নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০৪ পিএম, ১১ জুলাই, ২০১৯
আগামীকাল বিকালে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভায় অক্টোবরে অনুষ্ঠিত দলের কাউন্সিলের দিন তারিখ চুড়ান্ত হতে পারে। এছাড়াও দলের শৃঙ্খলা এবং নেতাকর্মীদের আচরণ নিয়েও আলোচনা করা হবে বলে দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে যে, বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ১৭ হাজার ব্যক্তির তালিকা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি শনাক্ত করেছে। এই ১৭ হাজারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদেরকে দল থেকে বহিস্কার করা হবে কিনা সেই বিষয়টি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী বৈঠকে উথাপিত হতে পারে। মূলত ৫ ধরণের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই তালিকায় তৈরী করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে;
১. যারা উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরোধীতা করেছিলেন বা নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে কাজ করেছিলেন, তাদেরকে দল থেকে বহিস্কার করা হতে পারে।
২. যারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেনি বা নৌকার বিরোধীতা করেছিল।
৩. বিভিন্ন এলাকায় সংগঠিত নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন, সন্ত্রাসের সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত বা জড়িতদের আশ্রয় প্রশয় দেয়।
৪. বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে প্রমানিত হয়েছে।
৫. বিভিন্ন স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বিএনপি জামাতের সঙ্গে সম্পর্কিত বা যারা জামাত-বিএনপি থেকে ২০১০ সালের পর আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য বিভিন্ন তৎপরতায় লিপ্ত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, দেখা গেছে ২০১০ সালের পর যারা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন, তার একটি বড় অংশই আসলে সুবিধাবাদী। এই সুবিধা শতভাগ না মিললে তারা আওয়ামী লীগের বদনামও করেছেন। আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেছেন, বিশেষ করে ২০১২-১৩-১৪-১৫ তে ব্যাপক অনুপ্রবেশ ঘটেছে আওয়ামী লীগে। এই সমস্ত আওয়ামী লীগাররা অর্থবলে এবং নানারকম কলাকৌশলে অনেক জায়গায় তৃণমূলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেছে বা কর্তৃত্ব গ্রহণ করেছে। এরা আওয়ামী লীগের জন্য একটা বিষফোঁড়া হিসেবে দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের ওই সাংগঠনিক সম্পাদক জানান যে, এদের মধ্যে অনেকেই জামাত শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত এমনকি স্বাধীনতাবিরোধী আত্মীয় স্বজনের কিছু কিছু আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছেন। এদেরকে চিহ্নিত করার জন্য গতবছরের অক্টোবরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশের আলোকেই আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ে এ ব্যাপারে তদন্ত করা হয়। মাঠ পর্যায়ে এ ব্যাপারে জরিপ চালানো হয়। তার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কমিটি প্রায় ১৭হাজার এরকম বিপদজনক সন্দেহভাজন ব্যাক্তিকে চিহ্নিত করেছে যারা যতটুক না আওয়ামী লীগের জন্য ভালো তারচেয়ে বেশি ক্ষতিকারক। এদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আগামীকাল অনুষ্ঠিত দলের কার্যনির্বাহী কমিটিতে এই তালিকাটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রদান করা হবে এবং তিনি এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগের বিরোধীতা করেছে তাঁদেরকে হয়তো কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে বা তাঁদের বিরুদ্ধে গুরুতর ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাদের সঙ্গে জামাত শিবিরের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বা অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তাঁদেরকে দল থেকে বহিষ্কারেরও প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগের এখন বর্তমানে যে সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলছে তাতেও সন্ত্রাসী, নারী নির্যাতনকারী, শিশু নির্যাতনকারীসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যাদের ন্যুনতম সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে তাঁদেরকে সদস্যপদ দিতে অস্বীকৃতি জানানো হচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।