নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৫ নভেম্বর, ২০১৯
গতকাল জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কিছু ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ যখনই উন্নয়ন এবং অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়, তখনই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো না কোনো ষড়যন্ত্র হয়। আবার দেশে নতুন করে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অবশ্য তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন যে, এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং আরও এগিয়ে যাবে।
বিভিন্ন অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে, সাম্প্রতিক সময়ে অন্তত ৫টি বিষয়ে সরকারের জনপ্রিয়তা নষ্ট করা এবং সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলার নীল নকশা প্রণীত হয়েছে। এই নীল নকশার অংশ হিসেবেই কিছু কর্মকাণ্ড হচ্ছে, যে কর্মকাণ্ডে জনগণ সরকারের ওপর অস্বস্তি এবং বিরক্তি প্রকাশ করেছে। ৫টি বিষয়ে জনমনে সরকারের ব্যাপারে জনগণের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে। সেগুলো হলো;
পেঁয়াজের দাম
পেঁয়াজের দাম এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, পেঁয়াজের দাম বাড়তে পারে। কিন্তু লাগামহীনভাবে এভাবে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি একটি সুস্পষ্ট সিন্ডিকেটের কারসাজি। একটি মহল সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্যই পেঁয়াজ গুদামজাত করছেন, পেঁয়াজ পঁচিয়ে ফেলা হচ্ছে। তারপরেও পেঁয়াজ বাজারে না ছেড়ে কৃত্রিমভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যদি পেঁয়াজের সংকট থাকতো তাহলে বাজারে পেঁয়াজই পাওয়া যেতো না। পেঁয়াজ যেহেতু পাওয়া যাচ্ছে এবং সিন্ডিকেটের কারসাজিতে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে, তার মানে এর পিছনে একটি গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। যখন দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ে, তখন সাধারণ মানুষের ক্ষোভ এবং অসন্তোষ সরকারের ওপর গিয়েই বর্তায়। কারণ বাজার মনিটরিংসহ বাজার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সরকারেরই। তাই একটি মহল সরকারকে সংকটে ফেলানোর জন্যই কৃত্রিমভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন।
চালের বাজার
পেঁয়াজের সঙ্গে সঙ্গে চালের বাজারও অস্থির হয়ে উঠছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন রকম চালের দাম কেজিপ্রতি ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতেও সরকার মনে করছে যে, চালের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রেও একটি মহল কারসাজি করছে। কৃত্রিমভাবে চালের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে বলে জানা গেছে। সূত্রমতে, পেঁয়াজের পর চালের বাজারও যদি অস্থির করা যায় তাহলে সরকারকে আরও বেশি বেকায়দায় ফেলা সহজ হবে। এখানেও একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে।
রেল দুর্ঘটনা
পরপর দুটি রেল দুঘটনার পরে সরকারের টনক নড়েছে। সরকারের একাধিক মহল এগুলো নিছকই দুর্ঘটনা নাকি এর পিছনে অন্য কোনো রহস্য রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছেন যে, রেল দুর্ঘটনার পিছনে কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। ধারণা করা হচ্ছে যে, বার বার দুর্ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা হতে পারে না। এর পিছনে অন্য কোনো রহস্য থাকতে পারে। তবে, রেল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই প্রতিটি দুর্ঘটনার জন্য ৫টি করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটিগুলোতে ষড়যন্ত্রের আলামত পেলে তা উদ্ধার হবে বলেও রেল কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছে।
দুর্নীতি
সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে অভিযান পরিচালনা করেছেন, পরিচালনা সেই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হচ্ছে। এসমস্ত খবরের কারণে সরকারি অফিস আদালতগুলোতে কাজকর্মে একটা স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে সরকারের অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা চলছে। এখন উন্নয়ন বাজেট অনেক বেশি বড়। কিন্তু এই স্থবিরতা এবং সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয় এবং অনীহার কারণে হঠাৎ করে উন্নয়ন পরিকল্পনা থমকে গেছে বলেও সরকারের বিভিন্ন মহলে বলা হচ্ছে। এমন একজন কর্মকর্তা বাংলা ইনসাইডারকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন যে, কাজ করলেই তো দুর্নীতির অভিযোগ আসবে, কাজ করলেই দুদক ধরবে। এজন্য কাজ না করাটাই ভালো। এরকম মানসিকতা খুব সুপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হচ্ছে, যাতে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ থেকে নিজেদের গুটিয়ে ফেলেন। এর ফলে সরকারের উন্নয়ন তৎপরতাগুলো মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। এটাকেও ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগের অনেক নীতিনির্ধারকেরা।
শুদ্ধি অভিযান নিয়ে বিভ্রান্তি
