ইনসাইড পলিটিক্স

কুখ্যাত রাজনীতিবিদদের বংশধররা কে কোথায়?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ২৬ মে, ২০১৯


Thumbnail

১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে দেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের মত দেশের ক্রান্তিকালে কিছু রাজনীতিবিদ হেটেছেন বাঙালিদের বিপক্ষে। শুধু হাটেইনি, নি:শেষ করে দেওয়ার জন্য গঠন করেছে রাজাকার, আলবদর, আল শামসের মত বাহিনী। সেইসব রাজনীতিবিদদের বলা হয় বাংলাদেশের ইতিহাসের কলংকিত মানুষ। সেই ১৯৭১ সালের পর বাঙ্গালি জাতির জন্য আরেক কলংকিত অধ্যায় শুরু হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে খুন করা হয়। দেশ শাষন শুরু করে এক কুচক্রী মহল। বাংলাদেশের ইতিহাসের এই দুই অধ্যায়ে পাওয়া যায় এক শ্রেনীর রাজনীতিবিদকে। যারা নিজেদের স্বার্থের জন্য নৃশংস কাণ্ড ঘটিয়েছেন। কলংকিত করেছেন দেশকে। যাদের জাতি কখনো ক্ষমা করবে না। সেইসব নেতাদের আজ অনেকেই বেঁচে নেই। কিন্তু তার পরিবার আছে। বহাল তবিয়তে দেশে বিদেশে বেশ ভালো অবস্থানেও আছে। থাকবেই না কেন, যুগে যুগে তারা ঠিকই মদদ পেয়েছে এক শ্রেনীর স্বার্থান্বেষী মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে। তবে বেশিরভাগের পরিবারেরই তেমন খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাদের বংশধররা জাতির সামনে কখনো মাথা উচু করে দাড়াতে পারেননি। অর্থ প্রতিপত্তিতে হয়তো তারা বড় হয়েছেন। কিন্তু সেটা তাদেগর করতে হয়েছে মুখোশের আড়ালে। জেনে নেয়া যাক সেইসব কুখ্যাত রাজনীতিবিদদের বংশধররা কে কোথায় আছেন। 

পঁচাত্তরের বিতর্কিত রাজনীতিবিদ:

খন্দকার মোশতাক আহমেদের বংশধর...

খন্দকার মোশতাক আহমদ বঙ্গবন্ধুর অতিভক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর তোষামোদী করে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় বিদ্যুৎ, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রীর পদটিও বাগিয়ে নেন। তিনি ছিলেন, বাকশালের তৃতীয় শীর্ষ নেতা। সব সময় মাথায় থাকত জিন্নাহ-ক্যাপ, হাতে ধূমপানের পাইপ। অতিবিনয়ী ভদ্রতার মুখোশপরা মুখচোরা হাসিতে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতেন। ১৫ আগস্টের পরিকল্পনাকারীদের অন্যতম ছিলেন তিনি।

মীর জাফরী কায়দায় রাষ্ট্রপতির পদে ক্ষমতায় মাত্র ৮৩ দিন অবস্থান করতে পারলেও পরে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের চালে ক্ষমতাচ্যুত হতে বাধ্য হন। আশ্রয় নেন পুরান ঢাকার আগামাসি লেনের বাড়িতে। চারতলার বাড়িটির তিনতলার সুরক্ষিত একটি কক্ষে বাস করতেন। তার শাসনামলেই চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মো. মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (ওই বছরের ৩ নভেম্বর) হত্যা করা হয়।

