নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০১ পিএম, ২৪ জুন, ২০১৯
নির্বাচনেই নির্ধারিত হবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব। অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগ তার কাউন্সিলের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ তার অঙ্গ সহযোগি সংগঠনগুলোর স্থানীয় পর্যায়ের সম্মেলন শুরু করে দিয়েছে। জেলা পর্যায়ের সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামী মাস থেকে। আওয়ামী লীগের এই সম্মেলনগুলোর ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতগুলো সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। তার মধ্যে প্রধান নির্দেশনা হলো তৃনমূলের নেতৃত্বে সমঝোতার মাধ্যমে নয় বা উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়ায় নয়। নির্বাচনের মাধ্যমে করতে হবে।
ইতিমধ্যে আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে যে জেলা পর্যায়ের সম্মেলনগুলো হচ্ছে, প্রত্যেকটা জেলা পর্যায়ের সম্মেলন নির্বাচনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেখানে কাউন্সিলরা ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের পছন্দের নেতা নির্বাচন করছে। আওয়ামী লীগ এই গণতান্ত্রিক নীতি সর্বত্র অনুশীলন করার পক্ষপাতি। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন বলে দলটির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছেন।
সাধারণত দেখা যায় যে, জেলা পর্যায়ে বা উপজেলা পর্যায়ের সম্মেলনে স্থানীয় এমপি মন্ত্রী এবং প্রভাবশালী নেতারা প্রভাব বিস্তার করে। তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে জেলা বা উপজেলায় কাউন্সিলের নেতা নির্বাচিত করেন। কিন্তু এবার এই পরিস্থিতি পাল্টাতে চাচ্ছে আওয়ামী লীগ। দেখা যাচ্ছে যে, জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়নের প্রভাবশালী নেতা এমপিরা তাদের পছন্দের ব্যাক্তিদেরকে নেতৃত্বে চাপিয়ে দিচ্ছেন এবং সমঝোতার মাধ্যমে তারা পকেট কমিটি গঠন করছেন। এই পকেট কমিটি স্থানীয় পর্যায়ের যারা পরীক্ষিত নেতাকর্মী তাদের অনেকক্ষেত্রে কোনঠাসা করতে চাচ্ছেন। অনেকক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের স্বাভাবিক কাজকর্ম বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রেই ওই প্রভাবশালী মন্ত্রী এমপি এবং নেতার ইচ্ছায় দল পরিচালনা হচ্ছে। এই ইচ্ছার অবসান চায় আওয়ামী লীগ। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পর আওয়ামী লীগের মধ্যে এই প্রবণতা অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। সেকারণেই এই বিষয়গুলি তদারকি করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
জানা গেছে যে, এমপি মন্ত্রীদের চাপিয়ে দেয়া কমিটি নয় বরং তৃণমূল থেকে যারা কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন তাঁরা তাঁদের পছন্দের নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন ভোটের মাধ্যমে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভোট অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোট যেন প্রভাবমুক্ত হয় সেটিও নিশ্চিত করতে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে অঙ্গসংগঠনগুলোর স্থানীয় পর্যায়ে যে নির্বাচন হচ্ছে সেগুলো ভোটের মাধ্যমে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে সাময়িকভাবে কিছু উত্তেজনা থাকলেও, মন্ত্রী এমপিরা তাঁদের পছন্দের ব্যাক্তিদের নেতৃত্বে আনতে চাইলেও কাউন্সিলররা তাঁদের বিচার বুদ্ধি প্রয়োগ যেমন করছেন তেমনিভাবে যারা দলের সবচেয়ে ত্যাগী পরীক্ষিত এবং যাদের অবদান দলে সবচেয়ে বেশি তাঁদেরকে পছন্দ করছেন।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করছে যে, এই প্রক্রিয়ায় সারাদেশে যদি নির্বাচনে মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাই করা হয় তাহলে দলের ভেতর সুবিধাবাদী, হাইব্রিড এবং হঠাত ঢুকে পরারা কোণঠাসা হতে বাধ্য হবেন। প্রকৃত আওয়ামী লীগাররাই ক্ষমতাসীন হবেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো, আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলছেন এরফলে যারা দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগ যুবলীগের রাজনীতি করে যারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসতে চাইছেন তাঁদের প্রবেশগম্যতার পথ উন্মুক্ত হবে। এটাই আওয়ামী লীগকে নতুন রক্তপ্রবাহ দিবে বলে তাঁরা মনে করছেন। এই বিবেচনা থেকেই আওয়ামী লীগ সম্মেলন থেকে নতুনরুপে আত্মপ্রকাশ করবে বলেই আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা আশা করছেন।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।