শেখ হাসিনা শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছিলেন তাদের বিরুদ্ধে যারা দলের ভেতর, দেশে যারা অপকর্ম করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অর্জনগুলোকে ম্লান করছে। কিন্তু এই শুদ্ধি অভিযানের মাঝপথে অভিযান নিয়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তি এবং প্রশ্ন উঠেছে। শুদ্ধি অভিযানের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে কোনো আভাসও পাওয়া যাচ্ছে না। শুদ্ধি অভিযান কি থেমে আছে নাকি শুদ্ধি অভিযান আবার নতুন করে শুরু হবে, শুদ্ধি অভিযানের গতিপ্রকৃতি কোনদিকে যাবে- তা নিয়েও জনমনে নানা প্রশ্ন রয়েছে। এসব প্রশ্নের উত্তর মেলাতে না পেরে জনগণের মধ্যে নানারকম চিন্তাভাবনা তৈরি হয়েছে, যেটা সরকারের জন্য ইতিবাচক নয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, এই পঞ্চমুখী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে সরকারকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। আস্থা অর্জন করতে না পারলে সরকার যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো এগিয়ে নিচ্ছে, সেগুলো বাধাগ্রস্ত হবে।
মন্তব্য করুন
খন্দকার মোশাররফ হোসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জন বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে পিছু
হটল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির যেসব নেতা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ছিলেন, এরই
মধ্যে তাদের প্রার্থী না হতে বারণ করা হয়েছে। জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয়
নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে আলোচনার পর উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার এ সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রের
এ সিদ্ধান্ত স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতারা তৃণমূলে জানিয়ে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে যারা মনোনয়নপত্র
জমা দিয়েছেন, তাদের প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে জামায়াত কোনো আনুষ্ঠানিক
ঘোষণা দেয়নি। দলীয় সিদ্ধান্ত না থাকলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াতের অনেক নেতা স্বতন্ত্র
প্রার্থী হিসেবে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সম্ভাব্য
প্রার্থীরা স্থানীয়ভাবে নানারকম প্রচার ও গণসংযোগও করছিলেন। বিশেষ করে রোজার মধ্যে
এবং ঈদুল ফিতরে তারা ব্যাপক গণসংযোগ করেছেন।
দলটির নেতারা বলছেন, মূলত বেশকিছু কারণে
বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাচ্ছে না জামায়াত। তার মধ্যে মোটাদাগে চারটি কারণের
কথা বলছেন নেতারা।
কারণগুলো হচ্ছে…
১। মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগে ক্ষমতাসীনদের
‘হস্তক্ষেপ’
২। বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থা ও পরিবেশের
প্রতি জনগণের ‘আস্থার সংকট’
৩। গণতন্ত্র না থাকা এবং
৪। উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে ‘অবৈধ
সরকার’কে বৈধতা না দেওয়া
এদিকে, উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখের (সোমবার) আগেই সিদ্ধান্ত বদল করায় জামায়াতের তৃণমূলে
অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মাঠপর্যায়ে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, যশোর, সাতক্ষীরা,
চুয়াডাঙ্গাসহ বেশকিছু উপজেলায় জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী
হিসেবে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি উপজেলার
সম্ভাব্য প্রার্থীরা বলেন, নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত এমন সময় এলো, যখন তারা ব্যাপকভাবে
গণসংযোগ করছিলেন। এতে তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে নেতিবাচক বার্তা যায়।
নির্বাচনে গেলে কী লাভ আর কী ক্ষতি—এটা ভেবে অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন দলের
নীতিনির্ধারকরা। তবে সার্বিক পরিস্থিতিতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা যে সিদ্ধান্ত
নিয়েছেন, সেটাকেও সম্মান জানাতে চান তারা।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) জামায়াতে
ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি
বিবেচনায় উপজেলা নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত। এরই মধ্যে সারা দেশে দলীয়
সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ মনোনয়ন জমা দিলে তা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি-জামায়াতসহ
প্রায় ৬৩টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন
বর্জন করেছে। বিএনপিও এ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। ইসলামী দলগুলোর অন্যতম চরমোনাই
পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে না যাওয়ার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সবমিলিয়ে জামায়াতকেও শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত
নিতে হলো।
এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের
বিষয়ে শুরুর দিকে কিছুটা নমনীয় ছিল জামায়াত। জয়ের সম্ভাবনা আছে এবং স্থানীয়ভাবে প্রভাব
আছে—এমন উপজেলাগুলোতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত
নিয়েছিল দলটি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এবং প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট
উপজেলা ও জেলা কমিটির দায়িত্বশীল নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সে মোতাবেক সম্ভাব্য
প্রার্থীরা প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের চলামান রাজনৈতিক
ও সার্বিক পরিস্থিতিতে ঈদের আগে দলের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের
বৈঠক ডাকে জামায়াতে ইসলামী। সেখানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা
হয়। একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ঈদুল ফিতরের পরপরই গত
শনিবার উপজেলা নির্বাচন না করার বিষয়ে জেলা ও উপজেলার দায়িত্বশীল নেতাদের মাধ্যমে তৃণমূলে
