নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০১ ডিসেম্বর, ২০১৯
২০১৮ সালের মে মাসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে কমিটি গঠনে ব্যর্থ হন কাউন্সিলররা। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই কমিটি গঠনের দায়িত্ব নিয়ে সম্মেলনের আড়াই মাস পর কমিটি গঠন করে দেন। ওই সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গোলাম রাব্বানীকে দায়িত্ব দেন। দুইজনই মেধাবী শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন আনুষদে পড়াশুনা করেছেন। ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক করার আগে তাদেরকে যাচাই বাছাই করা হয়েছিল। তাদের ঠিকুজিও খোঁজা হয়েছিল। দেখা গিয়েছিল পারিবারিকভাবেই তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু এই দুজনকে সংগঠন থেকে বিদায় দিতে হয়েছে চাঁদাবাজির অভিযোগে।
শুধু চাঁদাবাজির অভিযোগ নয়, শোভন-রাব্বানী দায়িত্ব গ্রহণের পর দীর্ঘদিন পর যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল তাতে অনেক অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড এবং বিতর্কিতদের স্থান দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে ছাত্রলীগের মাঠ পর্যায়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আন্দোলনের কর্মসূচী গ্রহণ করেছিল। শেষ পর্যন্ত সেটি প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত গড়িয়েছিল। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাদের ব্যাপারে প্রশ্ন উঠেছে তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে এই অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছিলেন। এখন ছাত্রলীগে শোভন-রাব্বানী নেই। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক দিয়ে ছাত্রলীগ চলছে। কিন্তু যে কমিটি নিয়ে বিতর্ক হয়েছে তার অবসান ঘটেনি। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব টিম ছাত্রলীগের এই কমিটি নিয়ে তথ্য অনুসন্ধান করেছে। এই নিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছে। খোঁজ খবর নিয়ে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা গেছে যে, শোভন-রাব্বানীর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটির দায় একা শোভন- রাব্বানীর ছিল না। বরং শোভন রাব্বানীর দায় ছিল নিতান্ত সামান্য। এই কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন খুব শীঘ্রই আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেওয়া হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বিশেষ টিম অনুসন্ধানে পেয়েছে যে, আওয়ামী লীগের ৪ নেতাকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
এদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল এবং সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাছিম।
তবে বাহাউদ্দীন নাছিম এই গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেকে খুব একটা জড়িত করেননি। কারণ স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। বাকি তিন নেতা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আর কেন্দ্রীয় কমিটিতে যারা ঢুকেছে তাদের প্রত্যেকেই ঐ তিন নেতার আশীর্বাদপুষ্ট বলে অনুসন্ধানে দেখা গেছে। বিতর্কিত অনেকের জন্যই ঐ তিন নেতা সুপারিশ করেছেন বলেও তদন্তে পাওয়া গেছে।
জানা গেছে যে, বিতর্কিতদের নামের তালিকা যখন চূড়ান্ত করা হয় তখন এই তিন নেতা অনেক তথ্য গোপন করেছেন। কারণ বিতর্কিতদের অনেকেই এই তিন নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ট এবং অনুগ্রহ পুষ্ট।
জানা গেছে যে, এ কারণে এই কমিটি নিয়ে যখন বিতর্ক ওঠে এবং ছাত্রলীগের একাংশ অবস্থান ধর্মঘটসহ নানা কর্মসূচি পালন করে তখন এই তিন নেতা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। বরং তারা তথ্য গোপন করেছেন। এর ফলে ছাত্রলীগের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শোভন-রাব্বানী যেহেতু ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন না। সেজন্য তারা স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন নেতা কর্মীদের খুব কমই চিনতেন। এ কারণে তারা সিনিয়র ঐ তিন নেতার উপর নির্ভরশীল হয়েছিলেন। সিনিয়র তিন নেতাই ঐ কমিটি তৈরি করেছিল। ফলে কমিটিতে বিতর্কিতরা জায়গা পায়। আর এ কারণেই অভিযোগের তীর এই তিন নেতার ওপর।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ছাত্রলীগের এই কমিটিগুলো পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনের পরপরই আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের কমিটিতে হাত দিয়ে কমিটিগুলোকে পুনর্গঠন করবেন।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।