মোশতাক আহমেদ ১৯৭৫ সালের ৫ নভেম্বর সেনাবিদ্রোহের দ্বারা অপসারিত হন। ১৯৭৬ সালে মোশতাক আহমেদ ডেমোক্রেটিক লীগ নামক এক নতুন দল প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর সামরিক শাসককে অপসারণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেল থেকে মুক্তিলাভের পর তিনি আবার সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৯৬ সালের ৫ মার্চ মোশতাক মৃত্যুবরণ করেন। ফলে হত্যার দায় থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। জনগণের ক্ষোভ আর ঘৃণার মুখে পুলিশ প্রহরায় দাউদকান্দির দশপাড়ায় তাকে দাফন করা হয়। বর্তমানে সেখানে সীমানা প্রাচীরে ঘেরা তার বাড়িতে দোতলা একটি ভবন রয়েছে। এছাড়াও একটি মসজিদ ও পারিবারিক কবরস্থানও রয়েছে। অন্য কবরে নামফলক থাকলেও মোশতাকের কবরে তা নেই। প্রথমে থাকলেও পরে তা সরিয়ে ফেলা হয়।

মোশতাকের একমাত্র ছেলে খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, মেয়ে খন্দকার শিরিন সুলতানা ও ডা. খন্দকার নাজনীন সুলতানা লন্ডনে থাকেন।

মোশতাকের একমাত্র ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ আগে মাঝে মধ্যে পরিবারের সদস্যদের কবর জিয়ারত করতে বাড়ি এলেও গত ৭-৮ বছর যাবৎ জনরোষের ভয়ে বাড়িতে আসেন না। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে আলোচিত বাড়িটি।

শুধু মোশতাক নয়, তারাও...  

মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রথম ডেপুটি স্পিকার ও পরে স্পিকার নির্বাচিত হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদউল্লাহকে ১৯৭৩ সালে প্রথম রাষ্ট্রপতিও করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। পরে ১৯৭৫-এর শুরুর দিকে মোহাম্মদউল্লাহকে মন্ত্রী হিসেবে নিজের মন্ত্রিসভায় স্থান দেন বঙ্গবন্ধু। সেই মোহাম্মদউল্লাহ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরপরই খন্দকার মোশতাকের সরকারে যোগ দেন। ছিলেন মন্ত্রী জিয়ার সরকারেও। এমনকি জিয়া হত্যাকাণ্ডের পর সাত্তার সরকারের একদিনের উপ-রাষ্ট্রপতির দায়িত্বও পালন করেন মোহাম্মদউল্লাহ। একাত্তরে মুজিবনগর সরকারের ঘোষণাপত্র পাঠ করা অধ্যাপক ইউসুফ আলী বঙ্গবন্ধু সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ১৫ আগস্টের পর তিনিই আবার খুশি মনে যোগ দিয়েছেন খুনি মোশতাকের সরকারে। ইউসুফ আলী পরে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ছাত্রলীগ নেতা থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া কে এম ওবায়দুর রহমান দলীয় এমপি ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি মোশতাক সরকারের ক্ষমতাধর মন্ত্রী হিসেবে দেখা দেন। মুক্তিযুদ্ধের পরের প্রথম সংসদে আওয়ামী লীগের হুইপ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুর ও মাহবুব আলম চাষী একইভাবে বঙ্গবন্ধুর আশীর্বাদ পাওয়া সত্ত্বেও পল্টি দিয়েছেন রাতারাতি। পরবর্তীতে এদের পরিবারের তেমন কাউকে রাজনীতিতে দেখা যায়নি। বাবার পরিচয়ে তারা বাংলাদেশে বড় কোন স্থানে যেতে পারেননি বলে নাম ঠিকানাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী কেএম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ।

একাত্তরের বিতর্কিত রাজনীতিবিদ:

সালাউদ্দীন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বংশধর...

গভীর সংকট অতিক্রম করছে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি হওয়া চট্টগ্রামের সাবেক বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পরিবার। সাকা না থাকায় এলাকার রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে পরিবারটি। বড় ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী এখন সিঙ্গাপুরে, সাকার আরেক ছেলে ফায়েজ কাদের চৌধুরী লন্ডনে, মেয়ে ফারজিন কাদের চৌধুরী কানাডায় এবং স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী ঘুরেফিরে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বিদেশে থাকছেন। সাকার ছেলে মেয়েরা দেশের বাইরে পড়াশুনা করলেও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত। বিদেশে এখন তাদের একমাত্র কাজ সরকারের ক্ষতি করা।  

গোলাম আযমের বংশধর...

