নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৩০ পিএম, ১৪ নভেম্বর, ২০১৯
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সম্মেলন যত এগিয়ে আসছে তত আলোচনায় আসছে শেখ ফজলে নূর তাপসের নাম। কিন্তু ফজলে নূর তাপস শেষ পর্যন্ত যুবলীগের চেয়ারম্যান হবেন কি হবেন না এ নিয়ে গুঞ্জন রয়েছে। তবে যুবলীগের মাঠ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ মনে করছেন, যে সংকটকাল যুবলীগ অতিবাহিত করছে সেই সংকটকালে ফজলে নূর তাপসের বিকল্প নেই। একজন ক্যারিশমাটিক নেতার মাধ্যমে যুবলীগ তার হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার করতে পারে। তাপসের ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হচ্ছে যে তাপস ক্লিন ইমেজের অধিকারী। তিন বারের এমপি হওয়ার পরও তাপসের বিরুদ্ধে কোনো বদনাম নেই। সবচেয়ে বড় যুক্তি হচ্ছে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণির সন্তান তাপস। ইতোমধ্যেই রাজনীতিতে তাপস একটি জায়গা করে নিয়েছেন। তার ব্যক্তিত্বের জন্য তিনি যুবলীগের জঞ্জাল পরিষ্কার করে একটি শুদ্ধ সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
সম্মেলনের মাত্র আট দিন আগে চেয়ারম্যান হিসেবে জনপ্রিয়দের দৌঁড়ে অনেক এগিয়ে আছে শেখ ফজলে নূর তাপস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেখ ফজলে নূর তাপস চেয়ারম্যান হবেন কিনা তা নিশ্চিত নয়। এর দুইটি কারণ রয়েছে।
১। শেখ ফজলে নূর তাপস চেয়ারম্যান পদ গ্রহণ করতে আদৌ আগ্রহী কিনা। এ বিষয়ে তাপসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু তার ঘনিষ্ঠরা বলছেন তাপস যুবলীগের চেয়ারম্যানের পদ গ্রহণ করতে নানা কারণে আগ্রহী নন। তবে তাপসের ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেছেন যে, শেখ হাসিনার কোনো নির্দেশই তাপস অমান্য করেননি। শেখ হাসিনা যদি তাকে এ দায়িত্ব দেন তাহলে সেখানে না বলার সুযোগ খুবই কম।
২। যুবলীগের নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন একক ভাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার মনোভাব কি সে ব্যপারে এখনো কারো কাছে কোনো সঠিক তথ্য নেই। শেষ পর্যন্ত তিনি যুবলীগের নেতৃত্ব কিভাবে সাজাবেন সেটা একটা বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন। সেকারণেই যুবলীগ চেয়ারম্যান হিসেবে শেখ ফজলে নূর তাপসকে দেখা যাবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়।
অন্যদিকে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে আগামীকাল। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচন জানুয়ারি মাসে করার পক্ষপাতি। কিন্তু আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে যে, আওয়ামী লীগ যেহেতু নভেম্বরের ৩০ তারিখে ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ মহানগরের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে কাজেই জানুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাছাড়া উত্তর এবং দক্ষিণ দুটিকেই সীমানা বিরোধ নিয়ে নানা রকম সমস্যা রয়েছে। সেগুলোর ব্যপারে যে কেউ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আদালতের দারস্থ হতে পারেন।
এই বাস্তবতায় শেষ পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন মার্চে গড়াতে পারে। জানুয়ারিতে হোক কিংবা মার্চে হোক ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন নিয়ে ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগের ভেতরে নানা রকম কথাবার্তা এবং আলোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের উত্তর এবং দক্ষিণ দুটোই প্রায় অভিভাবকহীন। গত মেয়াদে যে মেয়ররা দায়িত্ব পালন করেছেন তারা দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করেছেন বা তারা জনগণকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছেন এমন বিশ্বাস আওয়ামী লীগ নেতারাও করছেন না। এই বিবেচনা থেকেই নতুন মেয়রের বিষয়টি সামনে এসেছে এবং এখানে একাধিক ব্যক্তির নাম আলোচিত হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা চাচ্ছেন যে উত্তর এবং দক্ষিণের দুজন হেভিওয়েট প্রার্থী দিতে রাজনীতিতে যাদের ক্লিন ইমেজ রয়েছে, যারা জনপ্রিয় এবং জনগণের চাহিদাগুলো পূরণ করতে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করবে। সেখানেও শেখ ফজলে নূর তাপসের নাম আলোচনায় এসেছে।
শেষ পর্যন্ত শেখ ফজলে নূর তাপস যুবলীগের চেয়ারম্যান হবেন নাকি মেয়র হবেন নাকি দুটোর কোনোটাতেই তিনি থাকবেন না। বর্তমানে তিনি যেভাবেই আছেন সেভাবেই থাকবেন সেই সিদ্ধান্ত নিবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।