নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ০২ ডিসেম্বর, ২০১৯
আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন আগামী ২০ এবং ২১ ডিসেম্বর। আওয়ামী লীগের এই কাউন্সিলকে ঘিরে ত্যাগী পরীক্ষিত এবং দু:সময়ের সাথীদের খোঁজা হচ্ছে। সে কারণেই পাদপ্রদীপে এসেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী এবং সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আবুল হোসেন। সৈয়দ আবুল হোসেন ২০০৯ সালে সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু পদ্মা সেতুর কথিত অভিযোগে তাকে মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে দেখা যায় যে, পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির যে অভিযোগ বিশ্বব্যাংক করেছিল সেই অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট। সেই অভিযোগের পেছনে কোন সত্যতা ছিল না। বরং শান্তিতে নোবেলজীয় অর্থনীতিবিদ ড. ইউনুসের প্ররোচনায় পদ্মা সেতু নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কলঙ্ক লেপনের প্রয়াস চালানো হয়েছিল।
আবুল হোসেন সেই যে মন্ত্রীত্ব থেকে সরে যান, তারপর আস্তে আস্তে তিনি নিজেকে রাজনীতি থেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। মাদারিপুরের আসন থেকে গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে আবুল হোসেন মনোনয়নও পাননি। মনোনয়ন পেয়েছিলেন আব্দুস সোবহান গোলাপ। আব্দুস সোবহান গোলাপ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী থেকে দপ্তর সম্পাদক হন এবং মাদারীপুর ৩ আসনে নির্বাচন করেন। কিন্তু মাদারিপুর ৩ আসনটি সৈয়দ আবুল হোসেনের। তিনি ওই এলাকার অবিসংবাদিত জনপ্রিয় নেতা।
ঐ এলাকায় তাঁর নামে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে এলাকার মানুষ দলমত নির্বিশেষে তাঁর প্রতি অনুগত। তাছাড়া সরকারের নীতিনির্ধারকরা বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নিজে মনে করেন, আবুল হোসেনকে যেভাবে মন্ত্রিসভা থেকে বের করা হয়েছিল, তা ছিল অযৌক্তিক। প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে একাধিক বৈঠকে সেই কথা বলেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আবুল হোসেনের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের আবার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ শুরু হয়েছে এবং এবার কাউন্সিলের মাধ্যমে আবুল হোসেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ফিরে আসতে পারেন। কয়েকদফা তাঁর সাথে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হয়েছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়া সৈয়দ আবুল হোসেন এখন নিয়মিত এলাকায় যাচ্ছেন। যদিও তাঁর ঘনিষ্ঠ মানুষরা বলছে, আবুল হোসেন সবসময় এলাকার উন্নতির জন্য কাজ করেছে। তিনি মন্ত্রী বা এমপি থাকুন বা না থাকুন- তিনি এলাকার প্রতি সবসময়ই সংবেদনশীল।
আওয়ামীলীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আবুল হোসেন আওয়ামীলীগের দুঃসময়ের সাথী এবং আওয়ামীলীগের বিপদের সময় তাকে সবসময় পাশে পাওয়া গেছে। তাছাড়া পদ্মাসেতু নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে যে মিথ্যাচার করা হয়েছিল সেই মিথ্যাচারের মুখে তিনি পদত্যাগ করেছিলেন। তবে তাকে কখনো পুরস্কৃত করা হয়নি। অথচ একই কারণে সেই সময়কার সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া জেলে গিয়েছিলেন। তার পুরস্কার তিনি পরবর্তীতে পেয়েছেন। মোশাররফ হোসেন শিল্প সচিব থেকে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তাই আওয়ামী লীগের মধ্যেই কথা উঠেছে মোশাররফ হোসেন যদি পুরস্কৃত হন তাহলে আবুল হোসেন কেনো বঞ্চিত হবেন। আর এটা সরকারের নীতি নির্ধারকের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনার ভিত্তিতেই এবার কাউন্সিলে সৈয়দ আবুল হোসেনকে ভালো পদে দেখা যেতে পারে। কিন্তু আবুল হোসেন আওয়ামী লীগে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে এলে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন একই এলাকার আবদুস সোবহান গোলাপ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আবুল হোসেনের ফিরে আসার খবরে সবচেয়ে আতঙ্কে পড়েছেন আবদুস সোবহান গোলাপ। গত দুই মেয়াদে দাপট দেখানো এই নেতা এখন আতঙ্কে ভুগছেন। তিনি মনে করছেন আবুল হোসেনের উত্থানে তার রাজনৈতিক অবস্থান টলটলায়মান হয়ে যেতে পারে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।