জামায়াতে ইসলামীর প্রাক্তন আমির গোলাম আযমের ছয় ছেলে। কোন কন্যা সন্তান নেই। নিজে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হলেও সন্তানদের তিনি ইংরেজি ও আধুনিক শিক্ষা দিয়েছেন। তার একটি ছেলেকেও মাদ্রাসায় পড়াননি।

গোলাম আযমের বড় ছেলের নাম মামুন আল আযমী। দীর্ঘদিন তিনি ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের জেদ্দায় স্ত্রী-সন্তানসহ বসবাস করছেন।

দ্বিতীয় ছেলে আমিন আল আযমী লন্ডনে পড়ালেখা শেষ করে সেখানেই ব্যবসা ও বসবাস করছেন। তৃতীয় ছেলে আবদুল্লাহিল মোমেন আযমী। বর্তমানে ম্যানচেস্টার সিটিতে পরিবারসহ বাস করছেন। চতুর্থ ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমী। নটরডেম কলেজে পড়ালেখা শেষ করে এরশাদ সরকারের প্রথম দিকে সেনাবাহিনীতে কর্মজীবন শুরু করেন। সর্বশেষ সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি বরখাস্ত হন। পঞ্চম ছেলে নোমান আল আযমী। লন্ডনে পড়ালেখা শেষ করে সেখানেই ব্যবসা ও বসবাস করছেন।

ছোট ছেলে সালমান আল আযমী ভারতের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি লিভারপুল হোপ ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন। গোলাম আযমের এই ছয় ছেলের ঘরে ২০ জন নাতি-নাতনি রয়েছে। তাদের প্রায় সবাই লন্ডনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছেন।

মতিউর রহমান নিজামীর বংশধর...

যুদ্ধাপরাধের রায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। মতিউর রহমান নিজামী চার ছেলে ও দুই মেয়েসহ মোট ছয় সন্তানের জনক। বড় মেয়ে মোহসিনা ফাতেমা বর্তমানে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তার স্বামী সাইফুল্লাহ মানসুর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে বিটিভির সংবাদ পাঠক ছিলেন। তবে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি আর সুবিধা করতে পারেননি। বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারী কলেজে শিক্ষকতা করছেন। বড় ছেলে ড. নাকিবুর রহমান মালেয়শিয়াতে পড়াশুনা করেছেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন। দ্বিতীয় ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। রাবেয়া ভূঁইয়া একাডেমিতে আইন বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করে লন্ডন গিয়ে বার-এ্যাট- ল’ ডিগ্রী অর্জন করেছেন তিনি। ছেলেদের মধ্যে কেবল নাজিব মোমেনই দেশে অবস্থান করছেন। তিনি বর্তমানে হাইকোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত। নিজামীর তৃতীয় ছেলে ডাঃ নাইমুর রহমান খালেদ পাকিস্তানে পড়াশুনা করে অস্ট্রেলিয়ার এক মেডিকেলে চিকিৎসক হিসেব কর্মরত আছেন। নিজামীর ছোট ছেলে এখনো ছাত্র। মালেয়শিয়ায় পড়াশুনা করেন। আর বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে সরকার বিরোধী কথাবার্তা বলেন।

ছোট মেয়ে খাদিজা পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে লন্ডনের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। ছোট মেয়ের স্বামী ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম। তিনি এক সময় শিবির সেক্রেটারি ছিলেন। নজরুল ইসলাম বর্তমানে লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত।

নিজামীর স্ত্রী সামসুন্নাহার নিজামী গুলশানে একটি ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে তিনি জামাতের নারী শাখার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।

আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের বংশধর...

