ইনসাইড পলিটিক্স

বদলে যাবে যুবলীগ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৩ অক্টোবর, ২০১৯


Thumbnail

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগকে বলা হতো আওয়ামী লীগের লাঠি। শেখ ফজলুল হক মণি প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী যুবলীগ প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগের সবচেয়ে সক্রিয় ক্রিয়াশীল এবং শক্তিশালী সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করেছে। যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রাম, মাঠে লোক জমায়েত করা কিংবা প্রতিপক্ষেকে ঘায়েল করার কাজেই ব্যবহার করা হতো যুবলীগকে। এই চরিত্রের কারণে যুবলীগের মধ্যে অনিবার্যভাবেই ক্যাডার রাজনীতি প্রবেশ করেছিল। আন্দোলন লড়াইয়ের মাধ্যমে রাজপথ দখলের রাজনীতিতে থাকার জন্য যুবলীগই ছিল ক্যাডারদের অভয়ারণ্য বা নিরাপদ আশ্রয়স্থল। সেভাবেই গড়ে উঠেছে যুবলীগ। এর ফলও আওয়ামী লীগ পেয়েছে।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগই প্রথম এর বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিবাদ করেছিল। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর যুবলীগই তার নিরাপত্তার প্রধান দায়িত্ব পালন করেছিল।

জিয়াউর রহমান এবং এরশাদের স্বৈরশাসনামলে আওয়ামী লীগের জন্য যখন জনসভা করা কঠিন ছিল, যখন প্রতিপক্ষরা অস্ত্র উচিয়ে আওয়ামী লীগের জনসভা ভণ্ডুল করতে সবসময় সচেষ্ট থাকতো, সে সময় এই যুবলীগকেই রাজপথ দখলের জন্য ব্যবহার করা হতো। এখন সময় বদলেছে, কিন্তু যুবলীগের সেই চরিত্রটি এখনও রয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের জনসভা করতে হবে মানেই যুবলীগ লাগবে। আওয়ামী লীগকে রাজপথ দখল করতে হবে, যুবলীগ লাগবে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে প্রকাশ্য লড়াই করতে হবে, সেখানেও যুবলীগকে লাগবে।

আওয়ামী লীগের থিংক ট্যাংকরা মনে করছেন যে, যুবলীগের এই বিন্যাস এবং এই বিকাশের কারণেই সংগঠনটিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্যাডারের জন্ম হয়েছে। এ সমস্ত ক্যাডাররা পরবর্তীকালে দলের জন্য মাথা ব্যাথার কারণ হয়েছে। যারা এক সময় দলের আস্থার প্রতীক ছিল, তারাই হয়ে গেছে দলের আপদ। এ অবস্থার পরিবর্তন চান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, যুবলীগকে কীভাবে ঢেলে সাজানো যায় এবং কীভাবে এই সংগঠনটিকে একটা নতুন অবয়ব দেওয়া যায়, সেই প্রক্রিয়া বের করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব থিংক ট্যাংককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই থিংক ট্যাংক সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট হস্তান্তর করেছে। এ রিপোর্ট যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বদলে যাবে যুবলীগ। নতুন অবয়বে যে যুবলীগ আসবে, সেটা শুধুমাত্র একটা সহযোগী সংগঠন হয়ে থাকবে। নতুন যুবলীগ হবে মেধাবী তরুণ যুবকদের একটা প্ল্যাটফরম, যেটা আওয়ামী লীগের একটা শোভাবর্ধনকারী সংগঠন হিসেবে পরিচিত হবে।  

