নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ৩০ নভেম্বর, ২০১৯
ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের আওয়ামী লীগের নতুন সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ঢাকার মহানগরীর এই দুই অংশ যেকোন রাজনৈতিক দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগ যে দল এবং সরকার আলাদা নীতি গ্রহণ করেছে সেজন্য এই উত্তর এবং দক্ষিণের এমন দুজনকে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে তারা এমপি বা মন্ত্রী নন। এই ধারাবাহিকতা অন্যন্য কমিটিতেও ছিল।
উত্তর এবং দক্ষিণের কমিটি ঘোষণা করার সঙ্গে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিশেষ করে একসময়কার অখন্ড ঢাকার সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার রাজনৈতিক জীবনে পরিসমাপ্তি হলো এই নতুন কমিটির মাধ্যমে। মায়া ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাননি। এর আগে তিনি চাঁদপুর থেকে নির্বাচিত হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ মন্ত্রিসভার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অখন্ড ঢাকার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মায়ার সুনাম ছিল। বিশেষ করে ৩০ শে ডিসেম্বর নির্বাচনে যখন মনোনয়ন পাননি তখন অনেকেই মনে করেছিল যে, মায়াকে হয়তো শেষ পর্যন্ত উত্তরের সভাপতি করা হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত মায়া সভাপতির পদে থাকতে পারিনি। এর ফলে মায়ার রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি পাওয়া গেছে।
আওয়ামীলীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, মায়াকে নিয়ে কোন কোন মহলে আপত্তি রয়েছে। এছাড়া মায়ার বিরুদ্ধে কিছু দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এবং তাঁর ছেলে আর মেয়ে জামাইয়ের অপকর্মের দায় আওয়ামীলীগ নিতে চায়না বলেই মায়াকে বাদ দেয়া হয়েছে- বলে আওয়ামীলীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ নতুন কমিটির সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আরেকজনের রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তির ইঙ্গিত পাওয়া গেল। তিনি হলেন ঢাকার লালবাগের একসময়ের আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। তিনি ছাত্রলীগের নেতাও ছিলেন। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনে সংস্কারপন্থী হবার কারণেই দলের মূল্ধারা থেকে ছিটকে পড়েন। গত তিনটি নির্বাচনের একটিতেও মহিউদ্দিন মনোনয়ন পাননি। এখন তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু রাজনীতির মাঠে তার শেষ আশা ভরসা টুকু শেষ হয়ে গেলো। এবার ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি হতে চেয়েছিলেন মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। কিন্তু সেই দৌঁড়ে বেশি দূরে যেতে পারেননি তিনি। শুধু মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন নন মোফাজ্জল চৌধুরী মায়াসহ আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে অনেকেরই রাজনীতির জীবনের ইতি ঘটলো।
ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন শাহ আলম মুরাদ। আর এটা ছিল তার জন্য একটি বড় সুযোগ। কিন্তু দায়িত্ব পালনকালে এই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। বরং তার বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে এমপি না হলেও এবার তাকে সরে যেতে হয়েছে দলের নেতৃত্ব থেকে। পাশাপাশি এই সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে তার রাজনৈতিক জীবনও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।
একই ভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়ল ঢাকা দক্ষিণের সদ্য বিদায়ী সভাপতি আবুল হাসনাতের রাজনীতিও। তিনিও মন্ত্রী বা এমপি কিছু নন। নতুন কমিটি গঠনের মধ্যে দিয়ে প্রবীন এই রাজনৈতিক নেতার রাজনীতির অধ্যায়ের অবসান ঘটলো।
অন্যদিকে ঢাকা উত্তরে রহমতউল্লা ও সাদেক খান দুজনই এমপি হওয়ায় রাজনীতিতে টিকে থাকার লড়াইয়ে এগিয়ে গেলেন। নির্বাচনী এলাকায় কাজের মাধ্যমে তারা নির্বাচিত প্রতিনিধি রাজিনীতিতে টিকে রইলেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।