নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৯ অগাস্ট, ২০১৯
টানা দ্বিতীয় মেয়াদে মোদী সরকার ভারতের ক্ষমতা গ্রহণ করেছে এবং দ্বিতীয় মেয়াদে মোদি সরকারকে অনেক বেশি আগ্রাসী হিসেবে অভিহিত করছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। যদিও ধারণা করা হয়েছিল যে, মোদি সরকার ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উষ্ণ হবে এবং দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক যে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধানের ব্যাপারে দুই দেশ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। কিন্তু বাস্তবে তেমন কোনো লক্ষণ পাওয়া যাচ্ছে না। বরং কুটনৈতিকরা আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে নানারকম টানাপোড়নের আলামত পাচ্ছে। এর আলামত হলো বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বৈঠক। এই বৈঠকে দুইদেশ যুক্ত বিবৃতি দিতে পারেনি এবং অনুপ্রবেশ ইস্যুতে বাংলাদেশ ভারতের মতপার্থক্য সুস্পষ্ট হয়েছে। কাশ্মির ইস্যুতে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, ভারত এখন আগ্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হবে। বিগত নির্বাচনে বিজেপি যে কাজগুলো করার ঘোষণা দিয়েছিল তাঁরা যতদ্রুত সম্ভব শেষ করবে। এই কাজের মধ্যে একটা বড় বিষয় ছিল আসামে জাতীয় নাগরিক গণ্ডী তৈরি করা। এই নাগরিক গণ্ডী তৈরি করে যারা নাগরিকত্ব বঞ্চিত তাঁদেরকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা। এই বিষয়টি দুই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে জোরালোভাবে উত্থাপন করা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এটা সীমান্ত সমস্যা এবং দুই দেশকে একসাথে এই সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করতে হবে। কিন্তু ভারত এই বিষয়টি নিয়ে একমত হতে পারেনি।
শুধু অনুপ্রবেশের বিষয়েই নয়, আরও বেশকিছু বিষয়ে ভারত বাংলাদেশ মনোভাবে দ্বন্দ্ব পাওয়া যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ডোনান্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বক্তব্যকে বিজেপির থিংক ট্যাংকরা অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে নিয়েছেন। তাদের সামনে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে সামনে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলতে চায়। তৃতীয়ত; তিস্তার পানিচুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে আলাপ আলোচনা চলছিল। এতদিন ধরে বলা হচ্ছিল পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী চান না জন্যই এই চুক্তি হচ্ছে না এবং দ্বিতীয় দফায় যদি বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসে তাহলে ওই চুক্তি দ্রুতই করা হবে। কিন্তু সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, খোদ বিজেপি এখন তিস্তার পানিচুক্তি চায়না। বিশেষ করে পশ্চিমবাংলায় বিজেপির উত্থানের কারণে তাঁরা নতুন করে তিস্তার পানিচুক্তির মত প্রক্রিয়াকে সামনে আনতে চাইছে না। বরং তাঁরা পশ্চিমবঙ্গে তাদের ক্ষমতাকে আরও দৃঢ় করতে চাইছে। এছাড়াও বিভিন্ন ইস্যুতে আগের উষ্ণ সম্পর্কে ভাটার টান লক্ষ্য করা গেছে।
তবে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে এই সম্পর্কের টানাপোড়নের নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন বাংলাদেশের সুশীল সমাজ যারা ওয়ান ইলেভেনে অন্যতম কুশীলব ছিল এবং এরা বিজেপিসহ ভারতের বিভিন্ন থিংক ট্যাংকদের কাছে ভারতের কাছে বর্তমানের সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম বিষেদাগার করছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘুসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতকে তাঁতিয়ে তোলার নীতি গ্রহণ করেছে। ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা শীতলতা তৈরি করতে চাইছে।
জানা গেছে যে বাংলাদেশের একটি শীর্ষ জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক যিনি ওয়ান ইলেভেনের অন্যতম কুশীলব তিনি সাম্প্রতিক সময়ের ভারতের বিভিন্নজনের কাছে বাংলাদেশের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ বিভিন্ন তথ্য উত্থাপন করেছেন। একটি ইংরেজি দৈনিকের সম্পাদক যিনিও ওয়ান ইলেভনের অন্যতম কুশীলব ছিলেন তিনিও এই ব্যাপারে সক্রিয় রয়েছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের বিজেপির অন্যতম নেতাদের সখ্যতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও তিনি ভারতে সামাজিক ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটাচ্ছেন। ভারতে তিনি বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্য ছড়াচ্ছেন বলেও একাধিক কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা যিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন তিনিও ভারতের নতুন সরকারের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানারকম বিষেদাগার করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়াও ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যসহ আরও বেশকিছু ব্যক্তি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অবনতি ঘটানোর জন্য চেষ্টা করছে বলে উল্লেখ পাওয়া গেছে। অবশ্য পররাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অবনতির চেষ্টা নতুন নয়, এরকম চেষ্টা বহুদিন ধরে হয়েছে। বাংলাদেশ তাঁর নীতি আদর্শ এবং জনগণের কল্যানের দিকে মনোযোগ রেখে সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে। ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক যে মাত্রায় গেছে সেখান থেকে সম্পর্ক অবনতি হওয়ার কোনো কারণ নেই।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।