থিংক ট্যাংকদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ হবে মেধাবী, তরুণ এবং সম্ভাবনাময়দের জন্য একটা প্ল্যাটফরম, যেখান থেকে তরুণদের পেশাগত এবং ক্যারিয়ার বিকাশের জন্য কাজ করা হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তরুণ আইকনদের যুবলীগে নিয়ে এসে সংগঠনের ক্যাডার চরিত্র পাল্টে মূলত একটি আলংকারিক সংগঠন করার প্রস্তাব করেছে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব থিংক ট্যাংকরা।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নিজস্ব গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে সারা দেশে ‘কেমন যুবলীগ চাই’ এ নিয়ে গবেষণা পরিচালিত হয়েছিল। সেই গবেষণায় উঠে এসেছে যে, যুবসমাজ যুবলীগকে তরুণ মেধাবীদের একটা প্ল্যাটফরম হিসেবে দেখতে চায়, যেন অন্য তরুণরাও তাদের মতো হতে উজ্জীবিত হয় এবং তাদের মতো হওয়ার পথ খুঁজে পায়।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা প্রতিষ্ঠিত যেমন, ক্রীড়াক্ষেত্রে মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম; মিডিয়াজগতের মাহফুজ, রিয়াজ, ফেরদৌস; সংগীত জগতের তাপস, বাপ্পা মজুমদার, ইমরান মাহমুদুল, এবং তরুণ লেখক, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় তরুণদেরকে একত্রিত করা হবে যুবলীগে। ঠিক একইভাবে যুব মহিলা লীগেও তারিন, শমী কায়সার, আফসানা মিমিদের মতো তারকাদের সামনে নিয়ে আসা হবে। এর ফলে যুবলীগ আগের মতো আওয়ামী লীগের লোক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হবে না। যুবলীগ হবে তরুণদের মেধামনন চর্চার একটা প্রতিষ্ঠান। যুবলীগ হবে তরুণদের একটা প্ল্যাটফরম, যেটা দেখে অন্য তরুণরা উজ্জীবিত ও উদ্বুদ্ধ হবে। এটা করতে গেলে যুবলীগের বর্তমান গঠনতন্ত্র এবং কার্যক্রমের ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক থিংক ট্যাংক জানিয়েছে্ন। সে লক্ষ্যে কাজও হচ্ছে বলে তারা নিশ্চিত করেছেন। তবে পুরোপুরিভাবে যুবলীগকে একটা আলঙ্কারিক তরুণ-যুবকদের প্ল্যাটফরম করা হবে নাকি এর রাজনৈতিক শক্তিকেও বজায় রাখা হবে, সেটা নিশ্চিত নয়।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এখনও এ ব্যাপারে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি। তবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠেয় কংগ্রেসের মাধ্যমে যে যুবলীগের নেতৃত্বের আমূল পরিবর্তন হবে তা বলাই বাহুল্য। সেই পরিবর্তনে যুবলীগের বর্তমান বাজে ইমেজ কাটিয়ে তোলার জন্য স্ব স্ব ক্ষেত্রে খ্যাতিমানদেরকে যুবলীগের নেতৃত্বে আনা হবে।

ধারণা করা হচ্ছে যে, কোনো রাজনৈতিক নেতার যুবলীগের নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। আওয়ামী লীগ সভাপতি এখন পর্যন্ত যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তাতে জনপ্রিয় কোনও যুবক তরুণ, যিনি তার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত এরকম একগুচ্ছ মুখকে যুবলীগের নেতৃত্বে আনা হবে।

বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ, রিয়াজ, ফেরদৌসের মতো ব্যক্তিদেরকে যুবলীগের নেতৃত্বে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মাশারাফি বিন মর্তুজা ইতিমধ্যে এমপি হয়েছেন। রিয়াজ এবং ফেরদৌসকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী গত বছর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদেরকে নিয়ে তিনি গতবছর নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন। এবারও তিনি মাহফুজ, মীর সাব্বিরদেরকে নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন।

ধারণা করা হচ্ছে, এরকম তারকাখ্যাতিসম্পন্ন কিছু মানুষকে প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের নেতৃত্বে নিয়ে আসবেন। তাদের তত্ত্বাবধানে তরুণ প্রতিভাবান এবং ছাত্রলীগ থেকে সদ্যবিদায়ীদেরকে যুবলীগের সদস্য করা হবে, যেন যুবলীগ তার বর্তমান বাজে ইমেজ থেকে বের হতে পারে। তবে এই পরিবর্তনের ফলে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা সে প্রশ্ন করছেন অনেক আওয়ামী লীগ নেতা।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায় কেন 'মাইম্যান' চান মন্ত্রী-এমপিরা?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

কেউ মন্ত্রী হয়েছেন, কেউ সংসদ সদস্য। কেউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, এমনকি প্রেসিডিয়াম সদস্য। তারপরেও উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এই প্রভাবশালী নেতাদের এত আগ্রহ কেন? এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেক মুখরোচক আলোচনা চলছে। অনেকেই এ নিয়ে কৌতুকও করেছেন। 

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এটি একটি নতুন উপসর্গ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, এমপি এবং নেতা-পাতি নেতারা এলাকায় নিজস্ব ব্যক্তিদেরকে শুধু প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছেন না, তাদেরকে নির্বাচিত করতে চাচ্ছেন। কেন মাইম্যানদেরকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করতে আগ্রহী মন্ত্রী-এমপিরা?

