নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৯
আগামী ২০ এবং ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সভাপতি ছাড়া সবপদে পরিবর্তন হবে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজনীতির মাঠ টান টান উত্তেজনায় ভরিয়ে তুলেছে। নানা জন নানাভাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মনোভাব জানার নানান সমীকরণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন যে, এবার আওয়ামী লীগ একজন পূর্ণকালীন সাধারণ সম্পাদক নেবেন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট অবস্থান রয়েছে। তিনি একাধিক বক্তৃতায় দলীয় নেতা কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দলীয় সংগঠন শক্তিশালী করার জন্য মন্ত্রিত্ব ছেড়েছিলেন। দীর্ঘদিন অর্থাৎ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের মধ্যে ঢুকে পড়েছে নানা মতের নানান সুবিধাবাদী মানুষ, তাঁদের আর্থিক শক্তিও খুব বেশি। তাই সব পক্ষকে ব্যাল্যান্স করেও দল ও আদর্শের জন্য ত্যাগী কর্মী, সমর্থক, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবীদের নিয়ে ভালো কমিটি উপহার দিতে চান বঙ্গবন্ধু কন্যা। ১০০ ভাগ না হলেও অনেকটাই সাফ সুতরো করে নিতে চান তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি, যেমনটি তিনি কিছুটা হলেও করেছেন মহিলা এমপি মনোনয়নের ক্ষেত্রে।
কাজ পাগল ওবায়দুল কাদের যে দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ তাতে কোনই সন্দেহ নেই। কিন্তু তিনি শারীরিকভাবে কতটুকু লোড নিতে পারবেন তা ভাবাচ্ছে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে। একই সাথে যে কয়টি মেগা প্রকল্প এই সরকার বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তার মধ্যে অন্যতম হল পদ্মা সেতু আর মেট্রোরেল। এই প্রেক্ষাপটেই ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক থাকবেন নাকি মন্ত্রী থাকবেন সেই সিদ্ধান্তের বিষয়টি নাকি জনাব কাদের শেখ হাসিনার হাতেই অর্পণ করেছেন বলে ওবায়দুল কাদের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে।
ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে যে, ওবায়দুল কাদের আরেক মেয়াদে দলের সাধারণ সম্পাদক থাকবেন সেই সাথে তিনি কিছুদিন মন্ত্রীও থাকবেন। এমন অবস্থা হলে একজন দক্ষ কাউকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়য়ের প্রতি মন্ত্রী করা হবে, তিনিও সব দায়িত্ব পালন করবেন যতদিন না পদ্মা সেতু আর মেট্রোরেল প্রকল্প শেষ না হয়। এক্ষেত্রে জনাব ওবায়দুল কাদের মন্ত্রী হয়েও অনেকটা উপদেষ্টার মত দায়িত্ব পালন করবেন।
সংগঠক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের বিকল্প এখনো কেউ হয়ে উঠতে পারেন নি বলে দলের সভাপতি মনে করেন। কারণ ওবায়দুল কাদেরের মত এত দীর্ঘ সময় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে সারাদেশ কেউ চষে বেড়াননি। তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি থাকায় সারা দেশে তার আছে বিশাল নেটওয়ার্ক। বিশ্বস্ততা, দলের প্রতি আনুগত্য, কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা যেমন আছে ঠিক তেমনি আওয়ামী লীগারদের মাঠ পর্যায়ের অধিকাংশই তার ব্যক্তিগত পরিচিতই শুধু নন, তাঁদের ব্যক্তিগত আমলনামার খবরও তার কাছে আছে। ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির স্বপক্ষে প্রমাণ খুব দুর্বল, মাত্রাগত দিক বিবেচনায় তিনি অনেকের চেয়ে ভালো বলে শেখ হাসিনার কাছে নিশ্চিত ও নির্ভরযোগ্য তথ্য আছে। ওবায়দুল কাদের ধোয়া তুলসী পাতা না হলেও তিনি যা করেছেন তা দলীয় স্বার্থেই করেছেন, প্রায় সব কিছুই দলীয় সভাপতির গোচরে এনেই কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যার অনেকগুলো পরে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সাবেক অনেক দুর্নীতিবাজ এমপি এখন সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সোর্স হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন, এখানে ওবায়দুল কাদেরের বড় অবদান আছে।
উপরে বর্ণিত অবস্থার আলোকে এটা এখন প্রায় নিশ্চিত যে, জনাব ওবায়দুল কাদের আরেক মেয়াদে দলের সাধারণ সম্পাদক থাকবেন সেই সাথে তিনি কিছুদিন নামকা ওয়াস্তে মন্ত্রীও থাকবেন তবে তার সাথে একজন প্রতিমন্ত্রী থাকবেন যিনি মন্ত্রণালয়য়ের সব কাজ দেখভাল করবেন, কিন্তু জটিলতা দেখা দিলে ওবায়দুল কাদের সাহেবের সাহায্য নেবেন। পদ্মা সেতু আর মেট্রোরেলের মত মেগা প্রকল্প শেষ হলে জনাব ওবায়দুল কাদের ফুল টাইম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে যদি তার শরীর ঠিক থাকে। সেই বিবেচনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ পাবার দৌড়ে জনাব ওবায়দুল কাদের তার আসন চূড়ান্ত করে ফেলেছেন বলে একটি বিশেষ সূত্রে জোর দাবি করা হয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।