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে ২২টিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকি উপজেলাগুলোতে কাগজের ব্যালটে ভোটগ্রহণ হবে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালায় দলীয় প্রতীক থাকলেও এবার প্রার্থী মনোনয়ন দেবে না বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য উম্মুক্ত রাখা হয়।

অপরদিকে নির্বাচন কমিশনও স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিধান শিথিল করে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ২৫০ জন ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর জমা দেওয়ার বিধান বাতিল করা হয়। তবে জামানতের বিধানে কড়াকড়ি করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়ায় অনেক উপজেলায় বিপুলসংখ্যক প্রার্থী হয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ১১ জন করে প্রার্থী হয়েছেন। নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় ১০ জন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

বিএনপি ও জামায়াত নেতারা যেসব উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। এ উপজেলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান মুকুল চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাকি প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ রশিদ, মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি মাকসুদ হোসেন, তার ছেলে মাহমুদুল হাসান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ান।

প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল বলেন, ‘এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে না। তাই আমি মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি। আল্লাহতায়ালা যাকে নির্ধারণ করে রেখেছেন তিনিই নির্বাচিত হবেন। আমি জনগণের খেদমত করে যাচ্ছি। এটাই আমার মূল লক্ষ্য’।  

এছাড়া নাটোরের ধামইরহাট উপজেলায় বিএনপি নেতা মো. আয়েন উদ্দিন ডালিম; মহাদেবপুরে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান লস্কর তপু; কুমিল্লার মেঘনায় উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. রমিজ উদ্দিন; একই উপজেলার নাঙ্গলকোটে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. মাজহারুল ইসলাম; চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় বিএনপি নেতা মো. আশরাফ হোসেন আলিম ও তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল রাইহান; ভোলাহাট উপজেলায় বিএনপির মোহাম্মদ বাবর আলী, মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও ইয়াজদানী আলীম আল রাজী; ময়মনসিংহের ফুলপুরে পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমরান হাসান পল্লব চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। 

একইভাবে নাটোর সদর উপজেলায় বিএনপি নেতা গোলাম সরোয়ার ও বিএনপি কর্মী সাবেক ভিপি মো. ইসতেয়াক আহম্মেদ (হিরা); একই জেলার নলডাঙ্গা উপজেলায় বিএনপির উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি সরদার আফজাল হোসেন; পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান ফায়জুল কবির তালুকদার; বান্দরবন সদর উপজেলায় জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কুদ্দুছ; নওগাঁর মহাদেবপুরে থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. সাজ্জাদ হোসেন; সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক ভাস চেয়ারম্যান গৌছ খান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেবুল মিয়া ও যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন।  
সেইসাথে আরও অনেক উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলটির অনেক নেতা প্রার্থী হয়েছেন। 

জামায়াত

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা আমির আব্দুর রশিদ পাটোয়ারী, নাটোরের ধামইরহাট উপজেলায় নায়েবে আমির মাওলানা মো. আতাউর রহমান, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা আমির ওলিউর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে সাবেক জামায়াত নেতা মো. সিরাজুল ইসলাম, কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় জেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক সুজা উদ্দিন জোয়ার্দার, দিনাজপুরের বিরামপুরে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির এনামুল হক, লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমান এবং সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা আমির নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। এর বাইরে বেশ কয়েকটি উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত নেতারা প্রার্থী হয়েছেন। 


উপজেলা নির্বাচন   বিএনপি   জামায়াত   নির্বাচন কমিশন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নওগাঁয় বিএনপির ৯ নেতা-কর্মী কারাগারে

প্রকাশ: ০৯:২২ এএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নয় নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তারা সবাই হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন।

 

সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে আদালতে হাজির হয়ে আবার জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন নওগাঁর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ।


বিষয়টি নিশ্চিত করেন আসামিদের আইনজীবী এডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবু মাসুম ।


তিনি বলেন, ‘আদালত তাদের সবাইকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আমরা আবার জামিন চাইব।’

 

কারাগারে পাঠানো বিএনপির নেতা-কর্মীরা হলেন, আত্রাই উপজেলা পাঁচুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নিয়ামত আলী বাবু, আত্রাই উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মোঃ আসাদুজ্জামান বুলেট, পাঁচুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য পারভেস, আয়নুল, আত্রাই উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশ, আত্রাই উপজেলা বিএনপি নেতা আব্দুল আওয়াল, রায়হান, ওহাব ও লাবু।

 

আদালত সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২ নভেম্বর আত্রাই উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা শান্তি মিছিলের আয়োজন করে। মিছিলটি ভড়তেঁতুলিয়া আহসানগঞ্জ স্টেশন হইতে আত্রাই আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস সামনে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে উপজেলার ভড়তেঁতুলিয়া এলাকায় আমতলী সিএনজি স্ট্যান্ডে পৌঁছালে তাদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

 

এ ঘটনায় ওই দিন আত্রাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আক্কাস আলী প্রামাণিক বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ১২ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪০-৫০ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন।

 

এ মামলায় ওই ৯ জন গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ৮ সপ্তাহের হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পান। জামিনের মেয়াদ শেষে আজ নওগাঁর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে মামলার এজহারভুক্ত বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নয় নেতা-কর্মী পুনরায় জামিনের আবেদন করেন।


আসামি পক্ষে জামিনের শুনানি করেন আইনজীবী এডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবু মাসুম। তবে জামিনের বিরোধিতা করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি আবদুল খালেক। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।


বিস্ফোরক দ্রব্য আইন   বিএনপি নেতা কারাগারে   জামিন নামঞ্জুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন: ছেলের সঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্যের মনোনয়নপত্র জমা