এই প্রশ্নের উত্তরে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, একাধিক কারণে উপজেলায় মাইম্যানদেরকে চাচ্ছেন মন্ত্রী-এমপিরা। প্রথমত, এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের মধ্যে সুস্পষ্ট বিভক্তি হয়েছে। যেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন সেখানে ওই প্রার্থীর বিরোধীপক্ষ নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করছেন। সেই কারণে এলাকায় তাদের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের বিরোধ এমপি-মন্ত্রীদেরকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে। এ কারণে কর্তৃত্ব রক্ষার জন্য তারা নিজস্ব লোকজনকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করার জন্য মাঠে নেমেছেন। 

দ্বিতীয়ত, প্রতিপক্ষকে দমন। এই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এখনও কোন্দলে বিভক্ত আওয়ামী লীগের যারা জিতেছেন বা হেরেছেন তাদের প্রতিপক্ষরা শক্তিশালী। প্রতিপক্ষকে দমনের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যানের নিয়ন্ত্রণটা অত্যন্ত জরুরী। আর এই কারণেই প্রতিপক্ষকে দমনের লক্ষ্যে উপজেলায় চোখ গেছে মন্ত্রী-এমপিদের।

তৃতীয়ত, দুর্নীতি এবং অনিয়ম। উপজেলা চেয়ারম্যানদের অনেক বরাদ্দ থাকে। উপজেলা চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে টেন্ডার এবং অন্যান্য কার্যক্রমগুলো উপজেলায় সংঘটিত হয়। আর একারণেই নিজের ব্যক্তি উপজেলার চেয়ারম্যান হলে এমপিদের পক্ষে অনিয়ম এবং দুর্নীতি করাটা সহজ হয়। আর এ জন্যই তারা অন্য কারও ওপর ভরসা করতে পারছেন না। নিজের আত্মীয়স্বজনকে উপজেলায় বসিয়ে অনিয়ম এবং দুর্নীতি করার ক্ষেত্র উন্মুক্ত করতে চাচ্ছেন।

চতুর্থত, ভবিষ্যতের রাজনীতি। যারা তাদের পুত্র এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে রয়েছে সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্য। এবার উপজেলা চেয়ারম্যান পরের বার এমপি। বিশেষ করে যাদের বয়স বৃদ্ধি পেয়েছে এবং রাজনীতিতে আগামীতে নাও থাকতে পারেন এমন আশঙ্কা রয়েছে, তারাই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য সন্তান এবং নিকট আত্মীয়দেরকে রাজনীতির মাঠে নিচ্ছেন। যেমন- সাহাদারা মান্নান তার পুত্রকে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার মাধ্যমে রাজনীতির মাঠে নিয়ে আসতে চাচ্ছেন। ভবিষ্যতে যেন তিনি এমপি হতে পারেন। একই অবস্থা সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নানের ক্ষেত্রেও। শাজাহান খানের ক্ষেত্রেও সে রকম একটি কৌশলই দৃশ্যমান হচ্ছে।

সবকিছু মিলিয়ে এলাকায় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা, প্রভাব বিস্তার এবং পুরো এলাকায় নিজের নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্যই আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা এবার উপজেলার দিকে ঝুঁকেছে। উপজেলাগুলোর মাধ্যমে তাদের নিজেদের ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার অভিযান শুরু করেছেন মন্ত্রী-এমপিরা। এখন দেখার বিষয়, উপজেলায় মাইম্যান বসিয়ে মন্ত্রী-এমপিরা কি অর্জন করতে পারেন।

উপজেলা নির্বাচন   মন্ত্রী-এমপি   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

পরিবারতন্ত্রের কবলে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জোর প্রচেষ্টা চলছে। বিভিন্ন এলাকায় মন্ত্রী এমপিরা তাদের নিকট আত্মীয় স্বজনকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করে ক্ষমতার শিকড় আরও গভীর করতে চাইছেন। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে চাইছেন। 

প্রায় অর্ধশত এমপি তাদের নিকট আত্মীয়কে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন এবং তাদের জন্য নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করেছেন। এর ফলে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পরিবারতন্ত্রের কবলে পড়তে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