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবাই আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত। বড় ছেলে আলী আহমেদ অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ইউনিভার্সিটি থেকে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে সেখানেই আছেন। দ্বিতীয় ছেলে আহমেদ আহকিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে উচ্চশিক্ষা নেন। আরেক ছেলে আহমেদ মাবরুর দিগন্ত টিভিতে হেড অব নিউজ ছিলেন। একমাত্র মেয়ে তামরিনা আল মানারাত ইউনিভার্সিটির ইংলিশের প্রভাষক।

কাদের মোল্লার বংশধর...

শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর চার মেয়ে ও দুই ছেলে। তারাও সবাই দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন।

মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বংশধর...

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। তার ৫ ছেলে, এক মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে হাসান ইকবাল ওয়ামী বর্তমানে বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। বাকি ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা এখনো শেষ হয়নি। দেশের শীর্ষ স্থানীয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলে পড়ছেন তারা।

মীর কাশেম আলীর বংশধর...

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে ফাঁসিতে ঝোলা জামায়াতের অর্থ যোগানদাতার শীর্ষনেতা ধনকুবের মীর কাশেম আলী। তার দুই ছেলে তিন মেয়ে। ছেলে মোহাম্মদ বিন কাশেম (সালমান) আল মানারাত ইংরেজী মিডিয়াম থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল করেছেন। এরপর পাকিস্তান ডেন্টাল কলেজে পড়েছেন। আরেক ছেলে মীর আহমেদ বিন কাশেম (আরমান) আল মানারাত থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল সম্পন্ন করেন। এরপর লন্ডনে বার এট ল’সম্পন্ন করেছেন। মেয়ে হাসিনা তাইয়্যেবা অনার্স এবং মাস্টার্স করেছেন হোম ইকোনমিক্স কলেজ থেকে। অপর মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া আল মানারাতে স্কুল ও কলেজ থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল সম্পন্ন করার পর আল মানারাত ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ পড়ছেন। আরেক মেয়ে তাহেরা হাসনিন আলও পড়াশুনা করেছেন মানারতে।

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সরকার জুলুমের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৮:৪৯ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার তাদের সব অপকর্মকে আড়াল করতেই জুলুমের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে। অপরাধ না করেও মিথ্যা মামলায় আসামি হওয়া, গ্রেপ্তার হওয়া ও কারাগারে যাওয়া এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারির আওয়ামী ডামি সরকার নব্য বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর অবর্ণনীয় জুলুম, অত্যাচার অব্যাহত রেখেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‌‘দেশের মানুষ নিত্যপণ্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে যখন দিশেহারা তখন দখলদার আওয়ামী সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের নতুন মিথ্যা মামলায় আটকসহ আদালতকে দিয়ে সাজা প্রদান ও জামিন নামঞ্জুরের মাধ্যমে কারান্তরীণের অমানবিক খেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ক্ষমতাসীনদের নির্মম আচরণ, দৌরাত্ম্য এবং দাপটে মানুষ এখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আইনের শাসনহীন এই দেশে নিরপরাধ মানুষরাই সরকারের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের পর কতৃর্ত্ববাদী আওয়ামী সরকার তাদের দুঃশাসন চালাতে আরও বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। তবে এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে সংগ্রামী জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’

তিনি বলেন, অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য আবুল খায়ের লিটন, হাজারীবাগ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মজু, ২২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নুরুল হক আরজু, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, সহসভাপতি ইসলাম উদ্দিন, হাজারীবাগ থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলম হোসেন, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মুরাদ হোসেন মন্টি, ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন, হাজারীবাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. মাসুম, ১৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হোসেন, মহিলা দল নেত্রী ফাহমিদা এবং বংশাল থানার অপর একটি মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৬ জন নেতাকর্মী যথাক্রমে মো. সোহেল, মো. সিদ্দিক, সাহেদ, আনিস, সাবের ও মাসুদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, সাজা বাতিল এবং অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানাচ্ছি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কেন্দ্রের নির্দেশ মানছেন না এমপি-মন্ত্রীরা

প্রকাশ: ০৯:০৭ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব বিস্তার না করতে। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে হয়, কেউ কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। প্রশাসন কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বিঘ্নে ভোট দানের ব্যবস্থা করেছেন নির্বাচন কমিশন। অবাধ-সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেও সাফ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ এই হেভিওয়েট নেতা। 

শুধু তাই নয়, এর আগে একাধিকবার আওয়ামী লীগ সভাপতি দলীয় বিভিন্ন ফোরামে এ নির্দেশ দেন। দলের সাধারণ সম্পাদক সহ শীর্ষ নেতারাও নিয়মিত সংবাদ সন্মেলনগুলো এই বিষয়কে সামনে নিয়ে এসেছেন। বিশেষ করে এবার উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না। দল থেকে কাউকে মনোনয়নও দেবে না। এমনকি দলের কোন নেতাকর্মী দলীয় পদ-পদবীও ব্যবহার করে নির্বাচন করতে পারবে না। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ মন্ত্রী-এমপিরা যেন কোন প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান না নেয় কিংবা সমর্থন না জানায় সে ব্যাপারে বারংবার হুশিয়ার উচ্চারণ করে আসছে দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা। কারণ আওয়ামী লীগ চায় নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় এবং নির্বাচনে যেন কোন ধরনের কোন্দল বা সহিংসতার ঘটনা না ঘটে।

তবে দলের এই নির্দেশনা মানছে না আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা। নেত্রকোনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আহমদ হোসেনের কথাই ধরা যাক। দলীয় নির্দেশ অমান্য করে বিএনপির সাবেক নেতা শিল্পপতি আসাদুজ্জামান ওরফে নয়নকে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

আসাদুজ্জামান বিএনপির সহযোগী সংগঠন তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। পেশায় ব্যবসায়ী ওই ব্যক্তি এলাকায় বিএনপির নেতা হিসেবে পরিচিত। শনিবার রাতে সংসদ সদস্য তাকে পছন্দের প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করেন। এ–সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

শুধু আহমদ হোসেন একা নয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে কিংবা নিজেদের প্রভাবপত্তি বাড়ানোর কৌশল হিসেবে মাইম্যানকে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা। আর এর ফলে স্থানীয় রাজনীতিতে দলীয় কোন্দল আর বাড়বে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয় আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনকে কতটুকু অভ্যন্তরীণ কোন্দল বা সহিংস মুক্ত রাখতে পারে।

উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ   মো. আহমদ হোসেন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এখনও বিএনপিতে বিভ্রান্তি

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আসন্ন উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গতকাল সোমবার রাতে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বর্জনের সিদ্ধান্ত হলেও নির্বাচন নিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি স্পষ্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত জানানো হলেও দলীয় অবস্থানের বিষয়ে এখন বিএনপি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বলে দলটির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র দাবি করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকলেও দলের অবস্থান কী হবে-এ বিষয়ে এখনও অস্পষ্টতায় দলটির নেতাকর্মীরা। অর্থাৎ স্বতন্ত্রভাবে দলের কেউ নির্বাচন করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, নাকি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নেবে তা নিয়ে কেন্দ্রের কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা পায়নি তৃণমূল। যে কারণে তারা অনেকটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন।

সূত্রমতে, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ইস্যুতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতারা দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একাংশের নেতাদের মতামত হচ্ছে, যেহেতু এখন কোনো আন্দোলন-সংগ্রাম নেই, সে কারণে নেতাকর্মীদের সক্রিয় এবং ঐক্যবদ্ধ রাখতে কৌশলে হলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত। তা ছাড়া নেতাকর্মীদের একটি অংশকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখা কঠিন হবে।

অন্য আরেকটি অংশের নেতাদের মতামত হচ্ছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা মানে, এই সরকারকে বৈধতা দেওয়া। একই সঙ্গে গত ৭ জানুয়ারি বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও চায় বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। সরকারের এ ফাঁদে কোনো অবস্থায় পা দেওয়া ঠিক হবে না। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। 

দলীয় সূত্রে জানা যায়, প্রথম ধাপে বিএনপি নেতাদের মধ্যে কতজন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তবে তাদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কি না, সে সম্পর্কে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি দায়িত্বপ্রাপ্তদের। ফলে অন্যান্য নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচন বর্জনের কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত দলের অবস্থান কী হবে সেটা নিয়ে বিএনপিতে বিভ্রান্ত এখনও স্পষ্ট। এখন দেখার বিষয় যারা উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করেছেন তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নাকি দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।



উপজেলা নির্বাচন   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

গণতন্ত্র নিয়ে পিটার হাসকে পাল্টা প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের

প্রকাশ: ০৫:২৯ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

গণতন্ত্র প্রশ্নে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে পাল্টা প্রশ্ন করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি পিটার হাসের কাছে জানতে চেয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রে কত ধাপ পিছিয়েছে?

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। 

যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টিক কাউন্সিলের স্বাধীনতা সূচকে ২৫ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের এমন তথ্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটাই যে সত্য তা তো আমরা মেনে নিচ্ছি না। ২৫ ধাপ পিছিয়েছে? আমি রাষ্ট্রদূতকে (মার্কিন) জিজ্ঞেস করতে চাই, আপনার নিজের দেশ গণতন্ত্রে কত ধাপ পিছিয়েছে। সেটার জবাব আগে দিন।

এ সময় উপনির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের অংশগ্রহণ ও গাজায় ইসরাইলের হামলা নিয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

গণতন্ত্র   পিটার হাস   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণবহিষ্কারের শঙ্কা

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির তৃণমূলে গণবহিষ্কারের আশঙ্কা করছেন অনেকে। শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় এই শঙ্কা দেখা দিয়েছে দলটিতে। গতকাল সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা এই রাজনৈতিক দলটি। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

উল্লেখ্য যে, প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে গতকাল রোববার। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলায় ১ হাজার ৮৯১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৯৬, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭১ জন। এর মধ্যে ১২০ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিএনপির ৩৪ ও জামায়াতের ১৫ নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। 

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে যে, যে সমস্ত উপজেলা গুলোতে বিএনপির প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তারা প্রত্যেকেই বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রিয় নেতা। জনগণের মাঝে তাদের আলাদা একটি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চেয়ে জনপ্রিয়তায় এড়িয়ে রয়েছেন বলে ভোটাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এবং উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে স্থানীয় জনগণের পক্ষ থেকেও এক ধরনের চাপ রয়েছে। ফলে এ রকম পরিস্থিতি জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে যদি বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তাহলে বিএনপিতে গণবহিষ্কারের একটা আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য যে, বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যাপারে দলের মধ্যে এক ধরনের অস্পষ্টতা ছিল। বিশেষ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না কিংবা কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেবে না এরকম সিদ্ধান্ত হলে বিএনপির মধ্যে এই অস্পষ্টতা তৈরি হয়। এরকম পরিস্থিতি দলের কেউ নির্বাচন করলে সেটাকে উপেক্ষা করার নীতিগত কৌশল গ্রহণ করেছিল বিএনপি। দলটির একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা বিভিন্ন সময় এ ধরনের ইঙ্গিত দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের দিয়েছিলেন। ফলশ্রুতি সারাদেশে বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির তৃণমূলের জনপ্রিয় নেতারা আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারাও এতদিন বিষয়টিকে এড়িয়ে গেছেন এবং কৌশলগত অবস্থানে ছিলেন। কিন্তু এখন আবার হঠাৎ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও বর্জন করার ঘোষণা দিলেন। এখন বিএনপি যদি এই অবস্থানে অটল থাকেন তাহলে দলটিতে গণবহিষ্কারের ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যে সমস্ত উপজেলায় বিএনপির প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তারা প্রত্যেকই দলে জনপ্রিয় এবং নির্বাচন করার ব্যাপারে তাদের ওপর এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপও রয়েছে। ফলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সম্ভাবনাই তাদের মধ্যে বেশি। আর এ রকম বাস্তবতায় দল তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বিএনপি   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন