নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০১ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার দলের ভিতর শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। টানা দশ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগে দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, ক্যাডার এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন তিনি।
গত শনিবার তিনি এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছিলেন দলের কার্যনির্বাহী সভায়। দলের সভায় তিনি কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সামনে বলেছিলেন, আমার দলে কোন সন্ত্রাসী- ক্যাডার দরকার নেই। দলের ছত্রছায়ায় যারা অপকর্ম করবে তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনা যা বলেন সেটা যে করেন তা আরেকবার প্রমাণ করলেন। শেখ হাসিনার বক্তব্যের ৭২ ঘন্টার মধ্যে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ঢাকায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীদের তত্বাবধানে পরিচালিত ক্যাসিনোগুলোতে সাড়াশি অভিযান শুরু করে। একদিনের অভিযানেই ঢাকা শহরের সব অবৈধ ক্যাসিনো বন্ধ হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে ৪টি ক্যাসিনোতে সিলগালা লাগিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শুধুমাত্র ক্যাসিনো বন্ধই নয়। আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাছে ৫ শতাধিক ব্যক্তির একটি তালিকা হাতে এসে পৌঁছেছে যারা চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে সুনির্দিষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন প্রশ্ন, কেন শেখ হাসিনা এই কঠোর অবস্থানে গেলেন? হঠাৎ কেন তিনি দলের ভিতর শুদ্ধি অভিযান শুরু করলেন? অনেকেই মনে করছে যে, এর ফলে আওয়ামী লীগের মধ্যে ভুল বার্তা যাবে। বিরোধী দল আঙ্গুল তোলার সুযোগ পাবে। আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় যতদিন ধরে অনিয়ম চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস হয়েছে সেটা বলার একটা প্ল্যাটফর্ম পাবে বিরোধী দলগুলো। কিন্তু এর বিপরীত মতামতও রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছে, এর মাধ্যমে শেখ হাসিনা নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা আরো বাড়বে। সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করবে শেখ হাসিনা যতক্ষণ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছে ততক্ষণ তিনি দেশের মঙ্গল কামনা করবেন। জনগনের পাশে থাকবেন তিনি। এটা টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় প্লাস পয়েন্ট হিসেবে দাঁড়াবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই মতবিরোধের আড়ালে আমরা বুঝতে পারি শেখ হাসিনা কেন হঠাৎ করে এত কঠোর হলেন। কি কারণে তিনি দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করলেন। এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে কয়েকটি কারণ। এর মধ্যে রয়েছে-
১. গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সতর্কবার্তা: বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দলের বিভিন্ন নেতাকর্মী, সহযোগি ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীদের লাগামহীন স্বেচ্ছাচারিতার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করেছেন। শুধু সতর্কই করেননি, বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করছে সেই সমস্ত অপকর্মের তথ্য প্রমাণ প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেছে। তথ্য প্রমাণ এবং ছবি সম্বলিত এসব প্রতিবেদনে শেখ হাসিনা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং তিনি মনে করছেন ‘এনাফ ইজ এনাফ’। এসব অপকর্ম আর বাড়তে দেওয়া যায়না। এসব অপকর্ম আর বাড়তে দেয়া যায়না। এসব যদি বাড়তে দেওয়া হয় তাহলে তারা লাগামহীন হয়ে পড়বে। এর ফলে আওয়ামী লীগ জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াবে। একারণেই তিনি কঠোর অবস্থানে গেছেন।
২. নিজস্ব নেটওয়ার্কের পাওয়া তথ্য: শুধু গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের উপর নির্ভর করে চলার মানুষ শেখ হাসিনা নন। টানা তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করা আওয়ামী লীগ সভাপতির রয়েছে নিজস্ব টীম। যাদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই, তাদের নেটওয়ার্ক সারা দেশব্যাপী বিস্তৃত। শেখ হাসিনার নিজস্ব টীম সারাদেশ থেকে যে রিপোর্ট পাঠাচ্ছিল সে রিপোর্টও প্রধানমন্ত্রীর জন্য স্বস্তিদায়ক ছিল না। এই রিপোর্টে দেখা যায় তৃতীয়বারের মত ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীই মনে করছে যে, এটাই শেষবারের মত ক্ষমতা। আমরা যা ইচ্ছা তাই করে নেই। এরকম মনোভাব দলের জন্য এবং দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। গোয়েন্দা সংস্থা এবং নিজস্ব নেটওয়ার্কের মধ্যে অদ্ভুত মিল পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যে কারণে তিনি মনে করছেন, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখনই সময়। সরকারের মেয়াদ এখনও একবছর পূর্ণ হয়নি। এখন এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে দল গুছানো অত্যন্ত সহজ হবে। যে কারণে তিনি এ ব্যবস্থা গ্রহণে কার্পণ্য করেননি।
৩. আওয়ামী লীগের নিম্নগামী ইমেজ: ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর থেকেই একের পর এক ইস্যুতে জর্জরিত আওয়ামী লীগ। নানা কারণে আওয়ামী লীগকে নিয়ে জনমনে অস্বস্তি বাড়ছে। দ্রব্যমুল্যের উর্ধগতি, ডেঙ্গু জ্বর, প্রিয়া সাহার ঘটনা, গুজব সন্ত্রাস ইত্যাদি নিয়ে এক বছর যেতে না যেতেই তৃতীয়বারের মত ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ ব্যাকফুটে গেছে। এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের নিম্নগামী ইমেজ উদ্ধারের জন্য শেখ হাসিনার কঠোর হওয়ার বিকল্প ছিল না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন যে, একমাত্র শেখ হাসিনার ইমেজ ছাড়া আওয়ামী লীগের অন্যান্য অত্যন্ত খারাপ। এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, শেখ হাসিনা এখন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয়তম ব্যক্তি। তাঁর ইমেজেই আওয়ামী লীগ চলছে। একারনেই আওয়ামী লীগের ইমেজ পুনরুদ্ধারের জন্য এরকম কঠোর অবস্থানের বিকল্প ছিল না বলেই মনে করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
৪. দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয়বার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি আর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন না। সেই হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটাই তাঁর শেষ মেয়াদ। তাই তিনি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান যেন দেশের জনগণ তাকে মনে রাখে। ইতিমধ্যে তিনি বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়েছেন। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন, অগ্রগতিগুলো সারাবিশ্বের মানুষের কাছে একটা দৃষ্টান্ত। আর এজন্যই শেখ হাসিনা চান না যে সব উন্নয়ন দুর্নীতি এবং অপকর্ম খেয়ে নিক। এজন্যই তিনি যে দলের উর্ধ্বে, সবার আগে যে দেশ এবং জনগন এই দৃষ্টান্ত যে তিনি স্থাপন করতে চান এবং এজন্যই তিনি এই কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন।
৫. বিরোধী দলকে কোণঠাসা করা: কিছুদিন ধরেই রাজনীতিতে বিরোধী দলগুলো নতুন করে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন বা বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার কৌশল খুঁজছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দলের শুদ্ধি অভিযানের ঘোষণা দিয়ে বিরোধীদলকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছেন। এর ফলে জনগণের কাছে শেখ হাসিনার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেড়েছে। বিরোধী দল শুধুমাত্র তাদের নিজস্ব ব্যক্তিগত ইস্যু নিয়ে আন্দোলন করছে। শেখ হাসিনা দেশের মানুষের কথা চিন্তা করছেন। দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করছেন। এজন্য তিনি দলের মধ্যেও শুদ্ধি অভিযান করতে কার্পণ্য করছেন না। এই বার্তাটা স্পষ্ট হয়ে গেছে। যার ফলে বিরোধী দলের আন্দোলন হালে পানি পাবে না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
শেখ হাসিনার এই কঠোর অবস্থান দলের মধ্যে অস্বস্তি তৈরী করলেও দেশের মানুষের মধ্যে একটি স্বস্তি এবং প্রশংসা কুড়াচ্ছে। আর এটাই হলো শেখ হাসিনার রাজনীতি। তিনি ক্ষুদ্র স্বার্থের বদলে বৃহত্তর স্বার্থকেই যে সবসময় বড় করে দেখেন এই ঘটনার মাধ্যম তিনি সেটাই প্রমাণ করেছেন।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে; জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। আমরা সর্বদা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। অন্যদিকে বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সরকারবিরোধী তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নেয় বলে দাবি করে কাদের বলেন, বিএনপি ও তার দোসরদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনী সরকারের সুসমৃণ পথচলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, পূর্বের ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও মহামান্য আদালত জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে নিজেদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীর পাশাপাশি বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে রক্ষা করার জন্য’ বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, শেখ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা বিচারহীনতার সংস্কৃতির অর্গল ভেঙে বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসী বা অপরাধী যে-ই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যের আড়ালে সন্ত্রাসীদের রক্ষার অপকৌশল সফল হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ক্ষমতা বিএনপি
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।