উপজেলা নির্বাচনে এমপিদের স্ত্রী, সন্তান, ভাই, ভাতিজা, শ্যালক, মামা, ভাগ্নেসহ আত্মীয় স্বজনও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন এবং এ সমস্ত আত্মীয় স্বজনকে জয়ী করার জন্য আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী এমপি ও নেতারা তাদের অনুগতদের মাঠে নামিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত যদি তাদের আত্মীয় স্বজনরা বিজয়ী হন তাহলে ওই সমস্ত উপজেলা গুলোতে আওয়ামী লীগ থাকবে না, সেখানে পরিবার লীগ প্রতিষ্ঠিত হবে। 

তবে ইতোমধ্যে পরিবারতন্ত্রের ব্যাপারে কঠোব সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। উপজেলা নির্বাচনে দলের মন্ত্রী–এমপিদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের উপজেলা ভোটে অংশ না নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে দলটি। ইতোমধ্যে তাদেরকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এখন দেখার বিষয় যে, যে সমস্ত মন্ত্রী–এমপিদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়রা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন তারা এবার দলীয় সিদ্ধান্ত মানেন কিনা কিংবা নির্বাচন থেকে সরে যান কিনা। 

বগুড়ার সারিয়াকান্দি এবং সোনাতলা উপজেলায় এমপি সাহাদারা মান্নান তার ছেলে সাখাওয়াত সজল হোসেন এবং ছোট ভাই মিনহাজ জাহানকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দিয়েছেন। সোনাতলার প্রার্থী হচ্ছেন ছোট ভাই আর সারিয়াকান্দিতে প্রার্থী হয়েছেন তার ছেলে। এটি নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে তীব্র কোন্দল এবং অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সাহাদারা মান্নান বগুড়া-১ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি এবং এই দুই উপজেলায় যদি তার ভাই এবং ছেলে চেয়ারম্যান হন তাহলে বগুড়া-১ আসনে পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। 

টাঙ্গাইলে-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য তার নির্বাচনী এলাকার দুই উপজেলায় দুইজন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী মনোনীত করছেন। এই প্রার্থীরা তার ঘনিষ্ঠ এবং মাইম্যান হিসাবে পরিচিত। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. রাজ্জাকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ধনবাড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

এই লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, সংসদ সদস্য তার নির্বাচনী এলাকার আপন খালাতো ভাই এবং নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান হিসেবে প্রার্থী করেছেন। 

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় লুৎফুল কবির হাবিবকে একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদের শ্যালক। 

মাদারীপুর সদর উপজেলায় নিজের ছেলে আসিবুর রহমান খানকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। 

এই সমস্ত এলাকাগুলোতে যখন শ্যালক এবং সন্তানরা বিজয়ী হবে তখন তাদের একক রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। 

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এবং বর্তমান সংসদ সদস্য এম এ মান্নানের ছেলে সাদাত মান্নানকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। এম এ মান্নান নিজেও বিভিন্ন আয়োজনে ছেলের পক্ষে প্রচারণা করছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এর ফলে সুনামগঞ্জে মান্নান তন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। 

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান ও যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা এবারও প্রার্থী। তার বড় ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। একই উপজেলার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুন্নাহার বেগমের ছেলে যুবলীগের নেতা ফজলে রাব্বি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। 

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার প্রার্থী হচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাঈল হোসেন। তিনি মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এবং সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুপাতো ভাই।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মাহবুব উল আলম হানিফ এর চাচাতো ভাই আতাউর রহমান বর্তমান চেয়ারম্যান। তিনি আবারও নির্বাচন করছেন।

নোয়াখালীর হাতিয়ায় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলীকে, সুবর্ণচর উপজেলায় নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে একরামুল করিম চৌধুরী তার ছেলের হয়ে প্রচারণা অংশগ্রহণ করছেন। 

নোয়াখালী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নির্বাচনী এলাকা। তার নির্বাচনী এলাকায় এমপিরা পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছেন।

মৌলভিবাজার বড়লেখা উপজেলায় নির্বাচনে ভাগ্নে সোয়েব আহম্মেদকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন মৌলভিবাজার-১ আসনের এমপি সাহাবুদ্দিন। 

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগর তার নির্বাচনী এলাকা দামুরহুদা উপজেলায় আপন ভাই আলী মনসুর বাবুকে চেয়ারম্যান প্রার্থী করেছেন। 

