নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২১ মে, ২০১৯
বাংলাদেশে এখন বালিশ বিতর্ক চলছে। রুপপুর পারমানবিক প্রকল্প বালিশ ক্রয় কেলেংকারীর পর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সর্বত্র আলোচনা বালিশের দাম কত হতে পারে। ঢাকা শহরে দুইশত থেকে কুড়ি হাজার টাকা পর্যন্ত দামের বালিশ পাওয়া যায়। সাধারণ মধ্যবিত্তের বালিশের দাম দুইশ থেকে চারশ টাকার মধ্যে। ভালো তুলার বালিশের দাম ৫শ থেকে সাতশো টাকা? গুলশানের অভিজাত দোকানে পাখির পালকের বালিশের দাম ১০ থেকে কুড়ি হাজার টাকার মধ্যে। এসব বিদেশ থেকে আমদানী করা। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দামী বালিশ তৈরী করে VAN DER HILST. এই কোম্পানির হাতে বানানো সাধারণ বালিশের মূল্য ৪ হাজার ৯৯৫ ডলার, বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এই কোম্পানী সম্প্রতি তাদের হাতে বানানো বালিশের গোল্ড এডিশন এনেছে যার মূল্য ৫৬ হাজার ৯৯৫ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য প্রায় ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
বিশ্বে বালিশের যে দামই থাকুক, বাংলাদেশে বালিশ কেনায় রেকর্ডটি করেন বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৯১ সালে প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় এলে তার জন্য ৭৮হাজার টাকা মূল্যের ৬টি বালিশ কেনা হয়েছিল। গণপূর্ত বিভাগের নথিপত্রে দেখা যায় ১৯৯১ সালের ২৯ মার্চ, বেগম খালেদা জিয়ার ক্যান্টনমেন্টের মঈনুল হোসেন সড়কের বাসা সংস্কার এবং নতুন আসবাবপত্রে সজ্জিতকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক পরিপত্রে (স্বারক নং ৬/৯১/ই/প্র) বলা হয়, ‘যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন ব্যবহার করবেন না, সে কারণেই ৬ নং শহীদ মঈনুল হোসেন সড়কের বাসভবনের সংস্কার এবং পূনঃবিন্যাস প্রয়োজন। নিম্নের তালিকা অনুযায়ী, মালামাল দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন সজ্জিতকরণ প্রয়োজন;’ তালিকায় মোট ১২১টি আইটেম ছিল, এর মধ্যে কুশন, বালিশ, ম্যাট্রেস, চাদর, খাট ছিলো অন্যতম। এই পণ্যগুলো কেনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কয়েকটি চিঠি চালাচালি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রতিটি ৭৮ হাজার টাকা মূল্যে প্যারিস থেকে ৬টি বালিশ কেনা হয়েছিল। ৬টি বালিশের তৎকালীন মূল্য ছিল চার লাখ ৬৮ হাজার টাকা। এই বালিশগুলো প্যারিস থেকে ঢাকায় আনতে খরচ হয়েছিল এক লাখ ১৫ হাজার টাকা। এ নিয়ে অডিট আপত্তি হয়েছিল ১৯৯২ সালে। তখন আপত্তির জবাবে বলা হয়েছিল যে, প্রধানমন্ত্রীর জরুরি প্রয়োজনের কারণে কার্গো বিমানে বালিশ আনতে হয়েছে। বেগম জিয়া অবশ্য দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হয়ে আগের রেকর্ড ভেঙে ফেলেন। দলিলপত্রে দেখা যায়, ২০০২ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য ইতালী থেকে ৬টি কুশন পিলো কেনা হয়। যার প্রতিটির মূল্য ছিলো ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা। ৬টি বালিশের মূল্য পরে প্রায় আট লাখ টাকা।
বালিশ বিলাশে এরশাদও কম যান না। এরশাদ রাষ্ট্রপতি হলেও বাস করতেন সেনানিবাসে। কিন্তু তার সব কেনাকাটা হতো বঙ্গভবন থেকে। এরশাদ বালিশ কেনেন সর্বশেষ ১৯৮৮ সালের জুলাই মাসে। এই বালিশগুলো আনা হয়েছিল ভারতের জয়পুর থেকে। সেই সময় প্রতিটি বালিশের মূল্য ছিলো ১৫ হাজার টাকা। ১২টি বালিশের মূল্য দাঁড়ায় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা।
সে তুলনায় চারবারের প্রধানমন্ত্রীর বালিশ বিলাসীতা একদমই নেই। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হবার পর গণপূর্ত বিভাগ গণভবনের সংস্কার এবং আসবাবপত্র সংস্কার করে। এসময় ১৭৫ টাকা মূল্যের ৪টি বালিশ দেওয়া হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর জন্য। ২০০৯ সালে গণভবনের জন্য আবার ৬টি বালিশ কেনা হয়, এগুলোর প্রতিটির মূল্য ২১০ টাকা করে।
রুপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের বালিশ ক্রয়ে সম্ভবত বেগম জিয়া বা এরশাদের বালিশ ক্রয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ ছিলেন এজন্যই প্রতিটি বালিশ ৫ হাজার ৯৫৭ টাকায় কেনা হয়েছে। তাঁদের জন্য এই টাকা তো কমই!
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।