নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১২ জুলাই, ২০১৯
গতরাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট ভাষায় এমপিদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি মন্ত্রী-এমপিদের ১০টি নির্দেশনা দিয়েছেন এবং এই নির্দেশনা মানা না হলে তারা যত ক্ষমতার অধিকারীই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সংসদ অধিবেশনের পরে রাতে দেড় ঘন্টা ব্যাপি এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মন্ত্রী- এমপিদের যে ১০টি নির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলো হলো:
১. সচিবালয়ে অযথা ঘোরাঘুরি করবেন না: সচিবালয় অযথা ঘোরাঘুরি করে তদবির নিয়োগ বাণিজ্য করতে বারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সচিবালয় গিয়ে মন্ত্রীদের কাজে ব্যাঘাত না ঘটানোর জন্য এমপিদের পরামর্শ দিয়েছেন।
২. চাঁদা পরিশোধ করতে হবে: আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রত্যেক এমপি সংসদীয় কমিটিকে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা করে চাঁদা দেয়। কিন্তু দেখা গেছে অধিকাংশ এমপি এই চাঁদা পরিশোধ করেননি। বিশেষ করে বরিশাল অঞ্চলের একজন এমপিও এই চাঁদা পরিশোধ করেননি। এ ব্যাপারটি প্রধানমন্ত্রীর নজড়ে আনেন চিপ হুইফ নূরে আলম চৌধুরী লিটন। প্রধানমন্ত্রী অনতিবিলম্বে চাঁদা পরিশোধ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
৩. এলাকায় কোন্দল করা যাবে না: এলাকায় কোন্দল না করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এমপি হওয়ার পরপরই অনেকে এলাকায় গ্রুপিং করে কোন্দল করছেন বলে খবর এসেছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এটা যেন অবিলম্বে বন্ধ করা হয়।
৪. মহিলা এমপিদের পিছনে লাগবেন না: প্রধানমন্ত্রী বলেছেন একই এলাকায় যারা মহিলা এমপি নিযুক্ত হয়েছেন, সেই মহিলা এমপিদের কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না, তাতে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। মহিলা এমপিদের পিছনে না লাগার জন্য প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছেন।
৫. উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাধা দিবেন না: প্রধানমন্ত্রীর কাছে খবর আছে যে, বিভিন্ন অঞ্চলে পছন্দের ব্যক্তিদের কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য কতিপয় এমপিরা উন্নয়ন কর্মকান্ডে খবরদারি করছেন। এরফলে উন্নয়ন কর্মকান্ড বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এটা না করার জন্য প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছেন।
৬. সংসদে নিয়মিত হতে হবে: সংসদে নিয়মিত উপস্থিত থাকার জন্য, সংসদের কার্যক্রমে উপস্থিত থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী সংসদ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন। সংসদে এসে লবিতে ঘুরাঘুরি না করা এবং অযথা গল্পগুজব না করার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন।
৭. একবারের বেশি মহিলা এমপি নয়: প্রধানমন্ত্রী গতকাল সংসদে ঘোষণা করেছেন যে, একবারের বেশি কাউকে মহিলা এমপি করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, আওয়ামী লীগের অনেক ত্যাগী, সৎ, নিষ্ঠাবান নেতা রয়েছেন। পর্যায়ক্রমে সবাইকেই এমপি করা হবে।
৮. ন্যাম ভবন ছাড়তে হবে মন্ত্রীদের: যেসমস্ত এমপিরা মন্ত্রিত্ব পাওয়ার পরও ন্যাম ভবন ছাড়েনি তাঁদেরকে অবিলম্বে ন্যাম ভবন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী চিপ হুইপকে নির্দেশ দিয়েছেন যারা ন্যাম ভবন দখল করে রেখেছে তাঁদের তালিকা অবিলম্বে প্রকাশ করতে।
৯. স্থানীয় প্রশাসনের উপর হস্তক্ষেপ নয়: বিভিন্ন কাজে স্থানীয় প্রশাসনের উপর হস্তক্ষেপ করা, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিভিন্ন কাজে হস্তক্ষেপ করতে বারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
১০. অপরাধীদের জন্য তদ্বির: পুলিশ প্রশাসনের কাছে এমপিরা প্রায়ই বিভিন্ন অপরাধীদের জন্য তদ্বির করেন। এই তদ্বির অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এই ১০টি নির্দেশ প্রতিফলন না করা হলে ভবিষ্যতে তাঁদেরকে মন্ত্রিত্ব বা এমপিতে মনোনয়ন দেয়া হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, প্রধানমন্ত্রী সংসদীয় দলের বৈঠকে বলেছেন এমপি মন্ত্রীরা কি করছেন না করছেন সব খবর তার কাছে রয়েছে। তিনি সবকিছু অবগত। কাজেই কেউ যদি এই নির্দেশনা লঙ্ঘন করে তবে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ তিনি নিজেই নষ্ট করবেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।