নরসিংদী-৩ আসনে এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ঘোষণা দিয়েছেন যে, তার নির্বাচনী এলাকা শিবপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান হবেন তার স্ত্রী ফেরদৌসি ইসলাম। তিনি তাকে সমর্থন জানাবেন। 

এভাবে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে পল্লবিত হচ্ছে পরিবারতন্ত্র। আগে ‘মাইম্যান’ কে বসানো হত, এবার সেই লজ্জা শরমের মুখোশ খুলে ফেলে আওয়ামী লীগের এমপি এবং মন্ত্রীরা তাদের নিজের আত্নীয় স্বজনকেই উপজেলা চেয়ারম্যান করতে চাচ্ছেন এলাকায় নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এটি কীভাবে প্রতিহত করেন সেটিই এখন দেখার বিষয়।

পরিবারতন্ত্র   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এমপি-মন্ত্রী পরিবারের সদস্যরা নির্বাচন করতে পারবেন না: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ: ০৫:২৪ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোন এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য বা স্বজনদের কেউ প্রার্থী হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সন্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা এ নির্দেশ অমান্য করে উপজেলা নির্বাচন করবেন, তাদের বিরুদ্ধে দল বহিষ্কারাদেশসহ কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা যায়, শুধু সন্তান, পরিবার বা নিকটাত্মীয় ছাড়াও মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের প্রকাশ্যে বা গোপনে উপজেলা নির্বাচনে কোনোভাবে সম্পৃক্ত না হওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কারণ, স্থানীয় পর্যায়ে নিজের প্রভাব বাড়ানোর জন্য মন্ত্রী–সংসদ সদস্যরা আত্মীয়–পরিজন ছাড়াও ‘মাই ম্যান’ তৈরি করার লক্ষ্যে পছন্দের প্রার্থী নিয়ে মাঠে নামছেন। এতে দলের তৃণমূলের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে বলে দলের নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন। এ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকেও ব্যবহারের চেষ্টা করছেন মন্ত্রী-সংসদ সদস্যরা। এ জন্যই কড়া অবস্থান।

প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে দেশের ১৫২টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ১৫ এপ্রিল, বাছাই ১৭ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২৩ এপ্রিল।

আর দ্বিতীয় ধাপে ১৬১টি উপজেলায় আগামী ২১ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী, এ ধাপে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২১ এপ্রিল, বাছাই ২৩ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল এবং প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। এই নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে।

নির্বাচন কমিশন জানায়, দেশের ৪৮১টি উপজেলায় চার ধাপের নির্বাচন শুরু হবে ৮ মে, শেষ হবে জুনের প্রথম পক্ষে। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দুই ধাপের তফসিলও ঘোষণা করা হয়েছে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে প্রকাশ্য বিদ্রোহ

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা নিয়ে প্রকাশ্য বিদ্রোহ দেখা দিচ্ছে বিএনপিতে। বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, দল সামলাতে তারা হিমশিম খাচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে এখন পর্যন্ত যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে তাতে শুধুমাত্র প্রথম পর্যায়ের জন্য মনোনয়ন পত্র দাখিল সমাপ্ত হয়েছে। 

প্রথম পর্যায়ে যে মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছে সেখানে এখন পর্যন্ত বিএনপির ৯৭ জন নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। বিএনপির এই নেতারা এখন কিছুতেই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে রাজি নন। বরং তারা বলছেন যে, নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর এ ধরনের সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী এবং অমর্যাদাকর।

বিএনপির যারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের বক্তব্য হচ্ছে যে, তারা দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন না। উপজেলা নির্বাচন দলগতভাবে হচ্ছে না। আর একারণেই উপজেলা নির্বাচনে যদি তারা অংশগ্রহণ করে সেজন্য দল তাদেরকে বাধা দিতে পারে না। বিএনপির যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের বক্তব্য হল সুস্পষ্ট। তারা বলছেন যে, যদি দলীয় প্রতীকে নির্বাচন নির্বাচন হতো এবং দলের জন্য মনোনয়নের ব্যবস্থা করা হত তাহলে এই নির্বাচনে বিএনপির নেতাদেরকে নির্দেশনা দেওয়ার একটা বিষয় ছিল। কিন্তু যেহেতু তারা স্বউদ্যোগে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন সেজন্য এই নির্বাচনের ব্যাপারে কেন্দ্রের কোন নির্দেশনা থাকা উচিত নয় বা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা দিতে পারেন না। 