প্রকাশ: ০৯:১৭ এএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে আশীক আলী। আয়েশা ফেরদৌস এর আগে দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য ছিলেন। তার ছেলে আশীক আলী হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

গতকাল সোমবার (১৫ এপ্রিল) মা-ছেলে মনোনয়নপত্র জমা দেন। একই পদে প্রার্থী হতে মুশফিকুর রহমান নামে আরেক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, তবে তার কোনো পদ–পদবি নেই। মুশফিকুর রহমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন।

ছেলের সঙ্গে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউস বলেন, ‘এটি আমাদের পরিবারের নিয়ম। একজন কোনো পদে প্রার্থী হলে তাঁর সঙ্গে ডামি হিসেবে পরিবারের আরেকজন সদস্য প্রার্থী হন। সেই হিসাবে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছি। পরিস্থিতি দেখে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেব।’

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হাতিয়া উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যানের দুটি পদে একজন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এদিকে সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে দুজন এবং ভাইস চেয়ারম্যানের দুটি পদে চারজন করে আটজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া দুজন হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান এইচ এ এম খায়রুল আনম চৌধুরী এবং নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক ওরফে সাবাব চৌধুরী।

এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি একই উপজেলার চর বাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে ৪০ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলে দীর্ঘদিন ধরে  খায়রুল আনম চৌধুরী ও একরামুল করিম চৌধুরীর বিরোধ রয়েছে। এর জেরে খায়রুল আনমের বিরুদ্ধে ছেলে আতাহার ইশরাককে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছেন একরামুল। আতাহার ইশরাক কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর গ্রামের বাসিন্দা। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার উদ্দেশ্যে তফসিল ঘোষণার কয়েক মাস আগে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে সুবর্ণচরের চর জুবলীতে স্থানান্তর করেছেন তিনি।

জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা নওয়াবুল ইসলাম বলেন, হাতিয়া ও সুবর্ণচর উপজেলায় মোট ১৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।


উপজেলা নির্বাচন   মনোনয়নপত্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

শতাধিক উপজেলায় বিএনপি-জামায়াত প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল

প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলার মধ্যে প্রায় শতাধিক উপজেলায় বিএনপি-জামায়াত প্রার্থীরা মনোনয়ন দাখিল করেছেন। বিভিন্ন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, ১৫০ উপজেলায় প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে। প্রথম ধাপের উপজেলা ভোটে মনোনয়ন দাখিল করেছেন ১ হাজার ৮৯১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে শতাধিক উপজেলায় বিএনপি-জামায়াতের একক প্রার্থী মনোনয়ন দাখিলের খবর পাওয়া গেছে। আজ বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ছিল।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সহ সব ধরনের নির্বাচন বয়কট করলেও উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে কৌশলী অবস্থান নিয়েছে বিএনপি এবং তার মিত্র জামায়াত। যেহেতু আওয়ামী লীগ এবার উপজেলায় দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না এবং দল থেকে কোন প্রার্থীকেও মনোনয়ন দেবে না সেজন্যই এই বিএনপি-জামায়াত এবার কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে।

বিএনপি এবং জামায়াতের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, উপজেলা নির্বাচনে সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে নামব তারা। আওয়ামী লীগের মতো তারাও স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করবে। তবে এক্ষেত্রে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করেছে দীর্ঘদিনের মিত্র এই দুই রাজনৈতিক দল। আর এই কৌশলগত অবস্থান হল বিএনপি এবং জামায়াত শতাধিক উপজেলায় একক প্রার্থী দিয়েছে। যেখানে যেখানে বিএনপি প্রার্থীর শক্ত অবস্থান রয়েছে বা জনপ্রিয়তায় তিনি এগিয়ে আছেন সেখানে জামায়াত কোন প্রার্থী দেয়নি। একই ভাবে যেখানে যেখানে জামায়াতের প্রার্থী জনপ্রিয়তা এগিয়ে আছেন সেখানে বিএনপি কোন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেননি। যেহেতু উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন করছেন এবং ইতোমধ্যে তার দলীয় কোন্দল প্রকাশ্য রূপ লাভ করেছে এমন অবস্থায় বিএনপি-জামায়াতের নিশ্চিত জয়ের জন্য এই কৌশল বলে জানা গেছে। বিশেষ করে  সিলেট, খুলনা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলার উপজেলা গুলোতে জামায়াত তাদের একক প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল নিশ্চিত করেছে বলে প্রাপ্ত খবরে পাওয়া গেছে।

এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত তার কৌশলের খেলায় সাফল্য পায় কিনা।

শতাধিক উপজেলা   বিএনপি-জামায়াত   মনোনয়ন দাখিল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিপি নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রকাশ: ০৮:১২ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। সোমবার (১৫ এপ্রিল) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার শুনানি শেষে সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামের বিচারক জহিরুল কবির এই আদেশ দেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নিয়ে ‘কটূক্তি’র অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ছাত্রলীগের সাবেক এক কর্মী।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ১৪ জুন ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক আইন সম্পাদক শাহরিয়ার ইয়াসির আরাফাত বাদী হয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এতে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হককে আসামি করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়,  ২০২২ সালের ১ জুন নূর বাংলা নিউজ বিডি নামের একটি পেজ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী, ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে নিয়ে ‘কটূক্তি’ করেন এবং ফেসবুকে পোস্ট করেন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশস‍হ বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী জানান, ছাত্রলীগ কর্মীর করা মামলার তদন্তের জন্য দুই বছর আগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। তদন্ত শেষে সিআইডি সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দেয়। সোমবার আদালত তা গ্রহণ করে নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

নুরুল হক নুর  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন