নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:২১ পিএম, ২৪ জুন, ২০১৯
কোন্দলে উত্তাল বিএনপিতে এখন ছাত্রদলের বিদ্রাহ চরম পর্যায়ে চলছে। ছাত্রদলের বিদ্রোহের মুখেই লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া আজ জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি দলের কাউন্সিল করতে চান। ডিসেম্বরের মধ্যেই এই কাউন্সিল সম্পন্ন হবে। বিএনপির একাধিক মহলের ধারণা, ছাত্রদলের ক্ষোভ বিক্ষোভ এবং বিদ্রোহ এড়াতেই তারেক জিয়া এই কাউন্সিলের কৌশল গ্রহণ করেছেন। যখনই বিএনপির তার কাউন্সিলের দিন তারিখ ঘোষণা করে, তখনই ছাত্রদল বা অন্য অঙ্গসংগঠনগুলো অসন্তোষ বিক্ষোভ এমনিই থিতিয়ে পড়বে বলে ধারণা করছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। কিন্তু ছাত্রদলের বিদ্রোহের কারণেই হোক আর যে কারণেই হোক, বিএনপিতে যে কাউন্সিল আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে হচ্ছে সেটা নিশ্চিত। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এ ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন, আমরা কাউন্সিলের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল। যদিও তখন তিনি দিনক্ষণ ঘোষণা করেননি। কিন্তু এবার আজ তারেক জিয়া দলের স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যকে কাউন্সিলের তারিখ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্ধারণের জন্য বলেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তারিখ নির্ধারণ করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে, এবারের কাউন্সিল নানাদিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হবে। এবারের কাউন্সিলের মাধ্যমে তরুণ নেতৃত্বর হাতে বিএনপিকে তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
বিএনপির একটি সূত্র বলছে যে, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ক্রমশ বিতর্কিত এবং অজনপ্রিয় হয়ে পড়ার কারণে তাকে সরিয়ে নেওয়া হবে। বিএনপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেছেন, তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ব্যাবহার করেছেন। ব্যবহার শেষ হওয়ার পরে এখন তাকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হবে। এটাই তারেক জিয়ার বৈশিষ্ঠ। তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দিয়ে কি কি কাজ করিয়েছেন জানতে চাওয়া হলে বিএনপির এক নেতা বলেন, তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করিয়েছেন। ড. কামাল হোসেনকে বিএনপির নেতা বানিয়েছেন। এই ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং আলোচনায় কোন রকম ফলাফল ছাড়াই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। ৬ সিট নিয়ে আবার সংসদে গেছে। এই সবগুলো ‘গর্হিত কাজই’ করেছে তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দিয়ে। এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গ্রহণযোগ্যতা বিএনপিতে শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। যে কারণে এখন বিএনপির মধ্যে থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সরানোর জন্য তৃণমূল থেকে জোর দাবী উঠেছে। কাউন্সিলের আগেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে মহাসচিব হতে পারবেন না তা মোটামুটি নিশ্চিত। এখন প্রশ্ন হলো কে হবে বিএনপির পরবর্তী মহাসচিব? এ ব্যাপারে বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, এ ব্যাপারে বিএনপির মধ্যে একাধিক মত আছে। তবে তারেক জিয়ার প্রিয়ভাজন তিনজনের যেকোনো একজন বিএনপির মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। এই কাউন্সিলের মধ্যদিয়ে হয়তো বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনেরও অবসান ঘটবে এবং তারেক জিয়া বিএনপির পূর্ণাঙ্গ চেয়ারম্যান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবেন। তবে মহাসচিব হিসেবে এখনও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিকল্প কে হবেন তা নিশ্চিত হয়নি। তবে তারেক জিয়ার পছন্দের মধ্যে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু এবং মির্জা আব্বাসের নাম আলোচিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। মির্জা আব্বাস যদিও তারেক জিয়ার পছন্দের না কিন্তু ঢাকা কেন্দ্রিক আন্দোলনকে সংগঠিত করার জন্যই মির্জা আব্বাসের নাম বিবেচিত হচ্ছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। যদিও বিএনপিতে বড় একটি অংশ মহাসচিব হিসেবে স্থায়ী কমিটির অন্যতম সিনিয়র সদস্য ডঃ খন্দকার মোশারফ হোসেনকে দেখতে চান। কিন্তু তারেক জিয়া তাঁর ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন। এই পর্যায়ে তিনি কাউকে মহাসচিব বানাতে চান না যিনি তাঁর উপর ছড়ি ঘোরাতে চেষ্টা করবেন বা তাঁকে জ্ঞান দেয়ার চেষ্টা করবেন। কাজেই বিএনপির মহাসচিব যেই হোক না কেন তিনি তারেক জিয়ার অনুগত হবেন।
অন্য একটি সূত্র বলছে যে, বিএনপিতে যাদের তারেক জিয়া চাচ্ছেন তাদের বাইরেও একেবারে তরুণদের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল কিংবা হাবিবুন্নবী সোহেলদের মতো তরুণদের ব্যাপারেও তারেক জিয়ার ভাবনা চিন্তা আছে বলে জানা গেছে। তবে বিএনপির অন্য সূত্রগুলো বলছে যে, জাতীয় রাজনীতিতে বিভিন্ন রকমের আলাপ আলোচনা কথাবার্তার জন্য একটা নূণ্যতম জেষ্ঠ্যতা দরকার হয়। সেইজন্যই হয়তো এই পর্যায়ে এত জুনিয়র কাউকে মহাসচিব পদে দেওয়া হবে না। তবে মহাসচিব যেই হোন না কেন, এই কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপি তার কোন্দল কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করবেন। কিন্তু সেটা কতটকু সফল হবে সেটা সময়ই বলে দিবে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।