মৌখিকভাবে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ব্যাপারে জামায়াতের
নেতারা বলছেন, তারা পর্যালোচনা করে দেখেছেন যে, দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো
পরিবেশ নেই। জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে ভূমিকা
রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। যার সর্বশেষ প্রমাণ গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন।
দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অসংখ্য
রাজনৈতিক দল এ সরকারের অধীনে নির্বাচন বর্জন করেছে। এ অবস্থায় জামায়াতে ইসলামী উপজেলা
নির্বাচনে অংশ নিয়ে ‘অবৈধ সরকার’কে বৈধতা দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। তা ছাড়া নির্বাচনের
আগেই বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীদের হুমকি দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। এসব
বিষয়কে বিবেচনা করে উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত।
গতকাল জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি
জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী শুধু নয়, বাংলাদেশের কোনো গণতান্ত্রিক
দল উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। কারণ, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশের
জনগণ ভোট দিতে যায়নি। তারা একতরফা নির্বাচন বর্জন করেছে। সেই জনরোষ এখনো আছে। সুতরাং
যেসব কারণে আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছি, সেসব কারণেই উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছি
না। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী জনগণের জন্য রাজনীতি করে। জনগণের প্রতি জামায়াতের দায়বদ্ধতা
আছে। দায়িত্বশীল দল হিসেবে জামায়াত জনমতকে উপেক্ষা করে নির্বাচনে যেতে পারে না’।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৪ সালের জাতীয়
সংসদ নির্বাচনের পরপর অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে জামায়াতের শতাধিক প্রার্থী
উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলাসহ) হন। ২০০৯ সালের নির্বাচনে ২৪টি উপজেলায়
চেয়ারম্যানসহ ৩৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলাসহ) নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে দলীয়
প্রতীকে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন বর্জন করে জামায়াত। দলের নিবন্ধন না থাকলেও স্বতন্ত্র
প্রার্থী হওয়ার সুযোগ ছিল জামায়াত নেতাদের। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তে সেবার কেউ নির্বাচনে
অংশ নেননি।
উপজেলা নির্বাচন জামায়াত বিএনপি
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-কে বিজয়কে সুসংহত করার পথে
প্রতিবন্ধকতা উল্লেখ করে সন্ত্রাসী এ অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি
৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাদের বলেন, বিজয়কে সুসংহত করার পথে প্রতিবন্ধকতা হলো বিএনপির
মতো সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী অশুভ শক্তি। এ শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। আজকের এ দিনে
বিএনপিসহ স্বাধীনতাবিরোধী সন্ত্রাসী শক্তি সব অপশক্তিকে, যারা আমাদের বিজয়কে সংহত
করার প্রতিবন্ধক, এদের আমরা পরাজিত করব, পরাভূত করব, প্রতিহত করব। আমাদের লড়াইকে আমরা
এগিয়ে নিয়ে যাব।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি তো কোনো দাবিকে বিচ্ছিন্নভাবে
কিছু বলতে পারি না। মন্ত্রিসভা আছে, প্রধানমন্ত্রী আছেন। তারা এত বছর পর দাবিটা তুলছেন,
কেন তুলছেন এটাও জানার দরকার আছে।
তিনি আরও বলেন, আজকের এই দিনে আমরা শপথ নেব মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ধারাবাহিক
লড়াইয়ে আমরা এগিয়ে যাব। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বয়ে নিয়ে
যাব, এটাই হোক আমাদের শপথ।
এর আগে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার স্থপতি
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। প্রধানমন্ত্রীর
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর
প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বিএনপি মুজিবনগর দিবস ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে যে, মন্ত্রী এবং এমপিরা উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থীকে সমর্থন করতে পারবে না। তাদেরকে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই রকম বার্তা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে লিখিত নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত নির্দেশনা উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা উপজেলা নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করাতে মাঠে নেমেছেন। এমনকি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নির্বাচনী এলাকাতেই এমপিরা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করছেন।
উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে পিছু হটল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির যেসব নেতা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ছিলেন, এরই মধ্যে তাদের প্রার্থী না হতে বারণ করা হয়েছে। জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে আলোচনার পর উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার এ সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রের এ সিদ্ধান্ত স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতারা তৃণমূলে জানিয়ে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।