নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২১ নভেম্বর, ২০১৯
সাম্প্রতিক সময়ে লবণ নিয়ে গুজব সৃষ্টি, পরিবহনে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা এবং পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে বিএনপি এবং জামায়াতের যোগসাজশ পাওয়া গেছে। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এ ব্যাপারে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের ১৪ জন নেতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আরো কিছু তদন্তের পর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, লবণের গুজব সৃষ্টি করা হয়েছিল লন্ডন থেকে। লন্ডন থেকে পরিচালিত একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে বাংলাদেশে লবণের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে, বাজারে লবণ পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে তথ্য প্রচার করা হয়। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঐ ফেসবুক একাউন্টসহ আরো কয়েকটি ফেসবুক একাউন্ট লন্ডনে তারেক জিয়ার তত্বাবধানে পরিচালিত হয় এবং সেখানে থেকেই এই গুজবগুলো ছড়ানো হয়ছে।
এছাড়া একটি টেলিফোন রেকর্ড সরকারের হাতে এসে পৌঁছেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে লন্ডন থেকে তারেক জিয়া বিএনপির বিভিন্ন নেতাকে টেলিফোন করে লবণ সংকট সৃষ্টির জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, তারেক জিয়া যে কোনো মূল্যে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে যাওয়া, সাধারণ মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলার কথা বলেছেন। যাদের সঙ্গে তারেক জিয়ার কথোপকথন হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল মিন্টু, বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু এবং চট্টগ্রামের আরো দুইজন নেতা। এদের সঙ্গে টেলিফোনে লবণের সংকট বিষয়ে নানা রকম আলোচনা করেছেন তারেক জিয়া। শুধু তারেক জিয়া নন এই ষড়যন্ত্রের সাথে আরো কয়েকজন নেতা জড়িত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, তারেকের ফোনের পরই আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে লবণ উৎপাদনকারীদেরকে টেলিফোন করেন। এ রকম প্রায় ৮টি টেলিফোন কল সরকারের হাতে রয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, লবণের উৎপাদন ধীরগতি করা, লবণের স্টক কি আছে না নেই সেই বিষয়ে তথ্য নেওয়া।
সরকারের সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি নেতা আবদুল আলম মিন্টু গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে কথা বলেছেন। আর এসব কথা বার্তার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল লবণ সংকট সৃষ্টি করা।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, লবন সংকট ছাড়াও, পরিবহন সংকট যেন ত্বরান্বিত হওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদী হয়। পরিবহন শ্রমিকরা যেন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যোগ দেয় সেজন্য বিএনপির পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডন থেকে একাধিক নির্দেশনা দিয়েছেন। বিএনপির নেতা মির্জা আব্বাস এবং আরেক নেতা হাবিবুন্নবী খান সোহেলসহ অন্তত ৮জন নেতার সঙ্গে পরিবহন সমস্যা সংক্রান্ত কথা বলেছেন। তারেক জিয়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে টেলিফোন করে নতুন আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণের জন্য এবং পরিবহন মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে সংহতি জানানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন এমন তথ্য সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কাছে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পেঁয়াজের আড়তদারদের বিএনপির অন্তত দুজন নেতা নিয়মিত টেলিফোন করেছেন এবং পেঁয়াজ বাজারে না ছাড়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। মজুদকৃত পেঁয়াজের জন্য নগদ অর্থ পরিশোধ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, সরকারের বিরুদ্ধে অস্থিরত সৃষ্টির জন্য দেশে বিএনপির সাতজন নেতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের সঙ্গে লন্ডন, দুবাই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপি এবং জামাতের একাধিক নেতার সঙ্গে কথোপকথনের খবর সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই ৭ জন নেতার মধ্যে রয়েছে; মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, মির্জা আব্বাস, হাবিবুন্নবী খান সোহেল, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
জানা গেছে, সরকার এদের ব্যাপারে আরো অনুসন্ধান চালাচ্ছে। অনুসন্ধানের পরে এদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।