নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ০২ ডিসেম্বর, ২০১৯
আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হচ্ছে আগামী ২০ এবং ২১ ডিসেম্বর। এই কাউন্সিল অধিবেশন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে এখন তৎপরতা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের সম্মেলনগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এই জেলা পর্যায়ের সম্মেলনগুলোর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব নিয়েও নানা রকম আলোচনা এবং পক্ষ বিপক্ষ শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, আওয়ামী লীগের এবারের কাউন্সিলে মূল বিষয় হলো যে, আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্ধারণ। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্ধারণের চিন্তা কোন নেতাকর্মী এই মুহূর্তে কল্পনাও করতে পারে না। তাই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে দলের সাধারণ সম্পাদক কে হবেন? সাধারণত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে যিনি একবার নির্বাচিত হন তিনি দ্বিতীয় দফাতেও দায়িত্ব পালন করেন। তবে একাধিক সময় এরকম ব্যত্যয় ঘটেছে। আব্দুল জলিল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকার পর তিনি দ্বিতীয়বার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। তবে সেটা ছিল একটা ভিন্ন প্রেক্ষাপট ভিন্ন সময়। আবার সাম্প্রতিক সময় যে বিভিন্ন কাউন্সিলগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেই কাউন্সিল অধিবেশনগুলোতে দ্বিতীয়বারের মত অনেকে নেতৃত্বে আসতে পারছেন না। যেমন ঢাকা উত্তর দক্ষিণে নতুন নেতৃত্ব আনা হয়েছে। সেই বিবেচনা থেকে আওয়ামী লীগের মধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে, কাউন্সিলে কি শেষ পর্যন্ত ওবায়দুল কাদের থাকছেন?
এখানে আরেকটি বড় ফ্যাক্টর কাজ করছে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। সেটা হলো যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিক ভাষণে কিংবা ঘরোয়া বৈঠকে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, দলে তিনি পূর্ণকালীন সাধারণ সম্পাদক চান। ঢাকা মহানগরের সম্মেলনের বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, জাতির পিতা মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এই বাস্তবতায় এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে যে, দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কি ওবায়দুল কাদের শেষ পর্যন্ত থাকতে পারবেন?
ওবায়দুল কাদের সেতু মন্ত্রণালয়ের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বপ্নের পদ্মা সেতু হচ্ছে এবং মেট্রোরেলের কাজ চলছে। কাজেই এই অবস্থায় তাকে মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র দল পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে এমনটা বিশ্বাসযোগ্য মনে করছেন না অনেকে।
সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাককে মাঠে তৎপর দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে বিভিন্ন সম্মেলনগুলোতে তার পক্ষে আওয়াজ উঠেছে বলেও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আব্দুর রাজ্জাক শিক্ষিত এবং তিনি দায়িত্ব পেলে মন্ত্রীত্ব ছাড়তেও রাজি বলে তার ঘনিষ্ঠরা বলছেন। এই বিবেচনা থেকেই সম্মেলনের সময় যত এগিয়ে আসছে তত ওবায়দুল কাদের আর রাজ্জাকের ব্যবধান কমছে।
তবে অনেকেই বলছে, এই দুজনার বাইরে তৃতীয় চিন্তাও আওয়ামী লীগের মধ্যে আসতে পারে। আপাতত যে ১৮ টি জেলায় সম্মেলন হয়েছে। সে সম্মেলনগুলোতে আগামী কাউন্সিলের জন্য যে কাউন্সিলর নির্বাচন হয়েছে তাদের মধ্যে ড. রাজ্জাক এবং ওবায়দুল কাদেরের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে গত মেয়াদে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এই সময় তার পক্ষে বিপক্ষে মত তৈরী হয়েছে। দলের কেউ কেউ মনে করেন যে, ওবায়দুল কাদের কর্তৃত্ববাদী। তার গ্রুপের লোকজনকেই তিনি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন। আবার এই ব্যাপারে ভিন্ন মতও দিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের প্রচুর সময় দিয়েছেন এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন। এ কারণে তার কোনো বিকল্প নেই। ওবায়দুল কাদের যেহেতু ছাত্রলীগের নেতৃত্ব থেকে উঠে আসা। তাই তার একটা শক্তিশালী গ্রুপ আছে। আবার আওয়ামী লীগে যারা একটু আদর্শিক চিন্তা করে, যারা একটু মার্জিত ও শিক্ষিত ঘারানার নেতৃত্ব পছন্দ করে তাদের পছন্দে রয়েছেন ড. রাজ্জাক।
একজন ভদ্র সজ্জন হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতা বলছেন সাধারন সম্পাদক কে হবেন সেটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছার উপর। এবারের কাউন্সিলগুলোতে এ বিষয়ে তিনি একেবারেই নিরব রয়েছেন। আর কোনো বিষয়েই তার মনোভাব কি তা জানা যাচ্ছে না। কাজেই শেষ পর্যন্ত ওবায়দুল কাদের নাকি ড. রাজ্জাক নাকি অন্য কেউ হবেন তা যেমন নির্ধারণ করবে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা, তেমনি বোঝার জন্য আরো সময় অপেক্ষা করতে হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।