নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৯
টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের ১১ মাস পূর্ণ হয়েছে। এই ১১ মাসে সরকার নানা টানাপোড়েনের মধ্যে থাকলেও কতগুলো সুনির্দষ্ট সাফল্য রয়েছে। এই সাফল্যগুলো দীর্ঘমেয়াদী এবং সুদূরপ্রসারী। এই সাফল্যগুলো বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। বাংলা ইনসাইডারের পর্যবেক্ষণে সরকারের ১১ টি সাফল্য পাওয়া গেল।
বিশ্ব নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার আবির্ভাব
বিশ্ব নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার স্বীকৃতি মিলেছে। তৃতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর এই একজন নেতা বাঙালি জাতি পেয়েছেন যিনি সারাবিশ্বে সমাদৃত। এমনকি দেশে তিনি অভূতপূর্ব জনপ্রিয়। তিনি দলের স্বার্থের উর্ধ্বে জনগনের কল্যানে কাজ করতে পারেন সেটি তিনি প্রমাণ করেছেন। রোহিঙ্গা ইস্যু, মৌলবাদ এবং সন্ত্রাসের বিশ্বায়নের বিরুদ্ধে তিনি এখন বিশ্বে অবিসংবেদিত নেতা। তার বিশ্বনেতা হিসেবে আবির্ভূত হওয়া বাংলাদেশের জন্য এক বড় অর্জন।
সকল রাজনৈতিক দলকে সংসদে নিয়ে আসা
৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে আরেকটি কালো মেঘের ছায়া উকিঝুকি দিচ্ছিল। অনেকেই আশংকা করছিল বিএনপি শেষ পর্যন্ত সংসদ বর্জন করবে, সংসদে যাবে না এবং আরেকটি এক তরফা সংসদ দেখবে জাতি। কিন্তু সরকার বিচক্ষণতার সঙ্গে বিএনপিকে সংসদে এনেছে। ২০০৯ সালের পর আবার একটি অংশগ্রহণমূলক সংসদ জাতি পেয়েছে।
দলের ভেতর শুদ্ধি অভিযান
তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার আগে আওয়ামী লীগের প্রধান বক্তব্য ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুন্য সহিষ্ণুতা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেটা প্রমাণ করেছে। দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। দলের একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনহগত প্রক্রিয়া চলমান। এটি তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জের বিষয়। কারণ তৃতীয় বিশ্বে দল তার নিজের নেতাদের আইনের আওতায় আনতে ভয় পায় কারণ তাহলে জনপ্রিয়তা হ্রাস পেতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার দলের চেয়ে দেশের স্বার্থ বড় করে দেখেছে।
প্রায় শতভাগ মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনা
তৃতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনার ক্ষমতা পেয়ে আওয়ামী লীগ বিদ্যুতায়নের পরিধি বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রায় শতভাগ মানুষ এখন বিদ্যুতের সুবিধা পাচ্ছে। এর পাশাপাশি বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ছে। বিদ্যুতের লোডশেডিং এখন অতীত ইতিহাস।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা
তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার আবার প্রমাণ করেছে প্রাকৃতির দুর্যোগ মোকাবেলায় তারা সবচেয়ে সফল রাজনৈতিক দল। সাম্প্রতিক সময়ে ‘বুলবুল’ র ফলে যে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার কথা ছিল তা মোকাবলা করা হয়েছে সাফল্যের সঙ্গে। প্রাকৃতির দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ যে এখন বিশ্বে রোল মডেল তা আবার প্রমাণিত হয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস
প্রশ্নপত্র ফাঁস ছিল দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের একটি বড় মাথা ব্যথার কারণ। কিন্তু তৃতীয় মেয়াদে এসে আওয়ামী লীগ সরকার প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের যে অভিশাপ সেই অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্তি দিয়েছে। এটিও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি বড় সাফল্য।
পদ্মা সেতু-মেট্রো রেল দৃশ্যমান
পদ্মা সেতু ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করা নিয়ে অনেকেই সংশয়াচ্ছন্য ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তায় আওয়ামী লীগ সরকার তৃতীয় মেয়াদে এসে পদ্মা সেতুর অর্ধেকের বেশি কাজ সম্পন্ন করে ফেলেছে। মেট্রো রেল এখন দৃশ্যমান হচ্ছে। এটি সরকারের একটি প্রতীক চিহ্ন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সামাজিক অপরাধের দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি
নূরজাহান হত্যাকাণ্ড, আবরার হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন সামাজিক অপরাধ কর্মকাণ্ডগুলোকে কঠোর হস্তে দমন করা আর দ্রুত এসব আইনের আওয়ার নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সরকার দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যা জনগণের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। এটা সরকারের একটি বড় সাফল্য।
প্রশাসনিক শৃঙ্খলা
চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের নীতিবাচক অবস্থান, দ্রুত পদোন্নতি এবং প্রশাসনে একটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে সফল হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে কর্মস্থলে বিলম্বে বা অনুপস্থিতির জন্য বেতন কর্তনের জন্য যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সাধারণ মহলে বেশি প্রশংসিত হয়েছে।
একবারে সাড়ে চার হাজার চিকিৎসক নিয়োগ
আজ (৮ ডিসেম্বর) এক সঙ্গে সাড়ে চার হাজার চিকিৎসক যোগদান করেছেন। আর এই সব চিকিৎসকের কেউই ঢাকায় বা ঢাকা জেলার মধ্যে নিয়োগ পাননি। তাদেরকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করার জন্যই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটি সারা দেশে চিকিৎসক সংকট মোকাবেলার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে। তাই এটি সরকারের একটি বড় সাফল্য বলেই মনে করা হচ্ছে।
সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়েই একটি সরকার। তবে সরকার যে সাফল্যগুলো অর্জন করেছে সেগুলো অনেক দীর্ঘমেয়াদী বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আর এটার যে ইতিবাচক ফল সেই ইতিবাচক ফল এই দেশের মানুষ দীর্ঘ দিন ধরেই পাবে।
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।