নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ০৩ অক্টোবর, ২০১৯
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ওয়ান ইলেভেন যেন না আসে সেজন্যই তিনি শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, ওয়ান ইলেভেনের দরকার নাই, দুর্নীতি আমি বন্ধ করবো। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে নানারকম গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে, নানারকম কথাবার্তা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, প্রধানমন্ত্রী গত ১৪ সেপ্টেম্বর দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে শুদ্ধি অভিযানের আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দেন। ওই বৈঠকে তিনি ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক শোভন ও রাব্বানীকে অব্যাহতি দেন এবং সেদিনই তিনি বলেন যে যুবলীগে অনেক মনস্টার তৈরি হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৮ই সেপ্টেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিভিন্ন অভিযান শুরু করেছে। এসব অভিযানে ক্যাসিনো বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত, টেন্ডার বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত একাধিক দুর্বৃত্তকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এই অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষ মনে করছে এটি দুর্নীতির বন্ধের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী একটি উদ্যোগ। তিনি যে দুর্নীতির ব্যাপারে শূন্যসহিষ্ণু নীতি গ্রহণ করেছে সেটি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রমাণ করছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযানের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের সমর্থন থাকলেও শুদ্ধি অভিযানকে ঘিরে রাজনীতিকে কলুষিত করা এবং রাজনীতির অঙ্গনের মানুষগুলোর বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়ানোর এক প্রকল্পে নেমেছে একটি গোষ্ঠী। লক্ষণীয় যে, বিরাজনীতিকরণের যে ধারণা থেকে ওয়ান ইলেভেন তৈরি হয়েছিল সেই ধারণার মতাদর্শের ধারক বাহকরা এখন রাজনীতিকে কলুষিত করা, রাজনীতি যে খারাপ সেটি প্রমাণের চেষ্টা করছে। দেশের প্রধান জাতীয় দুটি দৈনিক এখন প্রতিনিয়ত ব্যক্তিগত চরিত্রহননে নেমেছে। চরিত্রহরণের মূল লক্ষ্য হলো রাজনীতিবিদরা। তারা একের পর এক রাজণীতিবিদ বিশেষ করে যুবলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের অতীত, বর্তমান নিয়ে নানারকম কল্পকাহিনী মিশ্রিত প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।
একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, যুবলীগের একজন দপ্তর সম্পাদক তিনি দপ্তরী ছিলেন। এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে যে, কেউ যদি দপ্তরি বা পিওন থাকেন তাহলে কি তিনি দপ্তর সম্পাদক হতে পারবেন না? বা তাঁর কি রাজনীতি করার অধিকার নেই? নরেন্দ্র মোদি যদি চা বিক্রেতা থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, জিমি কার্টার যদি বাদাম বিক্রেতা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারেন তাহলে একজন শিক্ষিত মানুষ যিনি বেকারত্ব ঘুচাতে দপ্তরি হয়েছিলেন, তিনি কি দপ্তর সম্পাদক হতে পারবেন না?
শুধু তাই নয়, ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির চরিত্র হরণ করা হচ্ছে। সেখানে দুর্নীতির বিবরণ সামান্য। লক্ষ্য হলো শুধু চরিত্রহরণ। এর মাধ্যমে যে কাজটি করা হচ্ছে সেটি হলো রাজনীতি সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক ধারণাকে উস্কে দেওয়া। এই কাজটি করার মাধ্যমে ওয়ান ইলেভেনের যে ব্লু প্রিন্ট সেই ব্লু প্রিন্ট বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সেটা বিরাজনীতিকরণের জন্য নয়, বরং রাজনীতিতে ৭৫ এর পর যে দুর্বত্তায়ন শুরু হয়েছে, রাজনীতিতে যে ক্যাডারচর্চা, সন্ত্রাস, কালো টাকার ঝনঝনানি শুরু হয়েছে- সেখান থেকে তিনি রাজনীতিকে মুক্তি দিতে চান। আর এজন্যই তিনি এই শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন।
রাজনীতিই যে একটি সঠিক পথ এবং রাজনীতিই যে একটি দেশের চালিকাশক্তি, সেটি প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের ষড়যন্ত্রকারীদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে রাজনীতি সম্পর্কে মানুষের একটি নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করে অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের দ্বারা দেশ পরিচালনা করা। সেই ষড়যন্ত্র কি আবার নতুন করে শুরু হয়েছে কিনা, সেই প্রশ্ন রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন চাউর হয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার/এসআর
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।