নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৪ জুলাই, ২০১৯
রাজনীতিতে আলোচিত, সমালোচিত, বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন সদ্যপ্রয়াত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। নানা কারণে তার যেমন জনপ্রিয়তা ছিল, আবার অনেকগুলো বিষয়ের কারণে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক সমালোচিত ছিলেন। কিন্তু আলোচনা-সমালোচনা সত্ত্বেও এরশাদের কিছু সিদ্ধান্ত রয়েছে যেগুলো কখনো বদলে ফেলা যায়নি। ৯০ এর অভ্যুত্থানের পর এরশাদের পতন ঘটার পরেও এরশাদের সেই সিদ্ধান্তগুলো বহাল রয়েছে, কেউ আজ অব্দি সেই সিদ্ধান্তগুলো বদলাতে পারেনি। সেই সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে কয়েকটি ছিল এরকম-
শুক্রবারে সাপ্তাহিক ছুটি
১৯৮৪ সালে ১ এপ্রিল এরশাদ রোববারের বদলে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি ঘোষণা করেন। এই সাপ্তাহিক ছুটির বিষয়ে সেসময় প্রতিবাদ করেছিল রাজনৈতিক সব দলগুলো, ব্যবসায়ি সমাজ এবং বুদ্ধিজীবীরাও। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষে তখন বলা হয়েছিল যে তারা ক্ষমতায় গেলে শুক্রবারে রাজনৈতিক ছুটি বাতিল করবে, আবার রোববার ছুটি বহাল করা হবে। এই ছটির বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরে ছিল। কিন্তু তারপরেও এখন পর্যন্ত সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবারেই রয়ে গেছে। এটার সঙ্গে একটা ধর্মীয় আবেগ-অনুভূতি জড়িয়ে থাকার কারণে শুক্রবারের ছুটি বদলে দেওয়ার সাহস আর কেউ দেখাননি।
ওষুধনীতি
১৯৮২ সালের ৭ জুন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ জাতীয় ওষুধনীতি ঘোষণা করেছিলেন। বর্তমানে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি এই ওষুধনীতি করেছিল। মনে করা হয় বাংলাদেশে দেশীয় ওষুধশিল্পের যে বিকাশ, সেটার সূত্রপাত ঘটেছিল এই ওষুধনীতি থেকে। যদিও তখন এই ওষুধনীতির তীব্র আপত্তি এবং বিরোধীতা করা হয়েছিল। কিন্তু এই ওষুধনীতির ভিত্তিতেই এখনো বাংলাদেশের ওষুধশিল্পটি দাঁড়িয়ে রয়েছে।
উপসনালয়গুলোকে করমুক্ত
এরশাদ ১৯৮৩ সালের ৩ জানুয়ারি মসজিদ, মন্দিরসহ সব উপসনালয়গুলোকে করমুক্ত করেছিলেন। এখন পর্যন্ত এই করমুক্তির আদেশ কেউ বাতিল করতে পারেনি।
উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন
১৯৮৫ সালে এরশাদ উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন। এই উপজেলা ব্যবস্থা নিয়ে সেসময় সারাদেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিলো। এবং রাজনৈতিক দলগুলো ঘোষণা করেছিল যে তারা ক্ষমতায় গেলে উপজেলা পদ্ধতি বাতিল হবে। ১৯৮৫ সালের ১৬ মে বিরোধী দলের প্রতিবাদে প্রথম উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২৫ মে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে উপজেলা কার্যক্রম চালু হয়েছিল। এই উপজেলা ব্যবস্থা এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে, বিএনপি ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে সেটা বাতিল করলেও পরবর্তীতে এটা পুন:স্থাপিত হয়েছে এবং উপজেলা ব্যবস্থা এখনো চলমান।
সর্বস্তরের বাংলা ভাষার বিল পাশ
১৯৮৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি এরশাদ সংসদে সর্বস্তরের বাংলা ভাষার বিল পাশ করেছিলেন। যদিও এখনো সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন হয়নি। কিন্তু আমাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মাতৃভাষার মর্যাদার জন্য এই সিদ্ধান্তটি ছিল অনন্য। এই সিদ্ধান্ত থেকে কারো সরে আসার প্রশ্নই আসে না।
ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম
১৯৮৮ সালের ৭ জুন এরশাদ অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করেছিলেন। এই রাষ্ট্রধর্ম ইসলামও এখন পর্যন্ত কেউ বাতিল করতে পারেনি। এটি আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে ১৯৭২ সালের সংবিধানের আলোকে সংবিধান সংশোধন করলেও রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বহাল তবিয়তেই রেখেছেন।
এরশাদের এই সিদ্ধান্তুগুলো যত না জনকল্যানমুখী ছিল, ততটা ছিল মানুষের আবেগ অনুভুতিকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে জনপ্রিয় করার সিদ্ধান্ত। আর এজন্যই এই সিদ্ধান্তুগুলো কখনোই পাল্টে দেওয়া যাচ্ছে না। এই সিদ্ধান্তগুলো পাল্টাতে গেলে একটা ধর্মীয় অনুভূতিতে স্পর্শ করবে বা মানুষের আবেগকে স্পর্শ করবে বলেই কোন রাজনৈতিক দল বিপুল জনপ্রিয়তা থাকা সত্বেও এই বিষয়গুলোকে কোনো হস্তক্ষেপ করেনি।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।