প্রথম ধাপে ৮ মে অনুষ্ঠিত হবে ১৫২টি উপজেলার নির্বাচন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিভক্ত অবস্থায় রয়েছে। প্রায় প্রতিটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের তিন থেকে চারজন প্রার্থী রয়েছেন বলে জানা গেছে। আর এরকম পরিস্থিতিতে বিএনপির যারা নির্বাচনে ইচ্ছুক তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ। বিভক্ত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একক বিএনপি প্রার্থী উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের জন্য একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে এবং এটি সংগঠনের জন্য লাভ হবে বলে অনেকে মনে করছেন। 

উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন এরকম অন্তত দু জনের সঙ্গে আলাপ করে দেখা গেছে। তারা বলছেন যে, বিএনপি কোনো রকম বিচার বিবেচনা ছাড়া এবং বাস্তবতাকে উপলব্ধি না করেই নির্বাচনের ব্যাপারে একতরফা এবং অবাস্তব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই৷ এমনিতেই বিএনপির সংগঠনের অবস্থা নাজুক। নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকে জেলে, অনেকে পলাতক। এরকম অবস্থায় স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচন সংগঠন শক্তিশালী করার একটি বড় ধরনের উপায় বলে অনেকেই মনে করছেন। আর এ কারণেই তারা কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এবং এ নিয়ে তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন।

বিএনপির অনেক নেতা স্বীকার করেছেন যে, উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে দল চাঙা হত এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম বাড়ানো যেত। আর এ কারণেই তারাও উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা না গ্রহণ করার পক্ষে। তবে বিএনপির বিভিন্ন মাঠ পর্যায়ের নেতা যারা আগ্রহী আছেন তারা বলেছেন যে, বিএনপি যদি তাদেরকে হবিষ্কারও করে তাহলেও তাদের কিছু যায় আসে না। তারপরও তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে রাজি।

বিএনপি   বিদ্রোহ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এক যুগেও নেই ইলিয়াস আলীর সন্ধান, ফেরার প্রত্যাশায় বিএনপি

প্রকাশ: ০৯:৩৩ এএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ঢাকার বনানীর বাসায় ফেরার পথে গাড়িচালক আনসার আলীসহ ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি এম ইলিয়াস আলী। এক যুগ পার হলেও ইলিয়াস আলী জীবিত না মৃত সে খবর কেউ দিতে পারেনি দীর্ঘ এই সময়ে।

তবে সিলেটের বিএনপি নেতারা মনে করেন, ইলিয়াস সরকারের হেফাজতে অক্ষতই আছেন। তাকে ফিরে পেতে কেবল সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন। নিখোঁজের ১২ বছর পূর্তিতে তাকে ফিরে পেতে গতকাল নানা কর্মসূচি পালন করেছে সিলেট বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’র পর সিলেটে গঠন করা হয় ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’। এ বছর ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’র কোনো কর্মসূচি না থাকলেও সমাবেশ, স্মারকলিপি প্রদান এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। এক যুগেও ইলিয়াসের সন্ধান না মিললেও হাল ছাড়েননি বিএনপি নেতারা।

তাদের ধারণা, ইলিয়াস আলী এখনো জীবিত আছেন। ইলিয়াসের অবস্থান সম্পর্কে সরকার জ্ঞাত আছে। কিন্তু সরকারের সদিচ্ছার অভাবে ইলিয়াস আলীর সন্ধান মিলছে না। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগপূর্তির দিন গতকাল জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সিলেট বিএনপি। এ ছাড়া বাদ আসর জেলা বিএনপির উদ্যোগে হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে ইলিয়াস আলীর সন্ধান কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া ইলিয়াসকে ফিরে পেতে বাদ জোহর একই মসজিদে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। স্মারকলিপি প্রদানের আগে গতকাল দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ইলিয়াস আলী ফেরার অপেক্ষায় আছেন সিলেটবাসী। ইলিয়াসের জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়ে সরকার তাকে গুম করেছে।

ইলিয়াস নিখোঁজ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন বলেন, ইলিয়াস আলীর সন্ধান পেতে তার সহধর্মিণী হাই কোর্টে রিট করেছিলেন। কিন্তু সরকারের অদৃশ্য হস্তক্ষেপে এক যুগেও সেই রিটের শুনানি হয়নি। এতে প্রমাণিত হয় ইলিয়াস নিখোঁজের পেছনে সরকার জড়িত।


ইলিয়াস আলী   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন