নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৭ পিএম, ১৪ জুলাই, ২০১৯
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কারও কাছে তিনি পল্লীবন্ধু। আবার কারও কাছে মিথ্যাবাদী সামরিকশাসক। যে যেমনই বলুক না কেন, এরশাদ একজন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী শাসক ছিলেন এটা যেমন সত্য, তেমনি তিনি দেশের জন্য কিছু ভালো কাজ করে গেছেন এটাও সত্য। এরশাদ ১৯৮২ সালে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধমে ক্ষমতা দখলের ৪ বছর পর জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। নয় বছর দেশ শাসনের পর নব্বইয়ে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এরশাদ যেমন অনেক বন্ধু শুভানুধ্যায়ী পেয়েছিলেন তেমনি অনেক দুধের মাছিও জুটেছিল তার আশেপাশে। ক্ষমতা হারানোর সঙ্গে সঙ্গে দুধের মাছিরাও তার কাছ থেকে উড়ে যেতে খুব বেশি সময় নেয়নি। চলুন দেখে নিই এরশাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন কারা-
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ
এরশাদের সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন তার মধ্যে সবার ওপরে থাকবেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। ১৯৮৮ সালে এরশাদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়েরও দেখভাল করেছেন। সে সময়ে তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছিলেন বলে জানা যায়। কিন্তু এরশাদ ক্ষমতা হারানোর পর মওদুদ ভোল পাল্টে ফেলতে দেরি করেননি। বর্তমানে তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। ২০০১ সালে জোট সরকারে আইনমন্ত্রীরও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী
জাতীয় পার্টি গঠনের দিন ২১ সদস্যের প্রেসিডিয়ামের মধ্যে ১৮ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। এরশাদের সঙ্গে তার বেশ দহরম মহরম ছিল। ক্ষমতায় থাকতে তিনি এরশাদকে কাজে লাগিয়ে নানা সুযোগ সুবিধা হাসিল করে নিয়েছিলেন। কিন্তু সুবিধাভোগ শেষে তিনি এরশাদকে ছেড়ে যেতে খুব বেশি সময় নেননি।
প্রফেসর এম এ মতিন
১৯৮৬ সালে নবগঠিত জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। মহাসচিব নিযুক্ত হন অধ্যাপক এম এ মতিন। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব প্রফেসর এম এ মতিন পরবর্তীতে এরশাদকে ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও হয়েছিলেন তিনি।
শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন
`৮৮ সালে এরশাদ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। কিন্তু এরশাদ ক্ষমতা ছাড়ার পর মোয়াজ্জেমও তাকে ছেড়ে দেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
জেপি’র আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ছিলেন এরশাদ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী। বর্তমানে তিনি মহাজোটে আছেন। গত আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় মেয়াদে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি।
সাংবাদিক আনোয়ার জাহিদ
জাতীয় পার্টির সূচনালগ্নে এরশাদের সঙ্গে ছিলেন আনোয়ার জাহিদ। জাতীয় পার্টির ৫৭ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে জায়গা পেয়েছিলেন তিনি। এরশাদের এই পরম বন্ধুই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার রূপ বদলে ফেলেন। ১৯৯৯ সালে ৪ দলীয় জোট গঠনে ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। সেমসয় বিএনপিতে সক্রিয় হন তিনি।
মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাছ
এরশাদ সরকারের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ছিলেন মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাছ। তিনিও এরশাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন বলে দাবি করেন অনেকে। বর্তমানে ওয়াক্কাছ জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (একাংশ) চেয়ারম্যান।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।