নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০১৯
আসন্ন বাজেট অধিবেশনে অন্যরূপে দেখা যাবে জাতীয় সংসদকে। এবারই প্রথম জাতীয় সংসদে বিরোধী দল স্বরুপে আবির্ভূত হবে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। জাতীয় পার্টি, বিএনপি এবং গণফোরাম সংসদে ঐক্যবদ্ধভাবে বিরোধী দল হিসেবে কাজ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ ব্যাপারে তাঁদের মধ্যে আলাপ আলোচনা চলছে। জাতীয় পার্টির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন যে, ‘এবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ অসুস্থ। জিএম কাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় পার্টিকে আপনারা সত্যিকার বিরোধী দল হিসেবে দেখবেন। সরকারের বিভিন্ন ভুল সিদ্ধান্ত, নীতির সমালোচনা করা হবে বাজেট অধিবেশনে।’
উল্লেখ্য, আগামী ১১ই জুন থেকে বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে। ১৩ই জুন জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী বাজেট পেশ করবেন। বাজেটকে ঘিরেই রাজণীতিতে নতুন মেরুকরণের চেষ্টা করছে দেশের বিরোধী দলগুলো। জাতীয় সংসদের সূত্রে জানা গেছে, প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, সংসদে নাটকীয়ভাবে শপথ নেওয়া বিএনপি এবং দুই সদস্যবিশিষ্ট গণফোরাম অভিন্ন অবস্থান নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে চায় জাতীয় সংসদে। জাতীয় পার্টির একজন নেতা বলেছেন যে, ‘সংসদকে আমরা প্রাণবন্ত করতে চাই। এমন একটি প্লাটফর্ম করতে চাই সংসদকে যেখানে মানুষের অভাব-অভিযোগ, দুঃখ, দুর্ভাবনা, কষ্টের কথাগুলো আমরা বলতে পারবো এবিং এর মাধ্যমেই সংসদ কার্যকর হওয়া সম্ভব।’
একটি সূত্র বলছে যে, বিএনপির যে পাচজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য সংসদে গেছেন তাঁরা এবিষয়ে জাতীয় পার্টির সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদেরকে বিএনপি নেতৃবৃন্দ ব্রিফ করছেন তাঁদেরকে কীভাবে কথা বলতে হবে। তাঁরা মূলত এই বাজেট অধিবেশনে তিনটি বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। একটা হলো, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি; দ্বিতীয়, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের বিষয়; তৃতীয়ত, বাজেটে বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনা করা।
সূত্রগুলো বলছে, ঈদের পরপরই সংসদ অধিবেশনের আগে সবগুলো বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধভাবে বসবে এবং সংসদে তারা কোন কোন বিষয়ে সরকারকে আক্রমন করবে, সরকারের সমালোচনা করবে তা নির্ধারণ করবে বলে জানা গেছে। জাতীয় পার্টির একজন নেতা বলেছেন যে, আমরা যদি কার্যকর সংসদ করতে চাই তাহলে জাতীয় পার্টিকে খোলস ছেড়ে বিরোধী দল হতে হবে। জাতীয় পার্টি গত মেয়াদে যেটা করেছে, সেটা বিরোধী দলের ভূমিকা নয়। বরং জাতীয় পার্টি যদি সত্যিকার অর্থে বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হতে চায়, তাহলে এটাই তার সুযোগ এবং সবগুলো বিরোধী দলকে নিয়েই সংসদকে মুখোর রাখতে পারে।
উল্লেখ্য যে, ১৯৯১ সালেও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সবগুলো বিরোধী দলই ঐক্যবদ্ধভাবে সংসদে কাজ করেছে। এবার যদিও বিরোধী দলের সংখ্যা কম। তবে বিএনপির নেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ মনে করছেন যে, বিরোধী দল কম হলেও আমরা অর্থবহ ভূমিকা রাখতে পারবো বলে জানা গেছে। একটি সূত্র আভাস দিয়েছে যে, জাতীয় পার্টি বিএনপি এবং গণফোরামের সঙ্গে অভিন্ন অবস্থান না নিলেও সরকারের ভুল পদক্ষেপ ও বিভিন্ন কার্যক্রমের মুখোমুখি হবে আওয়ামী লীগের শরিক ওয়ার্কাস পার্টি এবং জাসদও। তারা সরকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এবার জাতীয় সংসদ মুখোর করবে বলে জানা গেছে। কাজেই বাজেট অধিবেশনে সরকারকে একটি নতুন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। এতদিন সংসদের অধিবেশনে যেমন ছিলো আওয়ামী লীগের স্তুতিতে ভরা এবং এবার হয়তো সেই পরিস্থিতি পাল্টে যাবে বা বিএনপির গণফোরাম সম্মিলিতভাবে সমালোচনা করবে। এরফলে সংসদ কতটা প্রানবন্ত হয় সেটাই দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।